প্রত্যেক পণ্যের উপর সরকার ভ্যাট আরোপ করেছে, নিয়ম অনুযায়ী তাই করা দরকার। কিন্তু ২০১০ সালের শিক্ষানীতি অনুযায়ী যেহেতু শিক্ষাকে অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেখানো হয়েছে তাই রীতি মত শিক্ষা ক্ষেত্রে ভ্যাট কোন দিনই বৈধ হতে পারে না। তাই আজ চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে এই নিয়ম বহির্ভূত ভ্যাট প্রত্যাহারের উদ্দেশ্য “বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীবৃন্দ” ব্যানারে মানববন্ধন করে প্রায় পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের বেতনের ওপর ধার্যকৃত সাড়ে ৭ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব চত্ত্বরে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। ‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীবৃন্দ’ ব্যানারে আয়োজিত মানববন্ধনে চট্টগ্রামের বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।
মানববন্ধনে উপস্থিত শিক্ষার্থীদের হাতে ‘এক দফা এক দাবি, ভ্যাট প্রত্যাহার কর করতে হবে’, ‘শিক্ষা ব্যবসা নয়, জাতির মেরুদণ্ড’, ‘আমরা ছাত্র, টাকার গাছ না’, ‘আমার বাবা এটিএম বুথ না’, ‘শিক্ষা কোন পণ্য না, শিক্ষা অধিকার’, ‘শিক্ষা আর ব্যবসা এক সঙ্গে চলবে না’, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, শিক্ষা ব্যবসা করে না’, ‘আমরা ছাত্র, পণ্য সামগ্রী না’, ‘শিক্ষার আর্থিক দায়িত্ব রাষ্ট্রকেই নিতে হবে’, ‘অবিলম্বে ভ্যাট প্রত্যাহার কর’, ‘প্রয়োজন সংখ্যক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি করতে না পারা রাষ্ট্রে ব্যর্থতা’ সম্বলিত প্ল্যাকার্ড ছিল।
বক্তারা বলেন, সরকার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর ৭.৫ শতাংশ হারে ভ্যাট আরোপ করে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবনকে অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে ঠেলে দিয়েছে।
হাতে গোণা কিছু উচ্চবিত্ত এবং ধনী পরিবার ছাড়া অধিকাংশ শিক্ষার্থীর অভিভাবকদেরই পরিবারের ব্যয় কমিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেতন পরিশোধ করতে হয়।
অনেকে টিউশন ও খণ্ডকালীন চাকরি করে লেখাপড়ার খরচ বহন করে। শিক্ষা ব্যয় কমাতে সরকারের উচিৎ ছিল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যাতে বেতন ও ভর্তি ফি কম নেয় সে ব্যবস্থা করা। কিন্তু সরকার সেই কাজ না করে উল্টো ভ্যাটের খড়গ শিক্ষার্থীদের ওপর চাপিয়ে দিয়েছে।
শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘দেশে যথেষ্ট পরিমাণ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ সৃষ্টি করতে না পারা রাষ্ট্রের চরম ব্যর্থতা। সরকার যেখানে ব্যর্থ প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় সেখানে সফল। এ জন্য সরকার শিক্ষার ওপর ৭.৫ শতাংশ ভ্যাট ধার্য করছে। এ পদক্ষেপ দেশকে মেধাশূণ্য করার পরিকল্পনা ছাড়া আর কিছুই নয়। সরকার যে এর মাধ্যমে চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা। ’
শিক্ষার্থীরা অবিলম্বে ভ্যাট প্রত্যাহার করার দাবি জানান। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি প্রদান করেন তারা। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ’র শিক্ষার্থী শিমুল গুপ্ত, বিজিসি ট্রাস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী জয়ন্ত, আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী মো. রায়হান, পোর্ট সিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী আলী নুর সিদ্দিক।
Leave a Reply