বাংলা সাহিত্যের অসামান্য প্রতিভাধর ব্যক্তি ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ। জনশ্রুতি আছে তিনি ২৪ টার ও বেশী ভাষা জানতেন। তিনি ছিলেন বহুভাষাবিদ, শিক্ষক, দার্শনিক এবং ভারতীয় উপমহাদেশের একজন স্মরণীয় ব্যক্তিত্ব। তিনি ১০ জুলাই, ১৮৮৫ সালে পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগনা জেলার পেয়ারা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
পড়াশোনা ও কর্মজীবন
১৯০৪ সালে হাওড়া জেলা স্কুল থেকে এন্ট্রান্স এবং ১৯০৬ সালে কলকাতা প্রেসিডেন্সী কলেজ থেকে এফ এ পাস করেন। তিনি সিটি কলেজ থেকে বিএ এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তুলনামূলক দর্শনতত্বে এম এ পাস করেন। প্যারিসের সোরবোর্ণ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি পিএইচ ডি ডিগী অর্জন করেন। পড়াশোনা শেষ করার আগেই কিছুকাল যশোর জেলা স্কুলে শিক্ষকতা করেছিলেন।
তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ডক্টর দীনেশচন্দ্র সেন এর সহকারী গবেষক হিসেবে কাজ করেছেন। এরপর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা ও স্বয়ংকৃতের শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন, আইন বিভাগেও তিনি শিক্ষকতা করতেন। অবসরের পর তিনি বগুড়া আজিজুল হক কলেজে প্রিন্সিপাল হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্যাতিক সম্পর্ক বিভাগে ফরাসী ভাষা এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সংস্কৃত ও পালি শেখাতেন। এছাড়া তিনি উর্দু ভাষা অভিধান সম্পাদনার কাজও করেছেন। তাঁর জীবনী থেকে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ এর ভাষাজ্ঞান সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।
ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ এর লেখা বই
- ভাষা ও সাহিত্য
- বাংলা ভাষার ইতিবৃত্ত
- দীওয়ানে হাফিজ
- রুবাইয়াত-ই-ওমর খৈয়াম
- বিদ্যাপতি শতক
- বাংলা সাহিত্যের কথা (২ খণ্ড)
- বাংলা ভাষার ব্যাকরণ
- বাংলাদেশের আঞ্চলিক ভাষার অভিধান
তাঁর উল্লেখযোগ্য কিছু বই।
পুরস্কার ও জীবনাবসান
তিনি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম এমেরিটাস অধ্যাপক। ফ্রান্সের সরকার তাকে নাইট অফ দ্যা অর্ডার্স এন্ড আর্টস এন্ড লেটার্স পদক দেয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিদ্যাবাচস্পতি উপাদি পান। পাকিস্তান আমলে তিনি প্রাইড অফ পারফরম্যান্স এবং হিলাল ই ইমতিয়াজ উপাধি পেয়েছিলেন। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর কালচারাল রিলেশন্স তাকে সম্মানীত ফেলো হিসেবে মনোনীত করেছিলো, কিন্তু তৎকালীন পাকিস্তান সরকার তাকে অনুমতি না দেওয়ায় তিনি তা গ্রহণ করতে পারেননি। ১৯৬৯ সালে ঢাকায় এই ক্ষণজন্মা বাঙালী ভাষাবিদ মৃত্যুবরণ করেন এবং তাকে ঢাকা হলের পাশে সমাহীত করা হয়। তখন থেকে ঢাকা হলের নামকরণ করা হয় শহীদুল্লাহ হল।
https://www.youtube.com/watch?v=xauaCLSxx1U
তথ্যসূত্রঃ উইকিপিডিয়া এবং নবম-দশম শ্রেণীর পাঠ্যবই
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ লেখালেখির ওয়েবসাইট
Leave a Reply