নবম-দশম শ্রেণী এবং এসএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য হিসাববিজ্ঞানের বহুনির্বাচনী অংশের প্রিপারেসন এর জন্য লেখাপড়াবিডিতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরার চেষ্টা করছি।
সেই চেষ্টা থেকেই হিসাববিজ্ঞানের প্রথম অধ্যায় বহুনির্বাচনী অংশের প্রস্তুতিমূলক তথ্য তুলে ধরার পর এবার দ্বিতীয় অধ্যায়, লেনদেন নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলোর অবতারণার প্রয়াশ। ইনশাল্লাহ ধীরে ধীরে পুরো হিসাববিজ্ঞান সাবজেক্টটি কভার করতে পারবো।
সে যাইহোক, বলে রাখা ভালো যে, এই অধ্যায়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই অধ্যায়ের তথ্যগুলো শুধু যে নৈর্বত্তিক পরীক্ষা বা বহুনির্বাচনী পরীক্ষায় কাজে আসবে তা নয়, বরঞ্চ এটি নৈর্বত্তিক পরীক্ষা এবং অঙ্ক বুজার ভিত্তি হিসেবে উভয় ক্ষেত্রে কাজে দিবে।
তো পড়ে ফেলো তথ্যগুলো আর ভালো একখান প্রস্তুতি নিয়ে ফেলো, কেমন!
নবম-দশম শ্রেণী/SSC EXAM
হিসাববিজ্ঞান
লেনদেন
- হিসাবরক্ষণের মূলভিত্তি- লেনদেন।
- যা কিছু মানুষের জীবনে ঘটে, তাকে- ঘটনা বলে।
- লেনদেনের উৎপত্তি- অর্থসম্পর্কীয় ঘটনা থেকে।
- হিসাবের বইতে লিপিবদ্ধ করা হয়- অর্থসম্পর্কিত ঘটনা।
- লেনদেন শব্দটির অভিধানগত অর্থ- গ্রহণ ও প্রদান।
- লেনদেন বলতে বোজায়- অর্থের মাপকাঠিতে পরিমাপযোগ্য কোন ঘটনা।
- Give and Take শব্দের অর্থ- দেওয়া ও নেওয়া।
- সব ধরনের ঘটনা- লেনদেন নয়।
- লেনদেনের বৈশিষ্ট্য- সাতটি।
- প্রত্যেক লেনদেন ঘটনা কিন্তু সব ঘটনা লেনদেন নয় এটি- লেনদেনের বৈশিষ্ট্য
- ঘটনা ও লেনদেন- একই অর্থবোধক নয়।
- লেনদেন সর্বদা পরিবর্তন আনে- আর্থিক অবস্থার।
- লেনদেন হতে হলে সর্বদা- বস্তুর বা সেবার বাস্তব বিনিময় প্রয়োজন।
- প্রতিটি লেনদেন পরিমাপযোগ্য- টাকায়।
- প্রতিটি লেনদেনে জড়িত থাকে- দুটি পক্ষ।
- লেনদেনের পক্ষ দুটি হল- দাতা ও গ্রহিতা।
- লেনদেনের দ্বৈতসত্তা- দুটি পক্ষ বা দুটি হিসাব।
- ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের লেনদেনগুলোর প্রত্যেকটি- স্বয়ংসম্পূর্ণ ও স্বতন্ত্র।
- যন্ত্রপাতির অবচয়- অদৃশ্য লেনদেন।
- লেনদেনসংক্রান্ত ঘটনা- দৃশ্যমান ও অদৃশ্যমান উভয়ই হতে পারে।
- হিসাব সমীকরণের A উপদান প্রকাশ করে- সম্পদ(Asset)
- হিসাব সমীকরণের E উপাদান প্রকাশ করে- মালিকানাস্বত্ব(Equity/ owner equity)
- হিসাব সমীকরণের L উপাদান প্রকাশ করে- দায়(Liability)
- মোট সম্পদের উপর তৃতীয়পক্ষের দাবিই হচ্ছে- দায়।
