ইনফরমেশন টেকনোলজিতে ক্যারিয়ার ও উচ্চশিক্ষাঃ অস্ট্রেলিয়া

আমাদের দেশে অসংখ্য শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে পড়াশোনা করে টেকনিক্যাল-ননটেকনিক্যাল অনেক ধরণের ডিগ্রী নিয়ে বের হচ্ছে। দেশে যে পরিমান গ্র্যাজুয়েট তৈরি হয় সে তুলনায় চাকরি বা কর্মসংস্থানের সুযোগটা অনেক কম। তাই দেশের বাইরে কাজ করাটা একটা অত্যাবশ্যকীয় ব্যাপার হয়ে দাড়ায় অনেকের জন্য। কিন্তু সমস্যা যেটা হয় তা হল দেশের বাইরে যে জায়গাগুলোতে অনেক হাইলি স্কিল্ড ছেলেমেয়ে লাগবে সেখানে আমাদের অধিকাংশ গ্র্যাজুয়েটরাই কোয়ালিফাই করতে পারেনা। অনেক কারন আছে সেটার। আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যেভাবে তাদেরকে তৈরি করে সেখানে উন্নত দেশগুলোর ইন্ডাস্ট্রির যে ডিমান্ড, তা ফুলফিল করাটা অনেক কঠিন হয়ে পড়ে তাদের জন্য। ইন ফ্যাক্ট এশিয়ান কান্ট্রিগুলোও অনেক স্কিল্ড পিপল ডিমান্ড করে। সারা বিশ্বের স্কিল্ড হিউম্যান রিসোর্সের যে ডিমান্ড তা এখন অনেক হাই হয়ে গিয়েছে। সেখানে আমাদের দেশীও যে এডুকেশন সিস্টেম তাতে ছেলেমেয়েরা যে জিনিসগুলো নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হয় আর মডার্ন বিজনেস সিস্টেমসের যে প্রব্লেম স্পেস, কমপ্লেক্স বিজনেস সিচুয়েশনস এইগুলো অনেক ডিফার করে। ছেলেমেয়েরা অনেক কনফিউশন আর অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে যায়। এই প্রবন্ধে যারা আমাদের দেশের গ্র্যাজুয়েট এবং ইন্টারন্যাশনালি তাদের ক্যারিয়ার গড়তে চায় তারা কিভাবে কি করতে পারে সেটা নিয়ে ডিটেইল ইনফরমেশন দেয়ার চেষ্টা করা হবে। যারা নন আইটি, নন কম্পিউটার সায়েন্স ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে এসে কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি ওরিয়েন্টেড স্টাডি করতে চায় এ লেখাটির তথ্যগুলো তাদের জন্যও হেল্পফুল হবে।

Shahjahan Miya

ইন্টারন্যাশনালি কাজ করতে একটা ওয়ার্ল্ড ক্লাস ক্যালিবার লাগবেই। সেটা পাবার একটা ওয়ে হল ইন্টারন্যাশনালি রেকগনাইজড কোন ইন্সটিটিউট থেকে কোন ডিগ্রী বা প্রফেশনাল কোর্স করে ফেলা।

আগে ‘’কেন অস্ট্রেলিয়া?’’ এই ব্যাপারটা নিয়ে কিছু কথা বলে ফেলা যায়। এই দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আইটি সেক্টরে মাস্টার্স করতে আসলে কিংবা মাস্টার্স করলে আমাদের ছাত্ররা কয়েকটা জিনিস পাবেই। প্রথমত, তারা একটা ‘’ডিজিটাল ফিউচার’’ এর জন্য নিজেকে প্রিপেয়ার করার পথে এক ধাপ এগিয়ে যাবে। কারন এখন সবকিছু ডিজিটাল। ব্যবসা ডিজিটাল, মার্কেটিং ডিজিটাল, ইনফরমেশন পাবার ওয়েজ ডিজিটাল। এইখানকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাদের ছাত্ররা যাতে এই ডিজিটাল সিচুয়েশন, প্রব্লেমস সল্ভিং এর জন্য প্রিপেয়ারড হতে পারে সে অনুযায়ী গড়ে তোলে। তাদের কোর্সগুলো সেভাবে প্রফেশনালি ডিজাইন করে।

