স্টাফ রিপোর্টার: খুলনার কয়রা উপজেলায় ঈদ পুনর্মিলনী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) বিকেলে খুলনা জেলা দক্ষিণ ইসলামী ছাত্রশিবিরের উদ্যোগে ঈদ পুনর্মিলনী’২৫ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
খুলনা জেলা দক্ষিণ শাখার আয়োজনে উপজেলার নিজস্ব কার্যালয়ে দক্ষিণ জেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি আবু জার গিফারীর সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি মুহা. অয়েসকুরনীর সঞ্চালনায় আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দাম, আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর খুলনা অঞ্চলের সহকারী পরিচালক ও কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় শুরা সদস্য ও খুলনা জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর মাও. মোহাম্মদ এমরান হোসাইন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দাম বলেন, এই জনপদ ইসলামের ঘাটি। দীর্ঘ ১৬ বছর উন্মুক্ত ময়দানে কুরআনের আলোচনা করতে দেয়নি ফ্যাসিস্ট হাসিনা শক্তি। ১৯৭১ সালের সংবিধান পরিবর্তন করে ১৯৭২ সালে নিজেদের মতো সংবিধান প্রনয়ণ করা হয়েছে। স্বাধীনতার পরে পরিবারতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থা তারা প্রবর্তন করে দেশটাকে কুক্ষিগত করে রাখার অপচেষ্টা করেছে। কিন্তু ২৪ এর আন্দোলন সেই প্রথার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে। দেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিতের মধ্য দিয়ে কুরআনের শাসন কায়েম করতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে৷ এসময় তিনি ইসলামী ছাত্রশিবিরের ছায়াতলে এসে সকলকে সৎ, যোগ্য ও দেশপ্রেমিক নাগরিক হওয়ার আহবান জানান।
আমন্ত্রিত অতিথির বক্তব্যে মাওলানা আবুল কালাম আজাদ বলেন, ইসলামী ছাত্রশিবির হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট অরগানাইজেশন। আদর্শবাদী এ সংগঠন পথভ্রষ্ট মানুষকে সৎ ও ন্যায়ের আহবান করেন। বিগত আওয়ামী লীগ সরকার আদর্শবাদী এই সংগঠনের অসংখ্য নেতাকর্মীদের খুন ও গুম করেছে। তবুও কোন অপশক্তি শহীদি কাফেলা ইসলামী ছাত্রশিবিরের কণ্ঠ স্তব্ধ করতে পারেনি। সকল প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে সুষ্ঠু ও সুন্দর দেশ, জাতি ও সমাজ গঠনে দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে কাজ করছে ইসলামী ছাত্রশিবির।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন খুলনা জেলা দক্ষিণ ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি জি এম মুনায়েম বিল্লাহ, সাবেক জেলা সভাপতি জনাব রুহুল আমীন, সাবেক জেলা সভাপতি মুহা: হাফিজুর রহমান মন্টু, সাবেক জেলা সভাপতি স.ম আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাবেক জেলা সভাপতি রুহুল কুদ্দুস, সাবেক জেলা সভাপতি আব্দুর রহিম, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের খুলনা জেলা দক্ষিণ সহ সভাপতি ও কয়রা কপোতাক্ষ কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যক্ষ মাও. ওয়ালিউল্লাহ, সাবেক জেলা সভাপতি মাওলানা এস. এম আমিনুল ইসলাম, খুলনা জেলার সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ্যাড. মোস্তাফিজুর রহমান, সাবেক কেন্দ্রীয় অর্থ সম্পাদক ড. জি এম শফিকুল ইসলাম প্রমুখ, কয়রা থানা জামায়াতে ইসলামীর আমীর মাওলানা মিজানুর রহমান প্রমুখ।
এসময় বক্তারা বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকার পালানোর পর কয়রায় প্রকাশে জনসম্মুখে ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ অঞ্চলে ইসলামের ঝান্ডাকে গতিশীল করতে সকলকে ত্যাগ ও সময় কুরবানির দিয়ে কাজ করতে হবে। ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের শ্রম, মেধা, যোগ্যতা, সময় দিয়ে জ্ঞানের আলোয় সমাজটাকে গড়তে হবে। এই কাফেলার দায়িত্বশীল হয়ে ইসলামের দাওয়াত জেলা, উপজেলার রন্ধ্রে রন্ধ্রে পৌঁছে দিতে হবে।
শুভাকাঙ্ক্ষীদের উদ্দেশ্যে বক্তারা বলেন, আপনাদের সন্তানকে ইসলামী ছাত্রশিবিরের পতাকাতে সামিল করে দেন। তাহলে আপনার সন্তান হবে আপনার এলাকার আদর্শের একটি ফুটন্ত ফুল।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামী খুলনা মহানগরীর অফিস সহকারী মো: দিদারুল ইসলাম, কয়রা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি শেখ সাইফুল্ল্যাহ, কয়রা থানা ছাত্রশিবিরের সভাপতি জনাব সামিউল, কয়রা সদর ইউনিয়নের আমির মো. মিজানুর রহমান, উপজেলা শ্রমিক কল্যাণ বিভাগের সভাপতি মোল্লা শাহাবুদ্দীন, কয়রা বাজার কমিটির সভাপতি সরদার জুলফিকার আলম সহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় অসংখ্য দায়িত্বশীল, সুশীল সমাজ, শিক্ষক, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী সহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোকজন। ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীরা ইসলামী সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি মনোমুগ্ধ করে তোলেন।