বাংলা ভাষায় রচিত সাহিত্যকর্ম
বাংলা সাহিত্য নামে পরিচিত।
আনুমানিক খ্রিষ্টীয় নবম
শতাব্দীতে বাংলা ভাষায়
সাহিত্য রচনার সূত্রপাত হয়। খ্রিষ্টীয়
দশম থেকে দ্বাদশ শতাব্দীর
মধ্যবর্তী সময়ে রচিত বৌদ্ধ দোঁহা-
সংকলন চর্যাপদ বাংলা সাহিত্যের
প্রাচীনতম নিদর্শন। প্রাচীন ও
মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্য ছিল
কাব্যপ্রধান। হিন্দুধর্ম , ইসলাম ও
বাংলার লৌকিক
ধর্মবিশ্বাসগুলিকে কেন্দ্র
করে গড়ে উঠেছিল এই সময়কার
বাংলা সাহিত্যের। মঙ্গলকাব্য,
বৈষ্ণব পদাবলি, শাক্তপদাবলি,
বৈষ্ণব সন্তজীবনী, রামায়ণ,
মহাভারত ও ভাগবতের বঙ্গানুবাদ,
পীরসাহিত্য, নাথসাহিত্য, বাউল
পদাবলি এবং ইসলামি ধর্মসাহিত্য
ছিল এই সাহিত্যের মূল বিষয়।
বাংলা সাহিত্যে আধুনিকতার
সূত্রপাত হয় খ্রিষ্টীয় অষ্টাদশ
শতাব্দীতে। ঊনবিংশ শতাব্দীতে
বাংলার নবজাগরণের যুগে
কলকাতা শহরকে কেন্দ্র
করে বাংলা সাহিত্যে এক নতুন
যুগের সূচনা হয়। এই সময় থেকে ধর্মীয়
বিষয়বস্তুর বদলে মানুষ, মানবতাবাদ
ও মানব-মনস্তত্ত্ব
বাংলা সাহিত্যের প্রধান আলোচ্য
বিষয় হয়ে ওঠে। ১৯১৩
সালে বিশিষ্ট বাঙালি কবি ও
সাহিত্যিক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থের জন্য
নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৪৭
সালে ভারত বিভাগের পর
বাংলা সাহিত্যও দুটি ধারায়
বিভক্ত হয় – কলকাতা -কেন্দ্রিক
পশ্চিমবঙ্গের সাহিত্য ও ঢাকা –
কেন্দ্রিক পূর্ব পাকিস্তান –
বাংলাদেশের সাহিত্য।
বর্তমানে বাংলা সাহিত্য
বিশ্বের একটি অন্যতম সমৃদ্ধ
সাহিত্যধারা হিসেবে পরিগণিত
হয়ে থাকে।
যুগ বিভাজন
বাংলা সাহিত্যের হাজার বছরের
ইতিহাস প্রধানত
তিনটি পর্যায়ে বিভক্ত: [১][২]
আদিযুগ বা প্রাচীন যুগ (আনুমানিক
৯০০ খ্রি.–১২০০ খ্রি.)
মধ্যযুগ (১২০১ খ্রি.– ১৮০০ খ্রি.)
আধুনিক যুগ (১৮০০ খ্রি. – বর্তমান
কাল)।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, রাজনৈতিক
ইতিহাসের মতো নির্দিষ্ট
সালতারিখ অনুযায়ী সাহিত্যের
ইতিহাসের যুগ বিভাজন করা সম্ভব
নয়। যদিও সাহিত্যের ইতিহাস সর্বত্র
সালতারিখের হিসেব অগ্রাহ্য
করে না। সাহিত্যকর্মের
বৈচিত্র্যে ও বৈশিষ্ট্যে নির্দিষ্ট
যুগের চিহ্ন ও সাহিত্যের বিবর্তনের
ধারাটি বিশ্লেষণ করেই
সাহিত্যের ইতিহাসে যুগবিভাগ
করা হয়ে থাকে।
বিষ্ণুর সম্মুখে প্রণত জয়দেব ;
বাংলার বৈষ্ণব
সাহিত্যে তাঁর গীতগোবিন্দম্
কাব্যের প্রভাব অনস্বীকার্য।
এমনকি রবীন্দ্রনাথের প্রথম
জীবনে রচিত কাব্যেও
জয়দেবের প্রভাব ছিল অত্যন্ত
গভীর।
বাংলা সাহিত্যের উন্মেষের
পূর্বে বাংলায় সংস্কৃত, প্রাকৃত ও
অবহট্ঠ ভাষায় সাহিত্য রচনার
রীতি প্রচলিত ছিল। এই সাহিত্যের
মাধ্যমেই বাংলা সাহিত্যের
আদি অধ্যায়ের সূচনা হয়। [৩] ত্রয়োদশ
শতাব্দীতে তুর্কি বিজয়ের বহু
পূর্বেই বাঙালিরা একটি বিশেষ
জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।
উন্মেষ ঘটে বাংলা ভাষারও।
তবে প্রথম দিকে বাংলায় আর্য