তারপর এদেশে আসলে স্কলারশিপ পাবার একটা প্রস্পেক্ট তৈরি করতে পারবে। বলে নেয়া ভাল যে অনেকেই অস্ট্রেলিয়াতে আসে স্কলারশিপ নিয়ে এবং মাঝপথে সেগুলো বাতিল হয়ে যেতে পারে কিছু কিছু ক্ষেত্রে। আবার অনেকে সেলফ ফান্ডে পড়তে আসে তারা এত ভাল পারফরমেন্স দেখায় যে পড়াশোনার মাঝপথে তাদের স্কলারশিপ হয়ে যায়। পুরো বিষয়টাই ডিপেন্ড করে পারফর্মেন্সের ওপর।

এরপর বলা যায় প্র্যাক্টিক্যাল এবং লেটেস্ট ইন্ডাস্ট্রি রিলেটেড নলেজ এবং টেকনোলজির সাথে পরিচিত হতে পারবে খুব সহজেই। পৃথিবীর বড় বড় ইন্ডাস্ট্রিতে কি ধরণের কাজ হচ্ছে, কি ধরণের টেকনোলজি ইউজ করে তারা কাজ করছে, ইনোভেশন করছে এগুলো সম্পর্কে ধারনা হবে। ওভারঅল, একটা বিদেশী ডিগ্রী, ওয়ার্ল্ড ক্লাস ডিগ্রী অর্জন করে নিলে দেশে তো বটেই পৃথিবীর অনেক বড় বড় ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করা সম্ভব হবে। আর অস্ট্রেলিয়ান ডিগ্রির চাহিদা অনেক। কেও যদি এশিয়ান কান্ট্রিগুলোতেও কাজ করতে চায় তাহলেও সেটা করতে পারবে খুব সহজেই।

সবশেষে বলব এইখানে টপ প্রফেশনালসদের সাথে কাজ করা, অভিজ্ঞতা বিনিময় করার সুযোগ অনেক। এই দেশে পৃথিবীর অনেক নামকরা প্রফেশনাল আছেন। কাজ করেন। আইটি প্রফেশনাল, ইন্ডাস্ট্রি প্রফেশনাল। এদের সাথে কাজ করলে অনেক এক্সপেরিয়েন্স পাওয়া যায় এবং এই এক্সপেরিয়েন্সটা অনেক ভ্যালুয়েবল।

এদেশের সবগুলো বিশ্ববিদ্যালয় একটা স্ট্রাকচার ফলো করে। সেটা এইরকম, যে ইনফরমেশন টেকনোলজি বা ইনফরমেশন সিস্টেমসে মাস্টার্সের জন্য এটা একটা টু ইয়ার্সের ডিগ্রী হবে, চারটা সেমিস্টার হবে, প্রতি সেমিস্টারে চারটা ইউনিট পড়তে হবে। এইখানে সাবজেক্টকে ইউনিট বলা হয়। যদি কেও একটা সেমিস্টার করে ফেলে তাকে দেয়া হয় ‘গ্র্যাজুয়েট সার্টিফিকেট অফ ইনফরমেশন টেকনোলজি’। কোথাও কোথাও ‘গ্র্যাজুয়েট সার্টিফিকেট অফ বিজনেস ইনফরমেশন সিস্টেমস’, আবার কোথাও ‘গ্র্যাজুয়েট সার্টিফিকেট অফ বিজনেস আইটি’ দেয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ভেদে সার্টিফিকেটের নাম ভ্যারি করে। এভাবে, কেও দুইটা সেমিস্টার শেষ করলে তাকে ‘গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা’ সার্টিফিকেট দেয়া হবে। যদি কেও তিনটা বা কোন কোন ক্ষেত্রে চারটা সেমিস্টার কভার করে তাহলে তাকে ‘মাস্টার অফ আইটি’ বা ইকুভ্যালেন্ট ডিগ্রী দেয়া হয়। নামগুলো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওপর ডিপেন্ড করে। আর যদি কেও দুই বছর কভার করে ফেলে তাহলে তাদেরকে ‘’প্রফেশনাল মাস্টার্স’’ ডিগ্রী দেয়া হয়। এইসব প্রোগ্রামগুলো শুরু হয় বছরে দুইবার। ফেব্রুয়ারি এবং জুলাই মাস থেকে। যারা জুলাইয়ের সেমিস্টার ধরতে চাইবে এপ্রিল-মে থেকে এপ্লিকেশন প্রসেস শুরু করতে হবে। আর ফেব্রুয়ারির সেমিস্টার ধরতে চাইলে নভেম্বর থেকে এপ্লাই করতে হবে। এন্ট্রি পয়েন্ট নিয়ে বলতে গেলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বলে দেয় যে কোন ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থীরা এইখানে আসতে পারবে। যদি কোন কোর্সে কোন প্রি-রিকুইজিটস থাকে তাহলে তারা সেগুলো ওয়েবসাইটে দিয়ে দেয়।যে কেও এই প্রি-রিকুইজিটস পূরণ করে তাদের মেইন কোর্স শুরু করতে পারে।

অস্ট্রেলিয়ার এডুকেশন সিস্টেমস নিয়ে একটু বলে নেয়া যায়। অনেকের ধারনা এসব দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে হবে এবং এর বাইরে আর কোন অপশনই নাই। এদেশে কিন্তু শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রীই এভেইলেবল না। আইটি ফিল্ডে অনেক ইন্সটিটিউটও প্রফেশনাল ডিগ্রী দেয়। এগুলোকে বলা হয় ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজি। লাইক মেলবোর্ন ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজি। এইগুলা কিন্তু খুব ভাল। এগুলোর এন্ট্রি পয়েন্ট অনেক ফ্লেক্সিবল। কিন্তু ফ্লেক্সিবল বলে কিন্তু এইগুলা যে কম মানসম্পন্ন তা কিন্তু কখনই না। এরাও হাই স্ট্যান্ডার্ড এডুকেশন এন্ড ট্রেনিং দেয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর চাইতে এইসব ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজিগুলোর মান কোন অংশে কম না। তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইন্সটিটিউট এই দুটোর মধ্যে বেসিক ডিফরেনসটা কি সেটা জানা দরকার। এই ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজিগুলো প্র্যাক্টিক্যাল এস্পেক্টকে বেশি ফোকাস করে পড়ায়। এখানে প্রোগ্রামিং পড়ানো হবে। ডে টু ডে এক্টিভিটিজ করতে কি কি ধরণের কাজ, কি কি স্কিলস লাগবে সেগুলো নিয়ে ট্রেনিং দেয়া হয়। মানে ঠু মাচ হ্যান্ড টু হ্যান্ড টেকনিক, হ্যান্ড টু হ্যান্ড এক্টিভিটিজ করানো হয়। আর বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হ্যান্ড টু হ্যান্ড বিষয়গুলো একটু কম শেখানো হয় বাট ছেলেমেয়েদেরকে এমনভাবে শেখানো হবে যাতে তারা পৃথিবীর যে কোন হ্যান্ড টু হ্যান্ড এক্টিভিটিজে লিড দিতে পারে। তারা যাতে লিডার হতে পার তাদের সেক্টরে। এইখানে নলেজ দেয়া হয়।শিক্ষার্থীরা যে কোন জায়গায় নিজেকে ফিট করতে পারবে। এক্সপ্লোর করতে পারবে এবং ডিপার এন্ড ডিপার প্রবেশ করতে পারবে। এইরকম টেকনিকস শিখিয়ে দেয়া হয়। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে এদেশে কিছু ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজি আছে যেখানে কোন কোর্স করলে এবং তারপর বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিগ্রি করতে গেলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনেক এক্সামশন দেয়। এভাবে স্টুডেন্টরা সুন্দরভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে এন্ট্রি করতে পারে। তাই যদি কোন বাধা থাকে যার কারনে প্রাইমারিলি স্টুডেন্টরা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইটি বা ইনফরমেশন সিস্টেমস নিয়ে পড়তে চান্স পায়না কিংবা ফ্লেক্সিবিলিটি প্রেফার করে তাহলে এই ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজিগুলো একটা অপশন হতে পারে। মোটের ওপর আইটি সেক্টরে কাজ করার জন্য কোন রকম ব্যারিয়ার দেয়া নাই অস্ট্রেলিয়াতে। প্রাইমারিলি হয়ত কিছু সমস্যা হয় অনেকের। কিন্তু একটু কেয়ার নিলে, পরিশ্রম করলে সেটা কভার করে ফেলা যায়।

স্পেসিফিকভাবে কিছু বিশ্ববিদ্যালয় এবং এদের কোর্সগুলো নিয়ে কথা বলা যেতে পারে। প্রথমে বলা যায় ডিকেন ইউনিভার্সিটি নিয়ে(http://www.deakin.edu.au)। এইটা মেলবোর্ন সেন্ট্রালে অবস্থিত। আইটি নিয়ে অনেক রকম মাস্টার্স ডিগ্রী তারা অফার করে। এইগুলো মাস্টার্স অফ আইটি ডিগ্রী হয়ে থাকে। এগুলোর বিভিন্ন রকম মেজর আছে। যেমন ডাটা সিকিউরিটি, ইআরপি(এন্টারপ্রাইজ রিসোর্স প্ল্যানিং) এইগুলো। এদের যে প্রোগ্রাম স্ট্রাকচার তাতে এরা ভাস্টলি ইন্টারন্যাশনাল আইটি এস্পেক্টটা কভার করে। দ্যাট ইজ গ্লোবাল যে নিড তার ওপর ডিপেন্ড করে ওরা প্রোগ্রাম ডিজাইন করে, মডিফাই করে যাতে ছাত্ররা এনাফ নলেজ পায় এই বিষয়ে। ডিকেন ইউনিভার্সিটিতে আইটি রিলেটেড কি কি কোর্স আছে সেগুলো জানা যাবে (http://goo.gl/1DStqY) এইখান থেকে।

 

এরপরে আরেকটি বিশ্ববিদ্যালয় কিউইউটি যেটা এই ধরণের ডিগ্রী খুব ভালোভাবে ডিজাইন করে এবং প্রোপোজ করে। কুইন্সল্যান্ড ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজি (https://www.qut.edu.au)। এটার মেইন ক্যাম্পাস একেবারে ব্রিজবেনের সিটি সেন্টারে অবস্থিত। এই বিশ্ববিদ্যালয়টা আইটি রিলেটেড অনেক মেজর অফার করে। বিশ্ববিদ্যালয়টা খুবই ভাল বিজনেস প্রসেস মডেলিং আর ইআরপি(এন্টারপ্রাইজ রিসোর্স প্ল্যানিং)’এ। কেও যদি চায় যে আমি বিজনেস প্রসেস মডেলিং’এ মাস্টার ডিগ্রী করব, আমার স্পেশিয়ালাইজেশন হবে অনলি বিজনেস প্রসেস মডেলিং’এ তাহলে সে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে এডমিশন নেয়ার কথা ভাবতে পারে। কেও যদি চায় আমি শুধু ইআরপি রিলেটেড এপ্লিকেশন নিয়ে কাজ করব তাহলেও বিশ্ববিদ্যালয়টা ভাল একটা চয়েস হতে পারে। কেও যদি চায় আমি অনলি নেটওয়ার্কিং কিংবা ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্ট নিয়ে কাজ করব তাহলেও সে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা চিন্তা করতে পারে। এন্ট্রি পয়েন্ট সব ক্লিয়ারলি ওয়েবসাইটে দেয়া আছে।

 

