এমন পরিবার বাংলাদেশে খুব কমই পাওয়া যাবে যাদের সন্তানের কাছে প্রত্যাশা থাকে না
ssc/hsc তে A+/golden A+ পেতেই হবে । আর তার জন্য সন্তানকে ২৪ ঘন্টায় ৫/৬ ঘন্টা স্কুল, ২ টা কোচিং ৩ টা হাউজ টিউটর পর্যন্ত রেখে দেয়, দেখা যায় ঘুমানোর পর্যন্ত টাইম থাকে না , একটা অসুস্থ প্রতিযোগিতার জন্য । যদিও লাইফটা আমিও পার করে এসেছি, আর আমি নিজেও পরিবারের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারি নি । যদিও এই ব্যাপারে কোন আক্ষেপ নাই, কারণ সবার একই রকম ক্ষমতা থাকবে , এমন নয় । সত্যিকার অর্থে SSC এর সময় আমি নিজে A+ আশা করলেও , HSC সময় তা করি নি, কারণ আমি জানতাম আমার ক্ষমতা, কতটুকু কি করা সম্ভব আমার পরীক্ষায় ।
আসল কথায় আসি, সারা দিন মুখস্থ করে , মানসিক প্রেসার নিয়ে পরীক্ষায় যেকোন মূল্যে A+ কতটুকু কাজে আসে ? অনেক ক্ষেত্রে নকল, পরীক্ষায় প্রশ্ন-পত্র ফাঁস সব কিছুই করা হয় A+ পাওয়ার জন্যে । অথচ অনেক A+ ই ভার্সিটি ভর্তি পরীক্ষার সময় ঝরে পড়ে যায়, তাদের কোন পাবলিক ভার্সিটিতে খুজে পাওয়া যায় না । আবার A+ পায় নি এমন স্টুডেন্ট পাবলিক ভার্সিটিতে চান্স পেয়েছে এমন নজিরও আছে ভুরি ভুরি । যদিও পাবলিক ভার্সিটিতেই পড়তে হবে এমন না ।
A+ এর জন্য পড়াশুনা, পাবলিক ভার্সিটির জন্য পড়াশুনা কে আমি বিরোধীতা করছি না, কিন্তু জীবন বিসর্জন দিয়ে এসব পড়াশুনার কোন মূল্য নেই । কারণ একটা স্টুডেন্টের শিক্ষা অর্জনের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা সমাজে এবং দেশের সুনাগরিক হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলা । অথচ যেকোন মূল্যে A+ পেতেই হবে পরিবারের এমন প্রত্যাশার কারণে কেউ কেউ ক্রাইম করে A+ পেতে চাইছে, আবার কেউ A+ না পেয়ে আত্নহত্যা করছে ।
আমাদের আশেপাশে বহু নজির আছে এমন যাদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা থাকা সত্ত্বেও শুধু নিজের যেকোন কাজের প্রতি দক্ষতার ভিত্তিতে তারা আজ সমাজে প্রতিষ্ঠিত । সুতরাং A+ পাওয়ার জন্য সবাই পড়বে কিন্তু পেতেই হবে না পেলে মরে যাব এমন ভাবে পড়া উচিত না । পরিবারেরও এমন আচরণ করা উচিত না ।
প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা একজন মানুষকে অনেকের মধ্যে সাধারণ হিসেবে গড়ে তোলে, আর নিজের দক্ষতার চর্চা তাকে অসাধারন করে তুলতে পারে ।
A+ পেতেই হবে এই সংস্কৃতি না বদলালে অভিভাবকদেরই কপাল পুড়বে, যখন গাদা গাদা A+ সার্টিফিকেট থাকবে, কিন্তু তার মূল্য থাকবে না ।
*এত কথা বলার একটাই কারণ SSC পরীক্ষায় A+ না পেয়ে এক ছাত্রের আত্নহত্যা , সাথে বাবা-মাকে দোষারোপ করে সুইসাইড নোট ।
Leave a Reply