ব্রাহ্মণ্য সংস্কৃতি ও অনার্য
সংস্কৃতির মেলবন্ধন ঘটেনি। সংস্কৃত
ভাষায় লেখা অভিনন্দ ও সন্ধ্যাকর
নন্দীর রামচরিত, শরণ, ধোয়ী,
গোবর্ধন, উমাপতি ধরের
কাব্যকবিতা, জয়দেবের
গীতগোবিন্দম্, কবীন্দ্রবচনসমুচ্চয় ও
সদুক্তিকর্ণামৃত নামক দুটি সংস্কৃত
শ্লোকসংগ্রহ; এবং অবহট্ঠ ভাষায়
রচিত কবিতা সংকলন প্রাকৃত-পৈঙ্গল
বাঙালির সাহিত্য রচনার
আদি নিদর্শন। এই সকল গ্রন্থ
বাংলা ভাষায় রচিত না হলেও
সমকালীন বাঙালি সমাজ ও মননের
একটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল
হিসেবে বিবেচিত হয়। [৪][৫]
পরবর্তীকালের বাংলা বৈষ্ণব
সাহিত্যে গীতগোবিন্দম্ কাব্যের
প্রভাব অনস্বীকার্য।
বাংলা ভাষায় রচিত সাহিত্যের
আদিতম নিদর্শন হল চর্যাপদ। খ্রিষ্টীয়
দশম থেকে দ্বাদশ শতাব্দীর
মধ্যবর্তী সময়ে রচিত
চর্যা পদাবলি ছিল সহজিয়া বৌদ্ধ
সিদ্ধাচার্যদের সাধনসংগীত।
আধুনিক ভাষাতাত্ত্বিকগণ
বৈজ্ঞানিক তথ্যপ্রমাণের
সাহায্যে প্রমাণ করেছেন
যে চর্যার ভাষা প্রকৃতপক্ষে হাজার
বছর আগের বাংলা ভাষা।
সমকালীন বাংলার সামাজিক ও
প্রাকৃতিক চিত্র এই
পদগুলিতে প্রতিফলিত হয়েছে।
সাহিত্যমূল্যের
বিচারে কয়েকটি পদ কালজয়ী।
বাংলা সাহিত্যের ১২০০-১৩৫০
খ্রি. পর্যন্ত সময়কে “অন্ধকার যুগ”
বা “বন্ধ্যা যুগ” বলে কেউ কেউ
মনে করেন। ড. হুমায়ুন আজাদ তাঁর
“লাল নীল দীপাবলী” গ্রন্থে (পৃ. ১৭)
লিখেছেন- “১২০০ থেকে ১৩৫০ পর্যন্ত
সময়ের মধ্যে রচিত কোন সাহিত্য
কর্মের পরিচয়
পাওয়া যায়না বলে এ-
সময়টাকে বলা হয় ‘অন্ধকার যুগ’।
পণ্ডিতেরা এ-
সময়টাকে নিয়ে অনেক ভেবেছেন,
অনেক আলোচনা করেছেন, কিন্তু
কেউ অন্ধকার
সরিয়ে ফেলতে পারেন নি।এ-
সময়টির দিকে তাকালে তাই
চোখে কোন আলো আসেনা, কেবল
আঁধার ঢাকা চারদিক।” কিন্তু,
ওয়াকিল আহমেদ তাঁর
‘বাংলা সাহিত্যের পুরাবৃত্ত’ (পৃ.
১০৫)-এ লিখেছেন-
“বাংলা সাতিহ্যের কথিত
‘অন্ধকার যুগ’ মোটেই সাংস্কৃতিক
বন্ধ্যাত্বের যুগ ছিল না। ধর্ম –
শিক্ষা শিল্প চর্চার দায়িত্ব যাদের
উপর ন্যস্ত ছিল, তারা সীমিত
আকারে হলেও শিক্ষা সাহিত্য
চর্চায় নিয়োজিত ছিলেন। তবে,
কি হিন্দু কি মুসলমান কেউ
লোকভাষা বাংলাকে গ্রহণ
করেননি। বাংলা সাহিত্যের
নিদর্শন না থাকার এটাই মূখ্য কারণ।”
এসময়ের সাহিত্য নিদর্শন: ১. প্রাকৃত
ভাষার গীতি কবিতার সংকলিত
গ্রন্থ ‘প্রাকৃত পৈঙ্গল’ ২. রামাই
পণ্ডিত রচিত ‘শূন্যপুরাণ’ (গদ্যপদ্য
মিশ্রিত) ৩. হলায়ুধ মিশ্র রচিত ‘সেক
শুভোদয়া’ (গদ্যপদ্য মিশ্রিত) ৪. ডাক ও
খনার বচন
‘নিরঞ্জনের উষ্মা’ শূন্যপুরাণ এর
অন্তর্গত একটি কবিতা। [৬]
সাহিত্যধারা
মূল নিবন্ধ: চর্যাপদ
চর্যাপদ পুঁথির একটি পৃষ্ঠা
চর্যাপদ বাংলা ভাষার প্রাচীনতম
কাব্য তথা সাহিত্য নিদর্শন। নব্য
ভারতীয় আর্যভাষারও প্রাচীনতম
রচনা এটি। [৭] খ্রিস্টীয় দশম
থেকে দ্বাদশ শতাব্দীর
মধ্যবর্তী সময়ে রচিত এই
গীতিপদাবলির রচয়িতারা ছিলেন
সহজিয়া বৌদ্ধ সিদ্ধাচার্যগণ।
বৌদ্ধ ধর্মের গূঢ়ার্থ সাংকেতিক
