ফেইসবুকে ভূয়া প্রশ্ন,বিকাশে টাকা,অতঃপর প্রতারনা

প্রথমে ফেসবুকে ছদ্মনামে অ্যাকাউন্ট খোলা হয়। পরে সেই অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ফেসবুক ব্যবহারকারীর কাছে বিভিন্ন পরীক্ষার প্রশ্নপত্র আছে বলে প্রস্তাব দেয়া হয়। এতে শিক্ষার্থী বা অভিভাবকরা যদি সাড়া দেন, সেক্ষেত্রে ফেসবুক ম্যাজেঞ্জারের মাধ্যমে একটি বিকাশ অ্যাকাউন্ট নম্বর পাঠিয়ে তাতে অগ্রিম টাকা পাঠাতে বলা হয়। শর্তে রাজি হয়ে কেউ যদি বিকাশ নম্বরে অগ্রিম টাকা পাঠায় সে ক্ষেত্রে তাকে তাৎক্ষণিকভাবে ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারের মাধ্যমে এক কপি ভুয়া প্রশ্ন পাঠানো হয়। পরে আবার পরীক্ষার আগের রাতে ম্যাজেঞ্জারে জানানো হয়, ‘ওই সেটটি বাতিল হয়েছে। নতুন সেটের জন্য আবারও অগ্রিম টাকা বিকাশে পাঠাতে হবে।’

এভাবেই ঢাকাসহ সারা দেশে ফেসবুকে ভুয়া প্রশ্নের ‘বিজ্ঞাপন’ দিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ মনিটরিং সেলের তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল বুধবার রাজধানীতে ঠিক এমনই একজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ডিবির ডিসি (পশ্চিম) শেখ নাজমুল আলমের নির্দেশনায় সহকারী পুলিশ কমিশনার মহরম আলীর নেতৃত্বে ডিবি পুলিশের একটি দল রাজধানীর পুরাতন মোল্লারটেক এলাকা থেকে আসাদুজ্জামান নূর সাকিব ওরফে রিয়াজুল ইসলাম লিটন নামের (২২) এক যুবককে গেপ্তার করে।

এসময় তার কাছ থেকে একটি লেনোভা ল্যাপটপ, একটি বাংলালায়ন ওয়াইম্যাক্স মডেম, একটি পেনড্রাইভ এবং বিভিন্ন বিষয়ের চলতি এসএসসি পরীক্ষার নমুনা প্রশ্নপত্র উদ্ধার করা হয়। লিটন তিতুমীর কলেজে অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি ‘ও’ এবং ‘এ’ লেভেল শেষ করেছেন মাস্টারমাইন্ড থেকে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে লিটন ডিবি পুলিশকে জানিয়েছেন, তিনি ও তার সহযোগীরা ইচ্ছাকৃতভাবে ওয়েবসাইটে প্রশ্নপত্র সম্পর্কিত মিথ্যা তথ্য প্রচার করেন। তারা এমবিবিএস, এইচএসসি, এসএসসিসহ অন্যান্য পাবলিক পরীক্ষার ভুয়া প্রশ্নপত্র বিভিন্ন পরিক্ষার্থী ও অভিভাবকের কাছে বিভিন্ন মূল্যে বিক্রি করে থাকেন। এছাড়াও তারা বিভিন্ন সরকারি চাকরি লিখিত পরীক্ষার ভুয়া প্রশ্নপত্র দিয়েও অর্থ হাতিয়ে নেয়ার কথা স্বীকার করেছেন।

মনিরুল ইসলাম আরো বলেন, ‘আমরা লিটনের ফেসবুক ঘেটে কিছু তথ্য পেয়েছি। যেমন সে গত বেশ কিছুদিন যাবৎ বিভিন্ন কোচিং সেন্টার থেকে সাজেশন সংগ্রহ করে নিজেই একটি প্রশ্নপত্র তৈরি করেছে। সেটিকে আবার কয়েকটি সেটেও বিভক্ত করেছে। চলমান এসএসসি পরীক্ষায় তার দেয়া প্রথম দু’টি পরীক্ষার নমুনা প্রশ্ন কমন পড়েনি। পরে সে ফেসবুকে আবার স্ট্যাটাস দিয়েছে যে প্রথম দু’টি পরীক্ষার প্রশ্ন কমন না পড়লেও পরবর্তী সবগুলো পরীক্ষার ১০০ ভাগ প্রশ্ন কমন পড়বে।’

তিনি বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আমরা জানতে পেরেছি, বেশ কিছু সোর্স থেকে লিটন প্রশ্ন পেয়ে থাকে। আমরা তাদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। তাছাড়া লিটনের সঙ্গে কোনো কোচিং সেন্টারের সখ্যতা আছে কি না, সে বিষয়টিও আমরা খতিয়ে দেখছি।





Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*