মোট পরীক্ষার্থী ৯৫ জন। জিপিএ ৫ পেয়েছে ১৫ জন । ৮০ জন ‘এ’ গ্রেড। পাসের হার নিখুঁতভাবে শতভাগ। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম ‘কবি নজরুল স্কুল এন্ড কলেজ’। আড়াইহাজার উপজেলার গন্ডি পেরিয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলায় আজ একটি আদর্শ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃত। একটানা পাঁচ বছর ধরে শতভাগ সাফল্যের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে চলেছে। এসএসসি পরীক্ষার শতভাগ সাফল্যই স্কুলটির সুনাম বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা রাখছে। এই সাফল্যের পেছনে বরপুত্ররা সংখ্যায় অনেক। তবে অনেকের মাঝেও যাকে আলাদা করে নেয়া যায় , তিনি হলেন এড. ইকবাল পারভেজ। স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি। চৌকস এই বিদ্ব্যেতসাহী মানুষটি হাতে কলমে পরিশ্রম করেন শিক্ষক মন্ডলী নিয়ে।
কি করে ভাল ফলাফল অর্জন করা যায়। কি করে স্কুলটির আধুনিকায়ন করা যায় ? স্কুল নিয়ে তাঁর চিন্তার শেষ নেই। স্কুলটিতে এখন কলেজ শাখা চালু হয়েছে। এখন নানা পরিকল্পনা কলেজ শাখা নিয়ে। সারাক্ষণ শিক্ষকদের নিয়ে বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন। তাঁর কথা ও কাজের ধরণ সত্যিই আলোকপাত করার মতই। গ্রামের ভেতরের একটি স্কুল জেলা পর্যায়ে সুনাম অর্জন করাটা চাট্টিখানি কথা নয়। তবে আলোকিত মানুষের বেলায় ভিন্ন কথা। আলোকিত মানুষেরা যেখানে যায় সেখানেই আলোর দ্যুতি ছড়ায়। সবমিলিয়ে এখন আলোর ফোরায় ঝর্ণা ধারা বইছে কবি নজরুল স্কুল এন্ড কলেজ এ। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির ইর্ষনীয় সাফল্যের নেপথ্যের কারিগরেরা সন্তুস্ট নন। তাদের মতে ফলাফল আরো ভাল হতে হবে।
তেতুইতলা গ্রাম : তেতুইতলা। খাগকান্দা ইউনিয়নের একটি ছায়া সুশীতল গ্রাম। মেঘনা নদী তীরবর্তী এলাকা তেতুইতলায় ১৯৭২ ইং সালে প্রতিষ্ঠিত হয় কবি নজরুল উচ্চ বিদ্যালয়। সেই থেকে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি অত্রাঞ্চলে শিক্ষার আলো জ্বেলে আসছে ঘরে ঘরে। নয়নাবাদ , তেতুইতলাসহ আশে-পাশের গ্রামের শিক্ষার্থীরা প্রাইমারী স্তর শেষ করে কবি নজরুল উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে ভর্তি হয়। এক সময় অনেক দুরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে হত। এ কারণে কোন আত্মীয়- স্বজনের বাড়ীতে থেকে পড়াশোনা করতে হত। অন্যথায় পড়াশোনা শেষ। এলাকাবাসীকে শিক্ষার সুবিধা দিতেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। আজকে এই অঞ্চলে শিক্ষার হার বেড়েছে।