স্পেশালাইজেশন অনেক ইম্পরট্যান্ট একটা ফ্যাকটর। যখন ছাত্ররা ব্যাচেলর কিংবা মাস্টার ডিগ্রী করে ফেলে তখন সে এই পৃথিবীর কোন পার্টিকুলার সেক্টরের এক্সপার্টদের একজন হয়ে যায়। তাই কারও যদি এক্সপার্টাইজ না থাকে তাহলে কিন্তু সে একজন গ্লোবাল গ্র্যাজুয়েট হিসেবে ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করার জন্য ফিট না। তার কোন ভ্যালু নাই। ইট ডাজন্ট মেক এনি সেন্স। তাই সব ডিগ্রীর জন্য একটা স্পেশিয়ালাইজেশন পিক করতে হয়। এতে করে ঐ রিলেটেড, পৃথিবীতে যত চাকরির সার্কুলার হবে সবগুলোতে সে এপ্লাই করতে পারবে। সেখানকার জন্য সে কমপিট করতে পারবে। একটা পজিশনে কাজ করার যে এইম সেটা অনুযায়ী কারও প্রোফাইল ম্যাচ করলে সে ইন্টারভিউ কল পাবে। এরপরে ইন্টারভিউ দেবে। এবং সেখানে সে নিজেকে ফিট প্রমান করতে পারলে সে জবটা পাবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যখন কোন স্পেশালাইজেশন ডিজাইন করে তখন খুব প্ল্যান করে, চিন্তা করে সেটা করা হয় যাতে এইখান থেকে পাশ করে গ্র্যাজুয়েটরা একটা সাস্টেইনেবল ক্যারিয়ার পায়। এর ফিউচার এসপেক্ট কল্পনা করা হয় যাতে এট লিস্ট ওয়ান ডিকেড তারা ভাল করতে পারে। ইনোভেটিভ কিছু করতে পারে।

 

আরেকটা বিশ্ববিদ্যালয় ভিক্টোরিয়া বিশ্ববিদ্যালয়(http://www.vu.edu.au)। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ইনফরমেশন টেকনোলজি রিলেটেড দুই ধরণের মাস্টার্স প্রোগ্রাম অফার করা হয়। একটা বিজনেস ওরিয়েন্টেড আরেকটা পিওর টেকনোলজি ওরিয়েন্টেড। টেকনোলজি রিলেটেড ডিগ্রী আছে এইখানে মাস্টার্স অফ এপ্লাইড আইটি। কলেজ অফ ইঞ্জিনিয়ারিং এই ডিগ্রিটা অফার করে। ওরা মূলত ছেলেমেয়েদেরকে এমনভাবে তৈরি করে যাতে তারা ট্রেইনার হিসেবে সারা পৃথিবীতে কাজ করতে পারে। প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট এক্সপার্ট হতে পারে। ডাটা এডমিনিস্ট্রেটর, আইটি কনসালটেন্ট, নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ার, সফটওয়্যার ডেভেলপার হিসেবে যাতে গ্র্যাজুয়েটরা নিজেদের ক্যারিয়ার গড়তে পারে এই বিশ্ববিদ্যালয়টা সেভাবেই নলেজ দেয়। গ্র্যাজুয়েটদেরকে তৈরি করে। আরো তথ্য পেতেঃ http://goo.gl/RqMm9k

ভিক্টোরিয়া বিশ্ববিদ্যালয় আরেকটা মাস্টার্স ডিগ্রী অফার করে তা হল মাস্টার্স অফ বিজনেস। এইটা ননটেকনিক্যাল এবং এপ্লিকেশন ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রাম। অনেকগুলো মেজর আছে এইখানে যেমন ইনফরমেশন সিস্টেমস, ইআরপি, বিজনেস আইটি এইসব। এইখানে মূলত এপ্লিকেশন এরিয়াতে কাজ করিয়ে ছেলেমেয়েদেরকে প্রিপেয়ার করা হয়। অনেক সফটওয়্যার নিয়ে শেখানো হয়, বিজনেস প্রসেস মডেলিং করা শেখানো হয়, অনেক প্র্যাক্টিক্যাল প্রব্লেম সল্ভ করা শেখানো হয়। ইআরপি নিয়ে পড়ানো হয়। মূলত এইটা এসএপি ফোকাসড। এইটা একটা জার্মান কোম্পানি তারা খুব রিনাউন্ড ইআরপি সফটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার।

