মো. এমদাদ ইমন এর কবিতা বুকপকেট

ঘি দিয়ে ভাজা নিমের পাতা-
তবুও যায় না তাতে জাতের তিতা!

যতবার মন খারাপ হয়েছে ততবার সমুদ্রের কাছে কষ্ট বেঁচে দিয়েছি!
আমিই হয়ত প্রথম সমুদ্র বেপারি-
সমুদ্র জন্মের পূর্বে সুখের সওদা করতাম!
এমনকি সুখের সওদাগর হয়ে গিয়েছিলাম।

যতবার কষ্ট পাই ততবার বুক পকেটে রেখে দিই-
যখন নতুন কোনো দুঃখী আসে আমার সাক্ষাতে তখন দুঃখে দুঃখে সুখ বানাইয়ে দেই।
যত শৃঙ্খলিত নিয়ম আছে আমি তার বিরুদ্ধে ঘোর বিরুদ্ধে মন ভাল রাখার যুক্তি বিক্রেতা-
ওহে,কেউ আছে কি?
আমার বুক পকেটের জমানো দুঃখ’কে সুখ হিসাবে কিনতে?

বারবার বলি লক্ষবার বলি বিষাদ স্মৃতিতে জং ধরলে মানবজন্ম তার সফলতা পায়-
কিন্তু দিনের পর দিন রাতের পর রাত কেটে যায় লোহায় জং ধরে লোহার পরিসমাপ্তি ঘটে কিন্তু মানবের স্মৃতিতে ক্যান জং ধরেনা??
তবে কি বলতে পারিনা মানবমন সবচেয়ে কঠিন পদার্থ?
শৃঙ্খলিত কারাগার থেকে দুঃস্বপ্নের চিৎকার ভেসে আসে-
কারণ মনটা যে ভেঙে যায় ছলনার গ্রাসে!

আচ্ছা কবি তুমি কি সাত সমুদ্র তের নদী পাড়ি দিয়েছো?
জানি তোমার উত্তর ব্যতিক্রম হবে-
তুমি যে জাত ত্যাড়া!

হ্যা,আমি ত্যাড়া-
কারণ আমার,
বিভ্রাটে বিভ্রাটে ললাটের ভাঁজে ভাঁজে শূন্যতার আহাজারি-
অন্ধকারে ঢিল ছুড়েছি,পথভুলা পথচারী।
আলোতে প্রবেশ তব হবে-
যবে উচ্চ-শির নতজানু রবে!
চেখে দেখিতে চাহি সব আছে যত ভবে-
জল্পনা!সামান্য নাম’খানি থেকে যাবে সবে।

হ্যা,আমিই ত্যাড়া-
সত্যিই কবি তুমি ত্যাড়া!শুনলাম ঈশ্বরের সাথেও তোমার মান বেঁধেছে?

হ্যা,বেঁধেছে!
আমি ঈশ্বরকে বলে দিয়েছি এ পল্লীতে আর থাকব না
এও বলেছি-
শোনো ঈশ্বর,আমি অঘোষিত পাগল তাই এ পল্লী আর ভাল্লাগছে না-
দূর পল্লীতে স্থান করে দাও নয়তো তোমার সাথে অভিমানের মাত্রাটা আরো বেড়ে যাবে,বেড়ে যাবে সফল পৃথিবীর বুকে এক অসফল আর ব্যর্থ অভিমানীর সংখ্যা!

ঈশ্বর কিছুই বলেনি,
তীব্র অভিমানে আমিও বলে দিয়েছি-
হে,ইশ্বর!
আমি এ পল্লীতে ক্লান্ত হয়ে গেছি-
তুমি কি চাও কোনো ক্লান্তিযুক্ত পথিক নিরুপায় হয়ে পথচলুক??
তুমি কি চাও কোনো তৃষ্ণার্ত পথিক তোমার সাথে অভিমানে জল পান না করুক??
তুমি কি চাও কোনো ব্যর্থ অশরীরী তোমার সাথে অভিমানে নতুন কোনো শরীরে ভর করুক??
হে,ঈশ্বর!উত্তর টা আমায় পরে দিও-
আগে বল তুমি এ পল্লী থেকে আমায় উচ্ছেদের পরিকল্পনা নিয়েছো কিনা?

ঈশ্বর উত্তর দেয়নি-
কারণ যারা বুকপকেটে দুঃখ জমা রাখে তাদের কথা ঈশ্বর শোনেনা!
সময় এসেছে বিষাদ স্মৃতিতে জং ধরিয়ে দাও-
সময় এসেছে বুকপকেটের জমানো দুঃখ ঝেড়ে ফেল;
নয়তো ছিঁড়ে ফেলে দাও-

ডায়েরিতে আর আঁচর কেটোনা, ডায়েরিতে আঁচর কাটলে অন্তরে মোচড় কাটবে-
সঙ্গী নিওনা তীব্র পুড়বে!
শুধু একটি বুকপকেট রেখো যেখানে দুঃখ জমাবে-
শুধু একটি বুকপকেট রেখো যেখান থেকে স্বপ্ন দেখবে মানুষ-
শুধু একটি বুক পকেট রেখো যেখানে নিরাপদ থাকবে সবাই!

শুধু একটি বুকপকেট রেখো ভাল মানুষের-
শুধু একটি বুকপকেট রেখো ডাস্টবিন হিসাবে!
শুধু একটি বুকপকেট রেখো দুঃখের।
শুধু একটি বুকপকেট!
হ্যা,শুধুমাত্র একটি বুকপকেট রেখো মনুষ্যত্বের-
শুধুমাত্র,একটি বুক পকেট।
শুধুমাত্র একটি-

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *