বিদেশে উচ্চশিক্ষা যেকোন বাংলাদেশী শিক্ষার্থীর জন্য একটি স্বপ্নের নাম। কলেজের গণ্ডি পেরোনোর আগেই অনেকে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের। কিন্তু কেন আপনি বিদেশে পড়তে যেতে চান, সে বিষয়ে অবশ্যই আপনার স্বচ্ছ ধারনা থাকতে হবে। অনেকেই বহুদিনের লালিত স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হন, আবার অনেকে সঠিক তথ্য জানার অভাবে স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হয়ে ওঠেননা ।
শিক্ষার ক্ষেত্রটি সবসময়েই প্রসারণশীল। যুগে যুগে শিক্ষার ক্ষেত্র কখনই নির্দিষ্ট গন্ডিতে সীমাবদ্ধ থাকেনি বরং দেশ, কা্ল, জাতি্-সংস্কৃতি প্রভৃতির মাঝে বিস্তর লাভ করেছে। আপনি যদি প্রসারিত দৃষ্টিভঙ্গি ও বিচিত্র দক্ষতায় নিজেকে সমৃদ্ধ করতে চান তবে দেশের বাইরে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের কোন বিকল্প নেই। এখানে উচ্চশিক্ষার্থে বিদেশে যাওয়ার স্বপক্ষে কয়েকটি যুক্তি সঙ্গত পয়েন্ট তুলে ধরা হলোঃ
পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধিঃ
বিদেশে উচ্চশিক্ষা শুধুমাত্র শিক্ষা এবং ব্যক্তিত্বকেই সমৃদ্ধ করবেনা, আপনার পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে। বিশেষত ব্যবসা, আন্তর্জাতিক বিষয়বলি এবং চাকরির ক্ষেত্রে আপনার পেশাগত দক্ষতা খুবই মূল্যবান ভূমিকা রাখবে। চাকরির বাজারে আপনার চাহিদা বেড়ে যাবে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েটদের অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে। বিদেশ ফেরত গ্র্যাজুয়েটরা আন্তর্জাতিক জ্ঞানে সমৃদ্ধ এবং মাতৃভাষা ছাড়াও এক বা একাধিক ভাষাতে দক্ষ এই দুটি বিষয়ের উপর জোর দিয়ে থাকে এই প্রতিষ্ঠানগুলি।
আত্মসমৃদ্ধি:
যারা বিদেশে লেখা পড়া করেন তারা বিচিত্র অভিজ্ঞতার কারণে বুদ্ধিমাত্রা ও মননশীলতার দিক থেকে অধিকতর সম্মৃদ্ধ হয়ে ওঠেন। নতুন দৃষ্টিভঙ্গিতে ভাবতে শেখা এবং স্বাধীনভাবে জীবনযাপন করার ফলে তারা অধিক স্বাধীন এবং অধিক দক্ষভাবে চিন্তা ও কাজ করতে শেখেন। যে কোন চ্যালেঞ্জিং কাজ বা পেশায় সফল হওয়ার জন্য জরুরি অনেক গুণ তাদের মধ্যে অধিক বিকশিত হয় যা অনেক ক্ষেত্রে দেশের শিক্ষার্থীদের মধ্যে লক্ষ করা যায় না। তাই দেখা যায়, বিদেশে থাকার অভিজ্ঞতা অত্যন্ত মূল্যবান, এমনকি কখনো কখনো তা ব্যাক্তির সামগ্রিক জীবনে ইতিবাচক ভূমিকা রাখে। নতুন সংস্কৃতির সাথে পরিচয় এবং সেখান থেকে অর্জিত জ্ঞান আপনাকে অধিকতর আত্মবিশ্বাসী করে তুলবে , স্বদেশে প্রত্যাবর্তনের পরে আপনার শিক্ষা ও অভিজ্ঞতার যথাযথ মূল্যায়ন হবে।
বিশ্ব সম্পর্কে নতুন দৃষ্টিভঙ্গিঃ