- ব্যবসায়ে মুনাফা অর্জনের কাজে ব্যবহৃত হয়- সম্পদ।
- মালিকানাস্বত্ব বলতে বুজায়- সম্পত্তির উপর মালিকের অধিকার।
- হিসাব সমীকরণ হলো- সমত্তি= দায় + মালিকানাস্বত্ব।
- অবচয় ধার্য করা হলে হিসাব সমীকরণের হ্রাস ঘটে- E এবং A উপকরণের।
- প্রতিটি লেনদেনই প্রভাব বিস্তার করে- হিসাব সমীকরণে।
- হিসাব সমীকরণের বর্ধিত রূপ হলো- A = L + ( C + R – E – D )
- কারবারের লাভ হলে- স্বত্বাধিকার বা মালিকানা স্বত্ব বৃদ্ধি পায়।
- কারবারের ক্ষতি/ লোকসান হলে- স্বত্বাধিকার বা মালিকানা স্বত্ব হ্রাস পায়।
- হিসাব সমীকরণের বর্ধিত রূপ- সম্পদ= দায় + মূলধন + রেভিনিউ – খরচ – উত্তোলন।
- মালিকানাস্বত্বকে প্রভাবিত করে- চারটি উপাদান।
- মোট সম্পদ বাড়লে- মোট দায় অথবা মালিকানাস্বত্ব বাড়বে।
- মোট সম্পদ কমলে- মোট দায় অথবা মালিকানাস্বত্ব কমবে।
- একটি সম্পদ বাড়লে- অপর একটি সম্পদ কমবে।
- মালিকানাস্বত্ব বাড়লে- মোট দায় কমবে।
- মালিকানাস্বত্ব কমলে- মোট দায় বাড়বে।
- ঐতিহাসিক ঘটনা হলো- অনাদায়ী পাওনা সঞ্চিতি, বাট্টা সঞ্চিতি।
- লেনদেনের উৎস- মাল ক্রয়, মাল বিক্রয়, মজুরি প্রদান, বেতন প্রদান ইত্যাদি।
- ব্যবসায়িক লেনদেনের দলিলগুলো হলো- চালান, বিল, ক্যাশমেমো, ভাউচার, বেতন শিট, মজুরি শিট, ডেবিট নোট, ক্রেডিট নোট ইত্যাদি।
- মাল ক্রয় ও বিক্রয়ের প্রামাণ্য দলিল হলো- চালান।
- চালানের উপর ভিত্তি করে লেখা হয়- ক্রয় জাবেদা ও বিক্রয় জাবেদা।
- চালান বহিতে স্বাক্ষর থাকে- ক্রেতা, বিক্রেতা উভয়ের।
- চালান বিক্রেতার নিকট- বহিঃচালান।
- চালান ক্রেতার নিকট- আন্তঃচালান।
- বিক্রীত মূল্যের মোট মূল্যের ওপর যে পরিমাণ টাকা মওকুফ/ ছাড়া করা হয় তাকে কারবারি বাট্টা বলে।
- কার নিকট হতে পণ্য ক্রয় করা হলো, কখন ক্রয় করা হলো, কী পরিমাণে ক্রয় করা হলো এবং কতো দরে ক্রয় করা হলো তা বিস্তারিত উল্লেখ থাকে- চালানে/ চালান বহিতে।
- চালান তৈরি করে- বিক্রেতা।
- ক্যাশমেমো সাধারণত তৈরি হয়- তিন প্রস্থে।
- আয়ব্যয়সংক্রান্ত দলিলকে বলা হয়- ভাউচার।
- ক্রয়-বিক্রয়, বিভিন্ন খরচ ও আয় নগদান বইয়ে লিপিবদ্ধ করার জন্য ব্যাবহার করা হয়- ভাউচার।
- ভাউচার- দুই প্রকার। যথা-
- ডেবিট ভাউচার।
- ক্রেডিট ভাউচার।
- ভাউচার হচ্ছে- লেনদেনের প্রমাণপত্র।
- ডেবিট ও ক্রেডিট ভাউচারে অবশ্যই প্রদান করতে হয়- ধারাবাহিক নম্বর।
- ক্যাশবুকের ক্রেডিট দিকে লেখা হয়- ডেবিট ভাউচার।
- পণ্য বিক্রয় ও আয়ের জন্য ব্যবহৃত ভাউচার হলো- ক্রেডিট ভাউচার।
