জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছু ছাত্র-ছাত্রীদের খোলা চিঠি

বরাবর,
মাননীয় ভাইস চ্যান্সেলর মহোদয়,
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়,
গাজীপুর, ঢাকা, বাংলাদেশ।
বিষয় : শুধুমাত্র জি.পি.এ’র ভিত্তিতে অনার্স ১ম বর্ষের ভর্তি না নেওয়া প্রসঙ্গে।

জনাব,

যথাবিহীত সম্মান পূর্বক বিণীত নিবেদন এই যে, আমরা ২০১৫-১৬ সেশনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী। আমাদের মত দেশের অধিকাংশ ছাত্র-ছাত্রীর উচ্চশিক্ষা গ্রহণের অন্যতম প্রধান বিদ্যাপিঠ হচ্ছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। আপনি ভিসি হিসেবে যোগদানের পর থেকেই এ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাণের সঞ্চার লাভ করেছে। এর পেছনের মূল কারণ হচ্ছে আপনার বিচক্ষণতা ও বাস্তব সম্মত চিন্তা ও চেতনা। আপনার বিবিধ সাহসী পদক্ষেপ ও যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত গ্রহণের ফলে আজ আমরা সহ অধিকাংশ ছাত্র-ছাত্রী নতুন করে উচ্চশিক্ষা লাভের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে এবং সমাজের সকল স্তরেই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে একটি ইতিবাচক ধারণা তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে সময় মতো পরীক্ষা গ্রহণ ও ফলাফল প্রদানের ক্ষেত্রে বিপ্লব সাধিত হয়েছে এবং সেশন জট কমানোর কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ ও সাদরে সকল সহলে সমাদৃত হচ্ছে।

 

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালেয়র এতগুলো ভালো পদক্ষেপ গ্রহণের মাঝে একটি সিদ্ধান্ত যথেষ্টই বিতর্কের সৃস্টি করেছে। সেটি হচ্ছে ২০১৫-১৬ সেশন থেকে কোনরূপ ভর্তি পরীক্ষা না নিয়ে শুধুমাত্র এসএসসি ও এইচএসসি এর জি.পি.এ’র ভিত্তিতে অনার্স ১ম বর্ষে ভর্তি নেওয়া হবে (সূত্র: দৈনিক যুগান্তর- ২৬/০৫/২০১৫)। এই ঘোষণাটি শোনার পর অন্যান্য ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের মত আমরাও আশাহত হয়েছি। আমরা মনে করি শুধুমাত্র জি.পি.এ’র ভিত্তিতে ভর্তি করলে মেধার সঠিক মূল্যায়ন কখোনই সম্ভবপর হবে না। কারণ আমরা যারা গ্রামের বা মফস্বলের ছাত্রছাত্রী তারা নানাবিধ সীমাবদ্ধতা ওসুযোগ-সুবিধার অভাবে শহরের ছাত্রছাত্রীদের তুলনায় অনেকাংশেই পিছিয়ে পড়ি। এর মধ্যে অন্যতম কারণ ভালোমানের কলেজ ও শিক্ষকের অভাব ও অর্থ নৈতিক সীমাবদ্ধতা।

 

পত্রিকার মাধ্যমে জানতে পেরেছি যে মেডিকেল কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জিপিএ’র মাধ্যমে ভর্তির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেও বাস্ববসম্মত নয় বলে সেই পথ থেকে সরে এসেছে। এসম্পর্কে সুধীজনদের মতামত হচ্ছে শুধুমাত্র জিপিএ’র মাধ্যমে ভর্তি করলে মেধার চরম অবমূল্যায়ন ঘটবে এবং আমাদের দেশে প্রচলিত বহুকেন্দ্রীক শিক্ষা ব্যবস্থায় এই পদ্ধতি মোটেই বাস্তব সম্মত নয়।

 

অতএব জনাবের নিকট আকূল আবেদন আমাদের মত অসংখ্য ছাত্র-ছাত্রীর ভবিষ্যতের কথা বিবেচনা করে এই সিদ্ধান্তটি বাতিল করুন। নাহলে আমাদের মতো গ্রামের ও মফস্বলের ছাত্র-ছাত্রীদের উচ্চশিক্ষা গ্রহণের শেষ আশ্রয়স্থল থেকে আমরা বঞ্চিত হব।

তাই আপনার নিকট পুনরায় আর্জি বিগত সালের ন্যায় জিপিএ ও ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতিটি বহাল রাখতে আপনার একান্ত মর্জি হয়।

বিণীত নিবেদক
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছু ছাত্র-ছাত্রী।





Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*