বিদেশে অবস্থানের ফলে আন্তর্জাতিক, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক ইস্যুগুলো সম্পর্কে আপনার জ্ঞান ভান্ডার সমৃদ্ধ হবে। এটা নিশ্চিত যে, বিদেশে অবস্থানের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ব সম্পর্কে আপনি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে ফিরে আসবেন। একটি ভিন্ন সংস্কৃতির জনগন, তাদের প্রাত্যহিক জীবন যাত্রা সংশ্লিষ্ট নানা সমস্যা মোকাবেলার রীতিনীতি সম্পর্কে প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা অর্জনের ফলে বিশ্ব সংস্কৃতি আন্তর্জাতিক সহযোগিতার বিষয়টি আপনি স্পষ্টভাবে অনুভব করবেন।
স্কলারশিপঃ
বিদেশে উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে স্কলারশিপ একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। সেক্ষেত্রে একজন শিক্ষার্থীকে ইউনিভার্সিটির স্কলারশিপ নিয়ে ধারণা থাকতে হবে, কোন ইউনিভার্সিটি, স্কুল, কলেজ স্কলারশিপ দিয়ে থাকেন, কোন কোন বিষয়ের উপর এবং মেয়াদ কত দিন । সেখানকার জীবনযাত্রা কেমন ব্যয়বহুল এবং আপনার পক্ষে স্কলারশিপের অর্থে সব মেনে লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়া সম্ভব কিনা ধারণা থাকতে হবে ।
বিদেশে উচ্চশিক্ষার প্রস্তুতিঃ
সর্ব প্রথম আপনাকে ভাষাগত দক্ষতা অর্জন করতে হবে। যেমন : IELTS, TOEFL, PTE, etc. পরীক্ষার যেকোনো একটিতে অংশগ্রহন করা আবশ্যক। কিছু কিছু প্রোগ্রামে GRE, SAT, GMAT তবে চীন, জাপান, জার্মানি, ফ্রান্স- এসব দেশের ক্ষেত্রে সে দেশের ভাষা শিখে নেওয়া ভালো। শিক্ষাগত যোগ্যতার সব সার্টিফিকেট ইংরেজি করে নিতে হবে। সার্টিফিকেটে নামের বানান ভুল থাকলে সংশোধন করতে হবে। ইউনিভার্সিটি নির্বাচন এখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ইউনিভার্সিটি খরচ সম্পর্কে অবগত হতে হবে।
ক্রেডিট ট্রান্সফারঃ
কিছু বিশ্ববিদ্যালয় ক্রেডিট ট্রান্সফার এর সুযোগ দিয়ে থাকেন। যা দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীদের জন্য একটি বড় সুযোগ। যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো একটি নিদ্রিষ্ট কোর্সে পড়াশোনা করছেন কিন্তু এখন আপনি ওই কোর্সেই বিদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতে আগ্রহী। সে ক্ষেত্রে দেশে সম্পন্নকৃত কোর্সটির ক্রেডিট গ্রহণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে এক্সেমশন দাবি করতে পারেন। আপনার কোর্সটির জন্য কতটুকু
ক্রেডিট পাবেন তা নির্ধারণ করবে ওই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তাছাড়া কিছু বিশ্ববিদ্যালয় ডুয়াল কোর্সের সুযোগ দিয়ে থাকে।
দেশ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্বাচনঃ
একজন শিক্ষার্থীর জন্য দেশ এবং বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন করা খুব গুরুত্বপূর্ণ। যেমন কিছু দেশ এবং বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের জন্য পড়াশোনা সম্পূর্ণ ফ্রি করে দিয়েছে, আবার কিছু দেশে লেখাপড়ার খরচ খুবই বেশি। পড়াশুনার পর কিছু কিছু দেশে শিক্ষার্থীরা স্থায়ী ভাবে বসবাসের সুযোগও পেয়ে থাকে।
কোন দেশে স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়া সহজ?