রূপবন্ধে ব্যাখ্যার উদ্দেশ্যেই
তাঁরা পদগুলি রচনা করেছিলেন।
বাংলা সাধন সংগীতের
শাখাটির সূত্রপাতও এই চর্যাপদ
থেকেই। এই বিবেচনায় এটি ধর্মগ্রন্থ
স্থানীয় রচনা। একই সঙ্গে সমকালীন
বাংলার সামাজিক ও প্রাকৃতিক
চিত্রাবলি এই পদগুলিতে উজ্জ্বল। এর
সাহিত্যগুণ আজও চিত্তাকর্ষক। ১৯০৭
খ্রীস্টাব্দে মহামহোপাধ্যায়
হরপ্রসাদ শাস্ত্রী নেপালের
রাজদরবারের
গ্রন্থশালা থেকে চর্যার
একটি খণ্ডিত পুঁথি উদ্ধার করেন।
পরবর্তীতে আচার্য সুনীতিকুমার
চট্টোপাধ্যায় ভাষাতাত্ত্বিক
বিশ্লেষণের মাধ্যমে চর্যাপদের
সঙ্গে বাংলা ভাষার অনস্বীকার্য
যোগসূত্র বৈজ্ঞানিক যুক্তিসহ
প্রতিষ্ঠিত করেন। চর্যার প্রধান
কবিগণ হলেন লুইপাদ , কাহ্নপাদ,
ভুসুকুপাদ , শবরপাদ প্রমুখ।
মূল নিবন্ধ: শ্রীকৃষ্ণকীর্তন
শ্রীকৃষ্ণকীর্তন বড়ুচণ্ডীদাস নামক
জনৈক মধ্যযুগীয় কবি রচিত
রাধাকৃষ্ণের প্রণয়কথা বিষয়ক
একটি আখ্যানকাব্য। [৮] ১৯০৯ সালে
বসন্তরঞ্জন রায় বিদ্বদ্বল্লভ
বাঁকুড়া জেলার কাঁকিল্যা গ্রাম
থেকে এই কাব্যের
একটি পুথি আবিষ্কার করেন। ১৯১৬
সালে তাঁরই সম্পাদনায় বঙ্গীয়
সাহিত্য পরিষদ থেকে
শ্রীকৃষ্ণকীর্তন
নামে পুথিটি প্রকাশিত হয়। [৯] যদিও
কারও কারও মতে মূল গ্রন্থটির নাম
ছিল শ্রীকৃষ্ণসন্দর্ভ। কৃষ্ণের জন্ম,
বৃন্দাবনে রাধার সঙ্গে তাঁর প্রণয়
এবং অন্তে বৃন্দাবন ও
রাধা উভয়কে ত্যাগ করে কৃষ্ণের
চিরতরে মথুরায় অভিপ্রয়াণ – এই হল
শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যের মূল উপজীব্য।
আখ্যানভাগ মোট ১৩
টি খণ্ডে বিভক্ত। পুথিটি খণ্ডিত
বলে কাব্যরচনার তারিখ জানা যায়
না। তবে কাব্যটি আখ্যানধর্মী ও
সংলাপের আকারে রচিত
বলে প্রাচীন বাংলা নাটকের
একটি আভাস মেলে এই কাব্যে।
গ্রন্থটি স্থানে স্থানে আদিরসে জ
ারিত ও গ্রাম্য অশ্লীলতাদোষে দুষ্ট
হলেও আখ্যানভাগের বর্ণনানৈপূণ্য ও
চরিত্রচিত্রণে মুন্সিয়ানা আধুনিক
পাঠকেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করে।
চর্যাপদের পর ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’
বাংলা ভাষার দ্বিতীয় প্রাচীনতম
আবিষ্কৃত নিদর্শন।
বাংলা ভাষাতত্ত্বের
ইতিহাসে এর গুরুত্ব তাই অপরিসীম।
অপরদিকে এটিই প্রথম বাংলায়
রচিত কৃষ্ণকথা বিষয়ক কাব্য।
মনে করা হয়, এই গ্রন্থের পথ ধরেই
বাংলা সাহিত্যে বৈষ্ণব
পদাবলির পথ সুগম হয়।
বাংলা সাহিত্যের
ইতিহাসে বৈষ্ণব পদাবলি সাহিত্য
একটি বিস্তৃত কালপর্ব জুড়ে বিন্যস্ত।
প্রাকচৈতন্যযুগে বিদ্যাপতি,চন্ডীদ
াস এবং চৈতন্য ও চৈতন্য
পরবর্তী যুগে গোবিন্দদাস,জ্ঞানদা
স বিশেষভাবে খ্যাতিমান হলেও
আরও বহু কবি বৈষ্ণব ধর্মাশ্রিত পদ
লিখেছেন।
তবে ধর্মবর্ণনির্বিশেষে পদাবলি চর্
চার এই ইতিহাস চৈতন্যের
ধর্মান্দোলনের পরই ছড়িয়েছিল।
বৈষ্ণব পদাবলির মূল বিষয়বস্তু হল
কৃষ্ণের লীলা এবং মূলত
মাধুর্যলীলা। অবশ্য এমন নয় যে কৃষ্ণের
ঐতিহ্যলীলার চিত্রণ হয়নি।
তবে সংখ্যাধিক্যের হিসেবে কম।
আসলে বৈষ্ণব পদাবলির
মধ্যে রাধাকৃষ্ণের
প্রণয়লীলা স্তরে স্তরে এমন গভীর ও
বিস্তৃতভাবে বর্ণিত
হয়েছে যে অনেকের
ধারণা বংলাসাহিত্যে এ
আসলে একটি রোমান্টিক
প্রণয়কাব্যের নমুনা। বস্তুত পৃথিবীর
অন্যান্য মধ্যযুগীয় সাহিত্যের মতনই
এও বিশেষভাবে ধর্মাশ্রিত ও
বৈষ্ণব ধর্মের তত্ত্ববিশ্বের
উপরে প্রতিষ্ঠিত। তবে যে কোন
ধর্মের মতনই বৈষ্ণব ধর্মতত্ত্বেরও
আনেকগুলি ঘরানা ছিল। এর
মধ্যে তাত্বিকভাবে সবচেয়ে প্রভা
বশালী ছিল বৃন্দাবনের
বৈষ্ণবগোষ্ঠী। এদের ধর্মীয় দর্শনের
প্রভাব
পড়েছে চৈতন্যপরবর্তী পদকর্তাদের
রচনায়। প্রাকচেতন্যযুগের
পদাবলিকারদের রচনায় তন্ত্র
বা নানা সহজিয়া সাধনপন্থার
প্রভাব রয়েছে। ভারতীয়
সাধনপন্থা মূলত দ্বিপথগামী- স্মার্ত
ও তান্ত্রিকী। শশীভূষণ দাশগুপ্ত এই দুই
পথকেই বলেছেন “উল্টাসাধন” [১০]
তন্ত্রও হল এই উল্টাসাধনই। দেহভান্ডই
হল ব্রহ্মান্ড এই বিশ্বাস সহজিয়া ও
তান্ত্রিক পন্থীদের। সেই
কারণে চন্ডীদাস ও বিদ্যাপতির
সঙ্গে জ্ঞানদাস
ভা গোবিন্দদাসদের মূলগত প্রভেদ
রয়েছে। বৃন্দাবনের
বৈষ্ণবগোষ্ঠী যে তত্ত্ববিশ্ব
নির্মাণ করলেন তাতে কৃষ্ণলীলার
মূল উৎস ভাগবত ও আন্যান্য পুৃরাণ
হলেও,আসলে কৃষ্ণের বৃন্দাবনলীলা,
সর্বোপরি রাধাকৃষ্ণের
প্রণয়লীলা প্রাধান্য পেল।
কেনা এঁদের মতে কৃষ্ণের দুই রূপ।
প্রথমটি ঐশ্বর্যস্বরূপ ঈশ্বর,
যিনি সর্বশক্তিমান। কৃষ্ণের ঘনিষ্ঠ
প্রতিটি লোক সে তাঁর মাতা-
পিতা বা, স্ত্রী বা সখা যেই হোক
না কেন- কৃষ্ণকে তাঁরা ভগবান
বলে জানেন, সেভাবেই
তাঁকে দেখেন। দ্বিতীয়টি হল
মাধুর্যস্বরূপ কৃষ্ণ। এইরূপে কৃষ্ণের
লীলার যে বিচিত্র প্রকাশ অর্থাৎ
প্রভুরূপে,পুত্ররূপে,সখারূপে,
প্রেমিকরূপে সর্বোপরি রাধামাধবরূ
পে তাতে কোথাও কৃষ্ণের
মনে বা কৃষ্ণলীলাসহকারদের
মনে কৃষ্ণের ঐশ্বর্যমূর্তির জাগরণ
ঘটেনা। ঐশ্বর্যমূর্তি নেই
বলে কৃষ্ণভক্তি এখানে শুদ্ধ
থেকে শুদ্ধতর হয়ে শুদ্ধতম হয়েছে।
তাই এই মতাবলম্বী বৈষ্ণব
কবিসাধকরা কেউ প্রভু, কেউ পুত্র,
কেউ সখা, আর
কেউবা প্রেমিকরূপে কৃষ্ণকে প্রার্থ
না করেছেন। শেষোক্ত
কবিসাধকের সংখ্যাই বেশি।
বৃন্দাবনের ষড়গোস্বামীর অন্যতম রূপ
গোস্বামী উজ্জ্বলনীলমণি-
তে কৃষ্ণভক্তিকেই একমাত্র
রসপরিনতি বলা হয়েছে। এর
স্হায়ীভাব হল দুপ্রকারের-
1. বিপ্রলম্ভ শৃঙ্গার
2. সম্ভোগ শৃঙ্গার
আবার এই দুটি প্রকারও আবার
চারটি করে উপবিভাগে বিন্যস্ত।
বিপ্রলম্ভ
1. পূর্বরাগ
2. মান (এরও দুটি ভাগ- সহেতু আর
নির্হেতু)
3. প্রেমবৈচিত্ত
4. প্রবাস (এরও দুটি ভাগ- সুদূর আর অদূর
সম্ভোগ
1. সংক্ষিপ্ত
2. সংকীর্ণ
3. সম্পূর্ণ
4. সমৃদ্ধিমান
বৈষ্ণব পদাবলিতে কৃষ্ণের
লীলাবিলাস এই
বিষয়পর্যায়ে বিন্যস্ত।
অবশ্য,উপরোক্ত চারটি ছাড়াও
বিপ্রলম্ভকে আরও
সূক্ষাতিসূক্ষভাগে ভাগ
করা হয়েছে নানাসময়। যেমন-
অনুরাগ, আক্ষেপানুরাগ কিংবা,
বিপ্রলব্ধা, খন্ডিতা বা,
বাসরসজ্জিতা অথবা অভিসার।
পুরাণ
ছাড়া সাহিত্যে বা কাব্যে বাংল
া বৈষ্ণব পদাবলির উৎস হল- সংস্কৃত
পদসংকলন গ্রন্থগুলি। যথা,
গাথা সপ্তশতী,…….
