বিতর্কিত এপিএস বাহিনীর সদস্যরা একাদশ শ্রেণিতে ভর্তিতে পরিকল্পিতভাবে জটিলতা সৃষ্টি ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছে। ভেতরে থেকে ছুরি মারছে, এতে সরকারের একটি ভালো উদ্যোগ সমালোচনার মুখে পড়তে চলছে।
তালিকাতৈরির জটিলতার দায় শিক্ষাসচিব ও বুয়েট কর্তৃপক্ষের ঘাড়ে চাপিয়ে আগামী বছর অনলাইন ছাড়াই ভর্তি করে আবার বাণিজ্যে নেমে পড়াই এ চক্রের উদ্দেশ্য বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। দেশের শিক্ষাবিষয়ক একমাত্র অনলাইন শিক্ষা ওয়েপসাইট লেখাপড়াবিডিডটকমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, কারিগরী ও দিনাজপুর বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, কলেজ পরিদর্শক, সহকারী কলেজ পরিদর্শক ও সচিবগণ এপিএস সিন্ডিকেটের সদস্য। এ চক্রটি ইতিপূর্বে প্রশ্নফাঁস ও গাইড বই থেকে হুবহু প্রশ্ন তুলে দেওয়ার সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে।
এপিএস সিন্ডিকেট সদস্যদের মধ্যে অনেকেই বুয়েটের শিক্ষকদের সঙ্গেও দূর্ব্যবহার করেছেন। অধিকাংশ ভর্তি ও ক্লাস শুরু হলেও আজ শুক্রবার কুমিল্লা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক তরুণ কুমার বুয়েটের কয়েকজনকে জানতে চান অনলাইনে কেন ভর্তি কার্যক্রম শুরু হলো? সিন্ডিকেটের সক্রিয় সদস্যরা ঢাকা বোর্ডের উপ-কলেজ পরিদর্শক অদ্বৈত কুমার, কলেজ পরিদর্শক আশফাকুস সালেহীন, সচিব শাহেদুল খবীর ও নিয়ন্ত্রক শ্রীকান্ত চন্দ। চট্টগ্রাম বোর্ডের সচিব পীযুষ কান্তি, পরিদর্শক সুমন বড়–য়া, কুমিল্লাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কাওছার, পরিদর্শক তরুণ ও কারিগরী বোর্ডের রফিকুল ইসলাম মীরসহ কয়েকজন।
একাদশে ভর্তিতে বাণিজ্য, দুর্নীতি বন্ধ ও ভর্তিচ্ছুদের ভোগান্তি কমাতে প্রথমবারের মতো অনলাইনে আবেদন, এসএসসির ফলাফলের ভিত্তিতে বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত কলেজে ভর্তির তালিকা তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। নতুন সফটওয়ার তৈরিতে একটু কারিগরী ভুল হয়। অপরদিকে অনাইনে ভর্তি কার্যক্রম চালু করায় ব্যবসা বন্ধ হয় এপিএসসহ অনেকের। এ চক্রটি শুরু থেকেই অহেতুক বুয়েটের আইআইসিটি কক্ষে গভীররাত অব্দি ঘোরাঘুরি, বিভ্রান্তিকর নির্দেশনা, শিক্ষাসচিব নজরুল ইসলাম খান ও বুয়েটের অধ্যাপক মোহাম্মদ কায়কোবাদের বিরুদ্ধে বিষোদগার করছেন।
এপিএস সিন্ডিকেট সদস্যরা ভর্তিজটিলতায় ভুক্তভোগী অভিভাবক ও ভর্তিচ্ছুদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার, সমস্যাগুলো সমাধানে বুয়েট কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে গোপণ করা এবং কতিপয় সংবাদ মাধ্যমে সরবরাহ করা এবং কতিপয় চিহ্নিত ও সুবিধাভোগীদের দিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর কাজে লিপ্ত এপিএস বাহিনী। এ বাহিনীর অধিকাংশ সদস্যই শিক্ষাজীবনে ছাত্রদল কিংবা ছাত্রশিবিরের সঙ্গে যুক্ত ছিল। অধিকাংশই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী। ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা ও দিনাজপুর বোর্ডের অধীন কলেজগুলোতে অহেতুক জটিলতা সৃষ্টি করছেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তরুণ, সুমন, অদ্বৈত ও আশফাক বলেন এপিএসর সঙ্গে তাদের দীর্ঘদিনের ভালো সম্পর্ক রয়েছে। গত কয়েকবছর যাবত শুধু বদলি বাণিজ্যে নিয়োজিত থেকে এপিএস এক সিন্ডিকেট তৈরি করেছে। এ বিষয়ে এপিএস মন্মথ রঞ্জন বাড়ৈর মতামত জানতে চাইলেও সম্ভব হয়নি। তিনি বর্তমানে অবাঞ্ছিত একটি সফরে যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছেন।
কয়েজনকে শোকজ ও কর্তব্যে অবহেলার দায়ে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে একটি সূত্রে জানা গেছে।
Leave a Reply