আমরা মনে করি ভিসা নির্ভর করে একজন শিক্ষার্থীর শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং কঠোর পরিশ্রমের উপর। আপনি যদি ভিসা প্রক্রিয়ার সঠিক নিয়ম কানুন মেনে এগিয়ে যান, আপনার জন্য যে কোনো দেশের ভিসা পাওয়া সহজ।
উচ্চ শিক্ষার জন্য যুক্তরাজ্যকে স্বর্গরাজ্য বলা যায় । সারা পৃথিবী থেকে এখানে স্টুডেন্টরা পড়াশুনা করতে আসে । ইদানিং এখানে ভিসা পাওয়ার সংখ্যা খুব ভাল । কানাডা বাংলাদেশীদের জন্য পছন্দের তালিকায় শীর্ষে অবস্থানে আছে। কানাডা উন্নত দেশ গুলোর মধ্যে অন্যতম। এটি একটি শান্তি প্রিয় ও নিরাপদ দেশ যেখানে উচ্চশিক্ষার সুযোগ অনেক ভালো। বিনামূল্যে পড়াশোনার জন্য উত্তম দেশ হল জার্মানী। আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা লাভের অন্যতম পীঠস্থান হল সুইডেন। উন্নত জীবন, পড়াশুনা, এবং গবেষণার অপার সমাহার রয়েছে এই দেশটিতে। আর এসব কারণেই উচ্চ শিক্ষা
পিপাসুদের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে সুইডেন। মালয়েশিয়া পর্যটন কেন্দ্রিক দেশ। এটি এশিয়ায় বেশ খ্যাতি অর্জন করেছে। মালয়েশিয়ায় বর্তমানে উচ্চশিক্ষা অর্জন করছে ১৩২ দেশের প্রায় ১,৫০,০০০ বিদেশী ছাত্র-ছাত্রী। বাংলাদেশী ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য এটি এশিয়ার মধ্যে প্রথম পছন্দের স্থান। এছাড়াও মালয়েশিয়ায় উচ্চশিক্ষার মান খুবই উন্নত। মালয়েশিয়া থেকে লেখাপড়া করে পৃথিবীর যেকোন দেশে চাকুরী অথবা পরবর্তী পর্যায়ের পড়াশোনার সুযোগ রয়েছে।
বিদেশে উচ্চশিক্ষা & Career Paths
উচ্চশিক্ষা গ্রহনে আগ্রহী বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের জন্য Career Paths একটি বিশ্বস্ত নাম। বিগত ১৫ বছর ধরে Career Paths সফলতার সাথে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের পরামর্শ ও গাইড লাইন দিয়ে আসছে। বিদেশে যেতে আগ্রহী ছাত্রছাত্রীদের সুপরামর্শ দিয়ে বিদেশে যাওয়া পর্যন্ত পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে তাদের স্বপ্ন সফল করতে আমরা সদা প্রত্যয়ী। মূলত,সঠিক আর্থিক তথ্য প্রদান, ইংরেজিতে দূর্বল হলে তাকে আইএলটিএস বা অন্যান্য পরীক্ষায় অংশগ্রহনের যোগ্য করে তোলা, বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন করা, ভিসা আবেদন পত্রের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে একজন শিক্ষার্থীর বিদেশ যাওয়া নিশ্চিত করাই তাদের মূল লক্ষ্য। Career Paths যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র,কানাডা, সুইডেন, রাশিয়া,জার্মান,চায়না,নরওয়ে, অস্ট্রেলীয়া, মালেয়শিয়া সহ প্রায় ২০ টিরও অধিক দেশের জন্য কাজ করে আসছে। আপনার উচ্চশিক্ষা সম্পন্ন করে যাতে সফল কর্মজীবন শুরু করতে পারেন,সেক্ষেত্রে Career Paths সর্বদা সচেষ্ট।
আরো বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুনঃ careerpaths.com.bd
Leave a Reply