তাছাড়া জয়দেবের
গীতগোবিন্দের কথা তো এ
প্রসঙ্গে বলতেই হয়। বিদ্যাপতি মূলত
মৈথিলি ভাষায় বৈষ্ণব
পদাবলি রচনা করেছেন।
তবে অনেকে এই পদাবলিগুলির
ভাষার বিশেষ মাধুর্যের জন্য
একে ব্রজবুলি ভাষা বলে কল্পনা করত
ে চেেয়েছেন। প্রাচীন এই
মতটিকে পরবর্তীকালের আধুনিক
সমালোচক শংকরীপ্রসাদ বসু
স্বীকার করে নিয়েছেন
এবং বিদ্যাপতিকে একটি সাহিত্য
িক ভাষার মহান সর্জক
বলে মনে করেছেন। [১১] সে যাই
হোক ভাষাগত এই প্রভাব
যে পরবর্তীকালের কবিদেরও
বিরাট প্রভাবিত করেছিল তার
প্রমাণ গোবিন্দদাস। জ্ঞানদাসের
কিছু কিছু পদও এই তথাকথিত
ব্রজবুলি ভাষাতেই রচিত। মধ্যযুগের
বহু কবি এই ভাষাতেই
পদরচনা করেছেন। এমনকি আধুনিক
কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও যখন
‘ভানুসিংহ ঠাকুরের পদাবলী’
লেখেন তখন তিনি লেখেন
ব্রজবুলি ভাষাতেই। বৈষ্ণব
পদাবালি সাহিত্যে বিদ্যাপতি,
চণ্ডীদাস, জ্ঞানদাস, গোবিন্দ দাস
ছাড়াও যশোরাজ খান, চাঁদকাজী,
রামচন্দ বসু, বলরাম দাস, নরহরি দাস,
বৃন্দাবন দাস, বংশীবদন, বাসুদেব,
অনন্ত দাস, লোচন দাস, শেখ কবির,
সৈয়দ সুলতান, হরহরি সরকার, ফতেহ
পরমানন্দ, ঘনশ্যাম দাশ, গয়াস খান,
আলাওল, দীন চন্ডীদাস, চন্দ্রশেখর,
হরিদাস, শিবরাম, করম আলী, পীর
মুহম্মদ, হীরামনি, ভবানন্দ প্রমুখ
উল্লেখ্যযোগ্য কবি। বৈষ্ণব
পদাবলি সাহিত্যিক
গুণে আসামান্য। বিভিন্ন কবির
লেখা কিছু পদ এখানে উল্লেখ
করা হল- ১.সই কেমনে ধরিব হিয়া।/
আমার বঁধুয়া আন বাড়ি যায়/ আমার
আঙিনা দিয়া।।/সে বধুঁ
কালিয়া না চাহে ফিরিয়া/
এমতি করিল কে।/আমার অন্তর যেমন
করিছে/তেমনি করুক সে।।/যাহার
লাগিয়া সব তেয়াগিনু/
লোকে অপযশ কয়।/সেই
গুণনিধি ছাড়িয়া পিরীতি/আর
যেন কার হয়।।/যুবতী হইয়া শ্যাম
ভাঙাইয়া/এমত করিল কে।/আমার
পরাণ যেমতি করিছে/তেমতি হউক
সে।। (চন্ডীদাস) ২.চলে নীল
সাড়ি নিঙারি নিঙারি/পরান
সহিতে মোর।/সেই হৈতে মোর
হিয়া নহে থির/মন্মথ জ্বরে ভোর ।
(চন্ডীদাস) ৩.এ সখি হামারি দুখের
নাহি ওর/এ ভরা বাদর মাহ ভাদর/শূন্য
মন্দির মোর।।/ঝম্পি ঘণ গন —
জন্তি সন্ততি/ভুবন
ভরি বরি খন্তিয়া।/কান্ত পাহুন কাম
দারুন/সঘনে খন শর হন্তিয়া।।/কুলিশ শত
শত পাত-মোদিত/ময়ূর নাচত
মাতিয়া।/মও
দাদুরী ডাকে ডাহুকী/ফাটি যাওত
ছাতিয়া।।/তিমির দিক ভরি ঘোর
যামিনী/অথির বিজুরিক
পাঁতিয়া।/বিদ্যাপতি কহ
কৈছে গোঙায়াবি/
হরি বিনে দিন রাতিয়া।।
(বিদ্যাপতি)
মধ্যযুগের বাংলা কাব্যধারার
একবিশিষ্ট শাখা হল মঙ্গলকাব্য।মঙ্গল
শব্দের আভিধানিক অর্থ হল কল্যাণ।
মধ্যযুগে বিভিন্ন দেব-দেবীর
মহিমা ও মাহাত্ম্যকীর্তন
এবং পৃথিবীতে তাদের
পূজা প্রতিষ্ঠার
কাহিনী নিয়ে যেসব কাব্য রচিত
হয়েছে সেগুলোই
বাংলা সাহিত্যের
ইতিহাসে মঙ্গল কাব্য
নামে পরিচিত।
বাংলা সাহিত্যে মধ্যযুগে নাথধর্ম
ের কাহিনি অবলম্বনে রচিত
আখ্যায়িকা কাব্য।
প্রাচীনকালে শিব উপাসক এক
সম্প্রাদয় ছিল,তাদের ধর্ম ছিল
নাথধর্ম।হাজার বছর আগে ভারতে এই
সম্প্রাদয় খ্যাতি লাভ করেছিল।
তাদের গতিবিধির বাপকতার জন্য
সারা ভারতবর্ষে তাদের
খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছিল। নাথ অর্থ
প্রভু,দীক্ষালাভের পর নামের
সাথে তারা নাথ
শব্দটি তারা যোগ করত।
তারা বিশেষ ক্ষমতার
অধিকারি ছিল। বৌদ্ধ ও শৈব ধর্মের
সমন্বয়ে এ ধর্ম গরে ওঠে। এই নাথ
প্রন্থা বৌদ্ধ মহাযান আর শূন্যবাদের
উপর প্রতিষ্ঠিত। অবিদ্যা,ও অজ্ঞান
থেকে মুক্তির জন্য এবং মহাজ্ঞান
লাভ করাই নাথগনের লক্ষ্য ছিল।
সাধনার মাধ্যমে দেহ পরিশুদ্ধ
করে মহাজ্ঞান লাভের যোগ্য
করলে তাকে পক্ক দেহ বলা হত। এই
মতের প্রতিষ্ঠাতা মীননাথ । আর
শিব হল আদি নাথ। সব নাথ তার
অনুসারী। দশম-একাদশ
শতকে নাথধর্মের প্রভাব বিস্তার
লাভ করে। অই সময়ে নাথ সাহিত্য
বিস্তার লাভ করে। প্রধান প্রধান
নাথগন হলেন-
মীননাথ,গোরখনাথ,প্রমুখ।
বাঙলা উপন্যাস বাঙলা সাহিত্যের
নতুনতম অঙ্গ। এর সূত্রপাত ঊনবিংশ
শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে।
প্যারিদাস মিত্রের আলালের
ঘরে দুলাল প্রকাশিত হয় ১৮৫৮
খ্রিস্টাব্দে। এর
আখ্যানভাগে এবং রচনাশৈলীতে উ
পন্যাসের মেজাজ পরিলক্ষিত হয়।
বাঙলা উপন্যাসের একটি দৃঢ়
ভিত্তি স্থাপন করেন বঙ্কিমচন্দ্র
চট্টপাধ্যায়। বঙ্কিমচন্দ্র থেকে শুরু
করে দীর্ঘ কাল
বাঙলা উপন্যাসে ইয়োরোপীয়
উপন্যাসের ধাঁচ ছায়া ফেলেছে।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
যিনি বাঙলা সাহিত্যের সকল
শাখাকে ঋদ্ধ করেছেন তাঁর হাতেও
উপন্যাস নতুন মাত্রা লাভ
করেছে যদিও
সমালোচকরা রবীন্দ্রনাথের
উপন্যাসকে রসোত্তীর্ণ মনে করেন
না। শরৎচন্দ্র চট্টপাধ্যায় ঊনবিংশ-
বিংশ শতাব্দীর আরেকজন
প্রভাবশালী ঔপন্যাসিক।
তবে এরা সবাই মানুষের ওপর তলের
ওপর দৃষ্টি সীমাবদ্ধ রেখেছেন।
বিংশ শতকের প্রথমভাগে বুদ্ধদেব বসু,
অচ্যিন্তকুমার সেন প্রমুখের
হাতে বাঙলা কথাসাহিত্য
একটি দৃঢ় ভিত্তি লাভ করে।
তবে বাঙলা উপন্যাস নতুন
মাত্রা লাভ করে মানিক
বন্দ্যেপাধ্যায় , জগদীশ গুপ্ত ও
কমলকুমার মজুমদারের হাতে। এদের
হাতে উপন্যাস বড় মাপের
পরিবর্তে মানবিক অস্তিত্বের
নানা দিকের ওপর আলোকপাত
করে বিকশিত হয়। বস্তুত: রবীন্দ্র
পরবর্তী যুগে মানিক বন্দ্যেপাধ্যায়
সম্ভবত সবচেয়ে কুশলী উপন্যাস
শিল্পী। তারই পদরেখায়
আমরা দেখতে পাই তারাশঙ্কর
বন্দ্যোপাধ্যায় কে।
এরা উপন্যাসকে মানবিক
অস্তিতেব্র মনস্তাত্ত্বিক ও
সামাজিক জটিলতার ওপর নিবিড়
আলোপাত করেছেন, লেখনীশৈলীর
জোরে উপন্যাসকে সাধারণ
পাঠকের কাছকাছি নিয়ে গেছেন
এবং একই সঙ্গে উপন্যাসের
শেল্পশৈলীতে এনছেন দৃঢ় গদ্যের
সক্ষমতা।
সুমথনাথ ঘোষ ও গজেন্দ্রকুমার
মিত্রের বাঙলা কথাসাহিত্য নতুন
মাত্রা লাভ করে ৷ সুমথনাথ ঘোষ শুধু
সাহিত্যস্রষ্টাই ছিলেন না , প্রকাশক
হিসাবেও ছিলেন স্বনামধন্য ৷
একশোরও বেশি বই লিখেছেন
সুমথনাথ৷ প্রথম উপন্যাস , ‘বাঁকা স্রোত
’৷ তিনিই অভিন্নহূদয় বন্ধু ও
সুসাহিত্যিক গজেন্দ্রকুমার মিত্রের
সঙ্গে যৌথভাবে শুরু করলেন ‘মিত্র ও
ঘোষ ’ প্রকাশনা ৷ শিশু -কিশোরদের
জন্য লিখেছেন ‘মোহন সিং -এর
বাঁশি ’, ‘ছোটদের বিশ্বসাহিত্য ’র
মতো বই৷ অনুবাদ করেছেন
আলেকসান্দার দুমার
‘থ্রি মাস্কেটিয়ার্স’, ওয়াল্টার
