জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) বিতর্কিত ‘র্যাগিং’ এর প্রবণতা ঠেকাতে আজীবন বহিষ্কারসহ কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা নিচ্ছে প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতর থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
র্যাগিংয়ের শিকার হয়ে দুই ছাত্র অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা ভবনে ক্লাসের ফাঁকে বাংলা বিভাগের বড় ভাইদের অতিরিক্ত মানসিক নির্যাতনের কারণে অচেতন হয়ে পড়েন বিভাগের প্রথম বর্ষের এক ছাত্র। একই সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদে অচেতন হয়ে পড়েন ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের প্রথম বর্ষের আরেক ছাত্র। তিনিও মানসিক নির্যাতনের শিকার ছিলেন বলে জানা গেছে। এ ঘটনার পর দ্রুত তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে নেওয়া হয়। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় তাঁদের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। এ ঘটনায় প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা যায়, দৈহিক ও মানসিক পীড়ন, যে কোনও ধরনের অশোভন আচরণ, কারও অধিকারে হস্তক্ষেপ, মত প্রকাশে বাধাদান, জোরপূর্বক কোনও রাজনৈতিক মতবাদে বিশ্বাসী করা, রাজনৈতিক সংগঠনে যুক্ত হতে বাধ্য করা, কারও সামাজিক মর্যাদাহানিকর কর্মকাণ্ড চাঁদাবাজি, মুক্তিপণ, ঘুষ বা যে কোনও ধরনের আর্থিক অনাচার, বল প্রয়োগ আইনের অপরাধকে র্যাগিং হিসেবে গণ্য করা হবে।
র্যাগিংয়ে জড়িতদের তথ্য দিয়ে সহায়তাকারীদের পরিচয়ও গোপন রাখা হবে বলেও জানানো হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।
এতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘র্যাগিংয়ের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত ব্যক্তির বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা অধ্যাদেশ অনুযায়ী আজীবন বহিষ্কারের বিধানসহ কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ ছাড়া অভিযুক্ত ব্যক্তিকে রাষ্ট্রীয় আইনের আওতায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে সোপর্দ করা হবে।’
র্যাগিংকে একটি জঘন্য সামাজিক ব্যাধি উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘এই ঘৃণ্য আচরণ ব্যক্তির অপূরণীয় শারীরিক-মানসিক ক্ষতি হতে পারে। এটি নাগরিক অধিকার পরিপন্থী, বেআইনী ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ।’
Leave a Reply