- ক্রেডিট ভাউচার এর সাথে যুক্ত করে ক্যাশবুকে লেখা হয়- চালানের কপি ও ক্যাশমেমো।
- ক্রেডিট ভাউচারকে ক্যাশবুকে লেখা হয়- ডেবিট দিকে।
- ভাউচারে স্বাক্ষর থাকে- চারজনের।
- ভাউচার প্রস্তুত করে- ক্যাশিয়ার।
- ক্যাশমেমোতে প্রস্থ থাকে- তিনটি।
- ক্যাশমেমোর প্রথম প্রস্থ সরবরাহ করা হয় ক্রেতাকে।
- ক্যাশমেমোর প্রথম প্রস্থ বিক্রয় প্রতিষ্ঠানের হিসাব বিভাগে সংরক্ষিত থাকে।
- ক্যাশমেমোর তৃতীয় প্রস্থ বিক্রয় প্রতিষ্ঠানের বিক্রয় বিভাগে সংরক্ষিত থাকে।
- ক্যাশমেমোতে ঘর থাকে- ৫টি।
- ডেবিট নোটের সাহায্যে লেখা হয়- ক্রয় ফেরত বই।
- ডেবিট নোট এর আরেকটি নাম হচ্ছে- দেনালিপি নোট।
- ডেবিট নোট বা দেনালিপি তৈরি করেন- ক্রেতা বা ক্রয় ব্যবস্থাপক।
- ক্রেডিট নোটের সাহায্যে লেখা হয়- বিক্রয় ফেরত বই।
- ক্রেডিট নোট বা পাওনা লিপি তৈরি করেন- বিক্রেতা বা বিক্রয় ব্যবস্থাপক।
- ক্যাশমেমোর বিক্রয় প্রতিষ্ঠানের নাম ও ঠিকানা মুদ্রিত থাকে- উপরিভাগে।
- ঘটনা কিন্তু লেনদেন নয় এরকম কিছু উদাহরণ- ১) একটি আসবাবপত্র ক্রয়ের সিদ্ধান্ত, ২) ছেলেমেয়ের স্কুলের বেতনবাবদ টাকা প্রদান ৫০০, ৩) মুক্তা জেসমিনকে একটি কলম উপহার দিলো্ ৪) রহিম করিমকে ৫০০০ টাকার পণ্যের ফরমায়েশ দিলো, ৫) মায়ের সেবা্ ৬) কর প্রদানের চিঠি প্রাপ্তি, ৭) ব্যবসায়ের কর্মচারী মারা গেলো, ৮) মালিকের পুত্র সন্তান মারা গেলো।
- আমরা জানি প্রত্যেক ঘটনাই লেনদেন নয় কিন্তু অর্থের মাপকাঠিতে পরিমাপযোগ্য ঘটনা লেনদেন। যে ঘটনা ব্যবসায়ের অর্থের ওপর প্রভাব ফেলবে তাকেই আমরা লেনদেন বলে অবহিত করতে পারি। অর্থাৎ, যে ঘটনা ঘটার ফলে ব্যবসায়ের অর্থের হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটবে তাকে আমরা লেনদেন বলবো। এরকম কিছু উদাহরণ- ১) বেতন প্রদান ১০০০, ২) আসবাব পত্রের ওপর অবচয় ধার্য করা হলো ৮০০, ৩) কমিশন প্রদান, ৪) ক্যাশবাক্স থেকে ৫০০ টাকা হারিয়ে গেলো, ৫) সুদ প্রাপ্তি ৭০০, ৬) পণ্য ক্রয়- বিক্রয়।
আশা করি, নবম-দশম শ্রেণীর হিসাববিজ্ঞানের বহুনির্বাচনী পরীক্ষাকে লক্ষ্য রেখে উপরে উপস্থাপিত তথ্যগুলো তোমার ভালো লেগেছে এবং উপকারে আসবে।
হিসাববিজ্ঞানের উপর পরবর্তী পোস্ট এ আসছে তৃতীয় অধ্যায়ের উপর প্রস্তুতিমূলক টিপস। ততোক্ষণ ভালো থাকো।
বিঃ দ্রঃ উপরে উপস্থাপিত তথ্যগুলো ভার্সিটি ভর্তি পরীক্ষায় হিসাববিজ্ঞান অংশের প্রস্তুতির জন্যও কাজে আসতে পারে।
My Blog: Free Bangla Book Download PDF
Leave a Reply