জেলায় শ্রেষ্ঠ স্থান : স্কুলটি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে এলাকার অনেক মানুষ শ্রম দিয়ে গেছেন। তাদের অবদান অস্বীকার করার উপায় নেই। পূর্বসুরীদের পরিশ্রমের বুনিয়াদের উপর আজকে স্কুলটি দাড়িয়ে আছে। তেমনিভাবে বর্তমানে যারা স্কুলের জন্য অন্তপ্রাণ এক সময় তাদের কথাও উচ্চারিত হবে। আজকে যারা স্কুলের স্বার্থে দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন তাদের অবদান অবশ্যই স্বীকৃতি পাবে। মানুষ গড়ার কারিগরদের পরিচালনা করতেও যে কারিগরী বিদ্যা বুদ্ধির দরকার হয় , তা আছে বর্তমান ম্যানেজিং কমিটি’র । ২০১১ ইং সালে এড. ইকবাল পারভেজ ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হবার পর কলেজ শাখা চালু হয়। এর পরের বছরেই খুলে যায় আরেকটি সাফল্যের সোপান। ২০১২ ইং সালে ঢাকা বোর্ডের অনলাইন জরীপে এই স্কুল নারায়ণগঞ্জ জেলায় শ্রেষ্ট প্রতিষ্ঠান হিসাবে নির্বাচিত হয়।
পরীক্ষা কেন্দ্র : আগে এ অঞ্চলের পরীক্ষার্থীদের দুরবর্তী কেন্দ্রে গিয়ে এসএসসি পরীক্ষা দিতে হত। পরীক্ষার্থীদের কস্ট হত , সে কথা বলার অপেক্ষা রাখেনা। সময় মত কেন্দ্রে পৌঁছানোর একটা টেনশন থাকতো। নতুন ম্যানেজিং কমিটি এই সমস্যাও দুর করেন। তাঁরা কবি নজরুল স্কুল এন্ড কলেজকে এসএসসি’র পরীক্ষা কেন্দ্র হিসাবে অনুমোদন পাওয়ার জন্য চেস্টা তদবীর করে সাফল্যের মুখ দেখেন। ২০১৩ ইং সালে ঢাকা বোর্ড এসএসসি’র কেন্দ্র হিসাবে স্কুলকে অনুমোদন দেন। সে বছর ছিল সবচেয়ে আনন্দের বছর। বহু দিনের আকাংখা পূরণ হওয়ার দিন।
এইচএসসি : এসএসসি’তে শতভাগ সাফল্য টানা পাঁচ বছর। সকলেই উদ্দীপ্ত। শিক্ষকবৃন্দ, ছাত্রছাত্রী , ম্যানেজিং কমিটি সকলেই চাইছেন আরো সাফল্য। ২০১৪ ইং সালে এইচএসসি’র প্রথম ব্যাচ পরীক্ষায় অংশ নেয়। নারায়ণগঞ্জ জেলার ৪২ টি কলেজ এর মধ্যে কবি নজরুল স্কুল এন্ড কলেজ শতভাগ সাফল্য অর্জন করে। আগামীতে আরো সাফল্য আশা করেন সবাই। বিশেষ করে এইচএসসি’র শতভাগ সাফল্য সকলকে আশাবাদী করে তুলেছে। এ জন্য শিক্ষার্থীদের প্রতি আরো বেশি কেয়ার জন্য শিক্ষকদের পরামর্শ দেন ম্যানেজিং কমিটি।
ম্যানেজিং কমিটি : কবি নজরুল স্কুল এন্ড কলেজ এর সুযোগ্য ম্যানেজিং কমিটি নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিলেই তা সহজে বোধগম্য হয় বৈকি। স্কুলের শিক্ষার মান আগের তুলনায় বেশ উন্নত। পরিবেশ ও ভাল। সবকিছুর ভাল সমন্বয় ঘটাতে সহায়ক ভুমিকা পালন করেন শিক্ষক মন্ডলী। স্কুলের যাবতীয় বিষয়ে যিনি মাথা ঘামান তিনি হলেন , ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এড. ইকবাল পারভেজ। অত্যন্ত পরিশ্রমী ও বিদ্যানুরাগী মানুষটি সব সময় আড়ালে থাকতেই পছন্দ করেন। নিজেকে প্রকাশ করতে চাননা। প্রকৃত জ্ঞানীরা অবশ্য এমনটাই হয়ে থাকেন। কবি নজরুল স্কুল এন্ড কলেজ এর ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এড. ইকবাল পারভেজ বলেন , সাফল্য এমনিতেই ধরা দেয়না। সাফল্যের জন্য পরিশ্রম করতে হয়। আমি দায়িত্ব নেয়ার পর বিভিন্ন উন্নয়ণমূলক কাজ করেছি। তাছাড়া বিভিন্ন পরিকল্পনার মাধ্যমে শিক্ষার মান উন্নয়ণে নিরলস কাজ করার মাধ্যমেই সাফল্য এসেছে।
Leave a Reply