স্কটের ‘আইভ্যান হো ’ বা চার্লস
ডিকেন্সের ‘ডেভিড কপারফিল্ড ’৷
[১২]
বিংশ শতাব্দীর
শেষভাগে বাঙলা উপন্যাসে সম্পূর্ণ
নতুন করণকৌশল নিয়ে আবির্ভূত হলেন
বাংলাদেশের হুমায়ূন আহমেদ।
তিনি বাঙলা উপন্যাসকে নুতন
খাতে প্রবাহিত করলেন।
বাঙলা উপন্যাস দীর্ঘকাল
পশ্চিমবঙ্গের কথাসাহিত্যিকদের
হাতে পরিপুষ্ট হয়েছিল। হুমায়ূন
আহমেদ একাই শত বর্ষের খামতি পূরণ
করে দিলেন। তাঁর উপন্যাসের অবয়ব
হলো সবজান্তা লেখকের বর্ণনার
পরিবর্তে পাত্র-পাত্রীদের
মিথস্ক্রিয়া অর্থাৎ
সংলাপকে প্রাধান্য
দিয়ে তিনি ছোট এবং স্বল্প
পরিসরে অনেক কথা বলার
পদ্ধতি প্রবর্তন করলেন তিনি। হুমায়ূন
আহমেদ দেখালেন যে ইয়োরোপীয়
আদলের বাইরেও সফল, রসময়
এবং শিল্পোত্তীর্ণ উপন্যাস
লেখা সম্ভব।
১৯৮০’র দশকে হুমায়ূন আহসমদের সবল
উপস্থিতি অনুভব করার
আগে বাংলা উপন্যাস মূলত
পশ্চিমবঙ্গের ঔপন্যাসিকদের
হাতে গড়ে উঠেছিল।
বাংলাদেশের অবদান ছিল
তুলনামূলক ভাবে কম, গুণগত মানও
প্রশ্নাতীত ছিল না। এ সময়কার
কয়েকজন প্রধান লেখক হলেন
গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার , রমাপদ চৌধুরী,
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, শীর্ষেন্দু
মুখোপাধ্যায়, বাণী রায়, হর্ষ দত্ত
প্রমুখ।
একবিংশ শতাব্দী শুরু হয়েছে বিংশ
শতাব্দীর শেষ ভাগের
উত্তরাধিকার বহন করে। এ সময় কিছু
কিছু নিরীক্ষাধর্মী উপন্যাসের
স্বাক্ষর রেখেছেনি কতিপয় লেখক।
উত্তরআধুনিক ধ্যানধারণা অবলম্বন
করেও লিখেছেন কেউ কেউ।
তবে নতুন কোন ধারা প্রবল
বেগে ধাবিত করার মতো নতুন
কারো আবির্ভাব এখনো হয় নি।
তবে বিংশ শতাব্দীর শেষ দশকটি
আখতারুজ্জামন ইলিয়াস, নাসরিন
জাহান , হুমায়ুন আজাদ, আবুল
বাসার, শহিদুল জহির , আন্দালিব
রাশদী প্রমুখ
শক্তিশালী ঔপন্যাসিকের সবল
উপস্থিতি প্রত্যক্ষ করেছে।
পশ্চিমবঙ্গেও অনেক নতুন নতুন
ঔপন্যাসিকের আবির্ভাব লক্ষ্য
করা গেছে যদিও প্রচলিত রীতির
বাইরে যাওয়ার
শক্তিশালী হাতের
দেখা পাওয়া যায় না। এই একই
সময়ে কবি জীবনানন্দ দাশের
লেখা ১৪টি উপন্যাস আবিষ্কৃত
হয়েছে। এগুলি ১৯৩০-১৯৫০
কালপরিসরে লিখিত। জীবনানন্দ
দাশের উপন্যাস সম্পূর্ণ নতুর ধাচেঁর,
চিন্তা-মননে এবং শৈলীতে।
কবি ও সাহিত্যিক
বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে
মধ্যযুগের (১২০০-১৮০০
খ্রিস্টাব্দ)শুরুতে (১২০০-১৩৫০
খ্রিস্টাব্দ) সময়কে কোন কোন
গবেষক বাংলা সাহিত্যের
অন্ধকার যুগ বলে অভিহিত
করে থাকেন। ১২০৮ খ্রিস্টাব্দ
তুর্কী বীর ইখতিয়ার উদ্দিন মুহম্মদ
বখতিয়ার খিলজির
বাংলা বিজয়ের পর বাংলায়
মুসলিম শাসনের গোড়াপত্তন হয়।
কেউ কেউ মনে করেন এই
রাজনৈতিক পরিবর্তন বাংলার
শিক্ষা সমাজ
এবং সাহিত্যকে ঋণাত্মকভাবে প্রভ
াবিত করে, যে কারণে কোন
উল্লেখযোগ্য সাহিত্যকর্ম সৃষ্টি হয়
নি। ১৩৪২ খ্রিস্টাব্দে বড়ু চন্ডীদাস
রচিত শ্রীকৃষ্ণকীর্তন রচনার আগ পর্যন্ত
এ সময়টাই অন্ধকার যুগ।
তবে এটি একটি বিতর্কিত অভিধা।
ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
মাইকেল মধুসূদন দত্ত
