শিক্ষার্থীদের নৈতিকতার সমন্বয়ে সততা ও দেশপ্রেমে উজ্জীবিত শিক্ষা উপহার দিতে চান শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।
বৃহস্পতিবার (০২ জুলাই) দুপুরে ঢাকা কলেজ অডিটোরিয়ামে ‘একাদশ শ্রেণির নবীনবরণ ২০১৫ ও রবি ওয়াই-ফাই জোন উদ্বোধন’ অনুষ্ঠানে তিনি এ প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
জাতিসংঘের একটি সেমিনারের স্মৃতিচারণ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘের একটা সেমিনারে আমি ছিলাম। সেখানে সবাই দারিদ্র্যের কথা আসলে বাংলাদেশের উদাহরণ দেয়। কিন্তু আমি আমার বক্তৃতায় বলেছি, আমরা হয়তো অর্থনৈতিকভাবে দরিদ্র, কিন্তু আমাদের ছেলেরা বিশ্বমানের মেধাবী। তারাই দেশ গড়ে তুলবে। আমরা তাদের নৈতিকতার সমন্বয়ে সততা ও দেশপ্রেমে উজ্জীবিত শিক্ষা দিতে চাই।
তিনি বলেন, আমাদের বর্তমান শিক্ষার একটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য আছে। সেটা হলো, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন করে ২০২১ সালের মধ্যে জ্ঞাননির্ভর ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে দেশকে মধ্যম আয়ে রূপান্তর করা। আর এই লক্ষ্য পূরণে সবাইকে এক সঙ্গে কাজ করতে হবে।
নুরুল ইসলাম নাহিদ আরও বলেন, আমরা চাই যুগের সঙ্গে সমন্বয় করে বিশ্বমানের শিক্ষা।প্রচলিত গতানুগতিক শিক্ষায় আমরা দেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করতে পারবো না। আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো, শিক্ষার গুণগতমান বৃদ্ধি করা। এটা একদিনে বা এমনিতে সম্ভব না। এটা ধারাবাহিকভাবে হয়। এজন্য শিক্ষায় আমূল পরিবর্তন করতে হবে। সেটা করতে আমরা ইতিমধ্যে শিক্ষানীতি করেছি। এটা কোনো দলের শিক্ষানীতি নয়, জাতীয় শিক্ষানীতি।
নির্ধারিত সময়ে উচ্চ মাধ্যমিকের ক্লাস শুরু হয়েছে দাবি করে মন্ত্রী বলেন, বেশিরভাগ কলেজে সরকার নির্ধারিত সময়ে ক্লাস শুরু হয়েছে। হয়ত দু’এক জায়গায় এর ব্যত্যয় ঘটেছে। সেটাও কাভার হয়ে যাবে। দেশে বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীর সংখ্যা ও হার বেড়েছে বলেও জানান তিনি।
মন্ত্রী বলেন, আমাদের প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে। শুধু প্রযুক্তি হলেই হবে না, মানুষও তৈরি করতে হবে। কারণ প্রযুক্তি তৈরি করেছে মানুষ। মানুষ হিসেবে সৎ হতে হবে এবং যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। আর এই মানুষ তৈরি করবেন আমাদের শিক্ষকরা।
এ সময় তিনি বলেন, আমরা শিক্ষদের জন্য কিছুই করতে পারি না। আমরা এতটাই কৃপণ, তাদের প্রাপ্য সম্মানটুকুও দিতে পারি না। তারপরও কাজ করছি। আমরা আশা করছি, তাদের (শিক্ষক) প্রতি যথাযথ সম্মান দিয়ে আপনারা আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর বাংলাদেশ গঠনে কাজ করবেন।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, বাজেটে আমরা সর্বনিম্ন অর্থ বরাদ্দ পেয়েছি। আমরা সবচেয়ে চাপে থাকবো। তাই সবাইকে বলেছি, এক টাকা দিয়ে দুই টাকার কাজ করতে হবে। অপচয় বা বেশি খরচ কমাতে হবে। যতটুকু আছে তার পরিপূর্ণ ব্যবহার করতে হবে।
আতিকুর রহমানের কুরআন থেকে তেলাওয়াতের মাধ্যমে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর তুহিন আফরোজা আলম। আরও বক্তব্য দেন তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাঈদ আহমেদ পলক এমপি, শিক্ষা সচিব নজরুল ইসলাম খান, রবির চিফ মার্কেটিং অফিসার মাহতাব উদ্দিন আহমেদ, উপাধ্যক্ষ মোয়াজ্জেম হোসাইন মোল্লা, অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক প্রফেসর মুস্তারি বেগম প্রমুখ।
রবি আজিয়াটা লিমিটেডের সৌজন্যে ঢাকা কলেজের একাদশ শ্রেণির নবীন ছাত্রদের জন্য একটি করে সিম দেওয়া হবে। ওই সিম ব্যবহার করে তারা ২ এমপি স্পিডের ফ্রি ওয়াই-ফাই ব্যবহার করতে পারবে। এছাড়াও যেকোনো রবির সিম ব্যবহারকারী ছাত্ররা এই ওয়াই-ফাই ব্যবহার করতে পারবে।
সূত্রঃ বাংলানিউজ