সুরক্ষার সেরা অনুশীলনগুলো তুলে ধরতে ‘সেফগার্ডিং ইন স্কুলস সিম্পোজিয়াম’-এর আয়োজন করল ব্রিটিশ কাউন্সিল

রাজধানীর ফুলার রোডে অবস্থিত নিজস্ব অডিটোরিয়ামে ২৪ সেপ্টেম্বর প্রথমবারের মতো ‘সেফগার্ডিং ইন স্কুলস সিম্পোজিয়াম’ -এর আয়োজন করেছে ব্রিটিশ কাউন্সিল। সুরক্ষার সেরা অনুশীলনগুলো গ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করা, যুক্তরাজ্য ও সুরক্ষার সাথে সম্পর্কিত স্কুল নেটওয়ার্কের বিশেষজ্ঞ পেশাজীবীদের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা তুলে ধরা এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ড ও সেরা অনুশীলনগুলোর সাথে সমন্বয় করে একটি সমন্বিত ও পূর্ণাঙ্গ সুরক্ষা নীতি নির্ধারণে সরকারকে সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে এ সিম্পোজিয়াম অনুষ্ঠিত হয়। যুক্তরাজ্যে সুরক্ষা বিষয়ক সেরা অনুশীলন, শিক্ষায় সুরক্ষা: বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট এবং বাংলাদেশের জন্য একটি পরিকাঠামো নির্মাণের রোডম্যাপ; সিম্পোজিয়ামটিকে এই তিনটি সেগমেন্টে ভাগ করা হয়।

ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশের ডিরেক্টর টম মিশশা তার স্বাগত বক্তব্যে বলেন, “ব্রিটিশ কাউন্সিলে আমরা বিশ্বাস করি, সুরক্ষা নিশ্চিত করা আমাদের সকলের দায়িত্ব। এই সিম্পোজিয়ামের আয়োজন করতে পেরে আমরা আনন্দিত যেখানে আমরা সুরক্ষা বিষয়ক আমাদের একই লক্ষ্য ও সেই লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়ার নির্দেশনা সম্পর্কে সরকার ও বেসরকারি খাত, সহযোগী স্কুলগুলোর নেটওয়ার্ক ও যুক্তরাজ্যের সেফগার্ডিং অ্যালায়েন্সের বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে জানার সুযোগ পাচ্ছি। এই আয়োজনের ফলাফল হিসেবে এর ধারাবাহিকতা আরও সুদূরে বিস্তৃত হবে বলে আমরা আশাবাদী; কোনো শিশু বা প্রাপ্তবয়স্ক কেউই ঝুঁকিতে থাকবে না, এমন একটি নিরাপদ পরিবেশ তৈরিতে আমাদের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।”

আয়োজনে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন যুক্তরাজ্যের সেফগার্ডিং অ্যালায়েন্সের সিইও (প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা) এমিলি কনস্ট্যান্টাস। তার উপস্থাপনায় আইনি পরিকাঠামো ও আন্তর্জাতিক সুরক্ষা মানদণ্ড, বিশেষ করে যুক্তরাজ্যের স্কুলগুলোর সেরা অনুশীলন ও এর ব্যবহারোপযোগী নির্দেশিকার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়। এ সময় সুরক্ষার সংস্কৃতি নিশ্চিত করার পদ্ধতি ব্যাখ্যা করে ব্রিটিশ কাউন্সিলের সুরক্ষা টিম। একটি কার্যকর সুরক্ষার সংস্কৃতির গুরুত্বপূর্ণ উপাদান ও এধরণের সংস্কৃতি বিকাশের গুরুত্বের ওপর এসময় বিশেষভাবে আলোকপাত করা হয়।

অনুষ্ঠানে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের পরিকল্পনা ও উন্নয়নের পরিচালক অধ্যাপক ড. একিউএম শফিকুল আজম বলেন, “শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষার জন্য আমাদের প্রাসঙ্গিক নীতিমালা ও ফ্রেমওয়ার্ক রয়েছে। এক্ষেত্রে, আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বুলিং/র‍্যাগিং প্রতিরোধ সংক্রান্ত নীতিমালা-২০২৩ এবং ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি প্রতিরোধের নির্দেশিকা’ আছে। আর এ নীতি ও ফ্রেমওয়ার্ক বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করা সম্মিলিত দায়িত্ব। এসব বিষয়ে সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আমরা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করছি; যেমন, কিশোরী ও নারীদের প্রতি সহিংসতা সংক্রান্ত যে কোনও ঘটনার রিপোর্ট করার জন্য আমাদের নির্দিষ্ট হেল্পলাইন নম্বর রয়েছে। যেনো কেউ পিছিয়ে না থাকে এক্ষেত্রে সকলের জন্য শিক্ষার সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”

এ বিষয়ে হেইলিবেরি ভালুকার প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক সাইমন ও’গ্রেডি বলেন, “শিক্ষায় উৎকর্ষ সাধন করতে চাইলে আমাদের অবশ্যই শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা ও সুস্বাস্থ্যের দিকে গুরুত্ব দিতে হবে। শিক্ষাখাতের নেতৃস্থানীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার সেরা ব্যবস্থা ও সকল স্কুলে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব। নিরাপদ স্কুল নিশ্চিতে আমাদের প্রতিশ্রুতি সর্বজনীন এবং এক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেয়া হবে না।”

এ বিষয়ে উদয়ন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রিন্সিপাল জহুরা বেগম বলেন, “কেবলমাত্র শিক্ষার্থীদের জন্য নয়, প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যেন শিক্ষক, অভিভাবক ও সাপোর্ট স্টাফদের জন্যও নিরাপদ হয় ওঠে, আমাদের তা নিশ্চিত করতে হবে। স্কুলে আমরা এমন একটি সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা করতে কাজ করে যাচ্ছি, যেখানে আমরা একে অপরকে হয়রানি ও সহিংসতা থেকে নিরাপত্তা দিতে সক্ষম হবো।”





About লেখাপড়া বিডি ডেস্ক 1516 Articles
লেখাপড়া বিডি বাংলাদেশের প্রথম শিক্ষা বিষয়ক বাংলা কমিউনিটি ব্লগ।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*