কলেজ ছাত্রদের জন্য সুখবর। চালু করা হচ্ছে উপবৃত্তি। ছাত্রদের টিউশন ফি ও পরীক্ষার ফি প্রদান, বই ক্রয় এবং আসবাবপত্র যন্ত্রপাতি সরবরাহ করতে অর্থ প্রদান করা হবে। মানে কলেজ পর্যায়ে বিনামূল্যে পড়াশোনার সুযোগ পাচ্ছেন ছাত্ররা। শিক্ষাগ্রহণে ছাত্রদের আগ্রহ বাড়ানো এবং ঝড়ে পড়া রোধে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে। প্রথমবারের মত উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে ছাত্রদের এ উপবৃত্তি চালু করা হচ্ছে।
কলেজ পর্যায়ে এতদিন কেবল ছাত্রীদের উপবৃত্তি দেয়া হতো। এব্যাপরে ৫১২ কোটি ৭৫লাখ ৩৪হাজার টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রনালয়। প্রকল্প প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীতে অধ্যয়নরত মোট শিক্ষার্থীর ৪০ শতাংশ ছাত্রী এবং ১০ শতাংশ ছাত্র উপবৃত্তির আওতায় আসবে। ওই উপবৃত্তির জন্য বিজ্ঞানের ছাত্রছাত্রীরা অগ্রাধিকার পাবেন। এই সুবিধা পাওয়া যাবে পিতা বা অভিভাবকের বার্ষিক আয় ১ লাখ টাকার নিচে হলে।
‘উচ্চ মাধ্যমিক উপবৃত্তি প্রকল্প’ শিরোণামের প্রকল্পটি তিনবছরে বাস্তবায়ন করা হবে। প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য আজ মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে উপস্থাপনের কথা রয়েছে।
এতে সভাপতিত্ব করবেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা। এদিকে উপবৃত্তি বিতরণ প্রক্রিয়ায় অনিয়ম বিশেষ করে অর্থ মেরে দেয়ার বেশ অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে এবার সরাসরি শিক্ষার্থীদের কাছে অর্থ পৌছানোর প্রস্তাবনা রয়েছে। শিক্ষক বা উপজেলায় প্রথাগত ব্যাংকিং ব্যবস্থার বাইরে অনলাইন পদ্ধতির মাধ্যমে (মোবাইল, বিকাশ বা অন্য কোন সহজ পদ্ধতি) সরাসরি শিক্ষার্থীদের কাছে অর্থ পৌঁছানো হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং পরিকল্পনা কমিশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
বর্তমানে সারাদেশে ৫টি প্রকল্পের মাধ্যমে ষষ্ঠ থেকে স্নাতক (পাস) পর্যন্ত উপবৃত্তি চালু রয়েছে। এর মধ্যে তিনটি প্রকল্পের মাধ্যমে সারাদেশে মাধ্যমিক পর্যায়ে উপবৃত্তি প্রদান করা হচ্ছে। তাছাড়া উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে ছাত্রীদের উপবৃত্তি প্রদান (চতুর্থ পর্যায়) প্রকল্পের মাধ্যমে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে এবং স্নাতক পাস ও সমমানের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি প্রদান শীর্ষক একটি প্রকল্পের মাধ্যমে স্নাতক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি কার্যক্রম চালু রয়েছে। উপবৃত্তি স্বয়ংক্রিয়ভাবে চলার জন্য প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করা হয়েছে।
প্রকল্পে বলা হয়েছে একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেনীতে ৪০ শতাংশ ছাত্রী এবং ১০ শতাংশ ছাত্রকে টিউশন ফি ও পরীক্ষার ফি প্রদান, বই ক্রয় এবং আসবাবপত্র ও যন্ত্রপাতি সরবরাহ করতে অর্থ প্রদান করা হবে।
উপবৃত্তি প্রাপ্তির শর্ত: পিতামাতা বা অভিভাবকের জমির পরিমাণ ৭৫ ডেসিমেলের নিচে হতে হবে, পিতামাতা বা অভিভাবকের বার্ষিক আয় ১ লাখ টাকার নিচে, দুস্থ ও অসহায় গোষ্ঠী (যেমন এতিম ও অনাথ) অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান, উপার্জনে অসামর্থ্য (যেমন পঙ্গু, অন্ধ, বোবা ইত্যাদি) পিতামাতার সন্তান, নদী ভাঙ্গন কবলিত- বাস্তুহারা অসচ্ছল পরিবারের সন্তান, নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী (যেমন রিক্সাচালক, দিনমজুর ইত্যাদি), সকল চরম প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী এবং শিক্ষাবর্ষে ন্যূনতম ৭৫ শতাংশ ক্লাসে উপস্থিত থাকতে হবে।
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ জানান, ছাত্রীদের জন্য উপবৃত্তি চালু করার সুফল পাওয়া গেছে। উপবৃত্তি চালু করার কারণে ছাত্রীদের ঝড়ে পড়ার হার কমেছে। তবে ছাত্রদের ঝরে পড়ার হার বাড়ছে। বিশেষ করে কলেজ পর্যায়ে ঝড়ে পড়ছে ছাত্ররা। তাই কলেজ পর্যায়ে ছাত্রদের জন্য উপবৃত্তি চালু কারার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
Leave a Reply