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
শরৎচন্দ্র পণ্ডিত
কাজী নজরুল ইসলাম
শরত্চন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায়
বিভূতিভূষণ মুখোপাধ্যায়
শিবরাম চট্টোপাধ্যায়
জীবনানন্দ দাশ
সুকুমার রায়
উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী
অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত
অক্ষয়কুমার দত্ত
অদ্বৈত মল্লবর্মন
সৈয়দ মুজতবা আলী
সুকান্ত ভট্টাচার্য
সন্দিপান চট্টোপাধ্যায়
দীপক
মজুমদা
র
আনন্দ
বাগচী
শঙ্খ
ঘোষ
সুনীল
গঙ্গো
পাধ্য
ায়
মানি
ক
বন্দোপ
াধ্যায়
তারা
শংকর
বন্দোপ
াধ্যায়
সতীন
াথ
ভাদুড়
ী
বলাইচ
াঁদ
মুখোপ
াধ্যায়
শরদিন্
মুখোপ
াধ্যায়
আশাপূ
র্ণা
দেবী
মহাশ্ব
েতা
দেবী
লীল
মজুমদা
র
নলিন
ী দাস
বাণী
বসু
বিমল
কর
সমরেশ
বসু
সুভাষ
মুখোপ
াধ্যায়
শামসুর
রাহমা
ন
আজি
র
রহমান
আজিজ
ওয়াহ
াব
মোহা
ম্মদ
সমীর
রায়চ
ৌধুরী
শক্তি
চট্টোপ
াধ্যায়
নীরে
ন্দ্রনাথ
চক্রবর্ত
ী
শীর্ষ
েন্দু
মুখোপ
াধ্যায়
সঞ্জী
ব
চট্টোপ
াধ্যায়
বুদ্ধদে
গুহ
ফালগু
ী রায়
জয়
গোস্ব
ামী
সমরেশ
মজুমদা
র
সত্যজ
ত্ রায়
হুমায়ুন
আজাদ
আহমদ
শরীফ
হুমায়ুন
আহমেদ
সুবিমল
বসাক
বেগম
রোক
েয়া
তসলি
া নাস
রিন
দেবী
রায়
কেদা
র ভাদুড়
ী
শওকত
ওসমান
আলা
দ্দিন
আল
আজাদ
অতীন
বন্দোপ
াধ্যায়
অদ্রীশ
বর্ধন
অবনী
দ্রনাথ
ঠাকুর
আল
মাহমুদ
অন্নদা
শংকর
রায়
আখতা
রুজ্জাম
ান
ইলিয়
াস
মুস্তফ
আনোয়
ার
মলয়
রায়চ
ৌধুরী
আফসা
র
আহমেদ
আবু
ইসহাক
আবুল
বাশার
আবুল
মনসুর
আহমেদ
রফিক
আজাদ
শোয়া
ইব
জিবর
ান
বাসুদ
েব
দাশগুপ্
ত
তাপু
শিকদ
ার
উত্তম
দাশ
মুহম্মদ
জাফর
ইকবাল
রুদ্রসা
গর
তীর্থঙ্
কর
মৈত্র
বীরে
ন
মুখার্জ
ী
প্রতিষ্ঠান ও সাহিত্য
পুরস্কার
বিনয়পদক
তথ্যসূত্র
1. ↑ বাংলা সাহিত্য পরিচয়, ড.
পার্থ চট্টোপাধ্যায়,
তুলসী প্রকাশনী, কলকাতা, ২০০৮, পৃ.
xxiii
2. ↑ লাল নীল
দীপাবলী বা বাঙলা সাহিত্যের
জীবনী , হুমাযুন আজাদ,
আগামী প্রকাশনী, ঢাকা, ২০০৫, পৃ.
১৯
3. ↑ বাংলা সাহিত্য পরিচয়, পৃ. ৮
4. ↑ “বিদ্যায় সাহিত্যে শিল্পে”,
বঙ্গভূমিকা , সুকুমার সেন, পশ্চিমবঙ্গ
বাংলা আকাদেমি, কলকাতা, পৃ.
১৪৫-৯৬
5. ↑ বাংলা সাহিত্যের সমগ্র
ইতিহাস , ক্ষেত্র গুপ্ত, গ্রন্থনিলয়,
কলকাতা, ২০০১, পৃ. ৩৭-৪৩
6. ↑ লাল নীল দীপাবলী- ড. হুমায়ুন
আজাদ; বাংলা সাহিত্যের
পুরাবৃত্ত- ওয়াকিল আহমদ;
বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস-
মাহবুবুল আলম
7. ↑ বাংলা সাহিত্যের সমগ্র
ইতিহাস , ক্ষেত্র গুপ্ত, গ্রন্থনিলয়,
কলকাতা, ২০০১, পৃ. ৪৪
8. ↑ শ্রীকৃষ্ণকীর্তন বড়ুচণ্ডীদাস
বিরচিত , ডঃ মিহির
চৌধুরী কামিল্যা, শিলালিপি,
কলকাতা, ২০০৫ (২য় প্রকাশ), প্রবেশক
পৃষ্ঠা ৪
9. ↑ বাংলা সাহিত্যের ইতিবৃত্ত ,
প্রথম খণ্ড, অসিতকুমার
বন্দ্যোপাধ্যায়, মডার্ণ বুক
এজেন্সী প্রাইভেট লিমিটেড,
কলকাতা, ২০০৬, পৃ. ২২৮-২৯
10. ↑ শশীভূষণ দাশগুপ্ত, ভারতীয়
সাধনার ঐক্য
11. ↑ শংকরীপ্রসাদ বসু, বিদ্যাপতি ও
চন্ডীদাস
12. ↑ http://www.epaper.eisamay.com/
Details.aspx?id=7387&boxid=3653203
Leave a Reply