রিসেন্টলি ভিক্টোরিয়া বিশ্ববিদ্যালয় নতুন একটা প্রোগ্রাম লঞ্চ করেছে সেটা হল মাস্টার অফ বিজনেস এনালিটিক্স। এটাতে স্টুডেন্টরা এমন নলেজ পাবে যে কিভাবে বিজনেসে ডাটা স্টোর করতে হবে সে বিষয়ে কাজ করতে পারবে, সমস্যাগুলো বুঝে সল্ভ করতে পারবে এবং ঐ ডাটা স্টোরেজ থেকে কন্টিনিয়াসলি ডিসিশন মেকিং এন্ড ফোরকাস্টিং করতে পারবে। যেমন গত ডিকেড এইভাবে চলেছে সামনের ডিকেড এইভাবে চলবে। কিভাবে চললে ভাল বিজনেস করা যাবে। কিভাবে মিনিমাম কস্টে ম্যাক্সিমাম প্রফিট করা সম্ভব হবে। এইটা অবশ্য শুধু ভিক্টোরিয়াতেই না, ডিকেনেও আছে, RMIT সহ অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে আছে।

একটা প্রশ্ন এরাইজ করে সবার মনে। কেন দুই বছরের মাস্টার্স? দুই বছরের মাস্টার্স করলে এইখানে সিটিজেনশিপ পাবার ক্ষেত্রে একটা পয়েন্ট যোগ হয়। অস্ট্রেলিয়ায় সিটিজেনশিপ পাবার ক্ষেত্রে ৬০ পয়েন্টের একটা স্কেল আছে। মিনিমাম ৬০ পয়েন্ট স্কোর করতে হবে। এইটা আসবে IELTS থেকে, বয়স থেকে, কোন ডিগ্রী কেও নিলে তার লেন্থটা কত ছিল, কেও ইংরেজি ছাড়া আর কি কি ভাষা জানে, পরিবার এবং পরিবারের সদস্য সংখ্যা থেকে। এইরকম আরো কিছু ক্রাইটেরিয়া আছে সেগুলো মিলিয়ে ৬০ পয়েন্ট আসলে একজন মানুষ অস্ট্রেলিয়ায় সিটিজেনশিপ পাবার জন্য এপ্লাই করতে পারবে। এইখানকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্টদেরকে এট্রাক্ট করার জন্য এইভাবে প্রোগ্রামগুলোর ডিজাইন করে থাকে। আরেকটা কথা হল অস্ট্রেলিয়াতে একটা স্ট্যান্ডার্ড আছে নাম হল একিউএফ(অস্ট্রেলিয়ান কোয়ালিফিকেশন্স ফ্রেমওয়ার্ক)। এই স্ট্যান্ডার্ড মেইন্টেইন করেই এইখানে পড়ানো হয়। এইটা হল সরকারিভাবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে বলে দেয়া হয় যে আপনারা এই কোয়ালিটি মেইন্টেইন করবেন এবং প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় বাধ্য এই কোয়ালিটি মেইন্টেইন করতে। একেবারে অক্ষরে অক্ষরে!

যখন অস্ট্রেলিয়াতে একটা ডিগ্রী নিল কোন স্টুডেন্ট, তার প্রথম বেনিফিট হল তার একটা ইউনিক প্রফেশনাল এক্সপার্টাইজ আসল। এবং সেটা রেকগনিশনসহ। এইদেশের লেখাপড়ার স্ট্যান্ডার্ড, পরিবেশ তাকে একটা কী স্ট্রেন্থ দিবে। এতে কেও যদি চায় যে ইন্ডিয়া কিংবা বাংলাদেশের কোথাও সে এপ্লাই করবে তাহলে ওখান থেকে যারা এপ্লাই করবে তাদের অধিকাংশের থেকে বেশি ক্যাপাসিটি ধারন করবে। কারন এই ডিগ্রীগুলো ইন্টারন্যাশনাল ওয়েতে ডিজাইন করা এবং বিশ্বের যে হাই ডিমান্ড তাকে ক্যাপচার করে, সেটা মাথায় রেখেই পড়ানো হয়। তারা যে কোন জায়গায় কোয়ালিফাই করবে। এবং শুধু কোয়ালিফাই করা না, এচিভ করাটা মেইন। তার এচিভ করার মত কনফিডেন্স, ক্যাপাসিটি সবই থাকবে। তাই এচিভও করতে পারবে ইজিলি এন্ড অলসো এজ কুইক এজ হিউম্যানলি পসিবল।

 

ড. শাহ জাহান মিয়াঅস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সিনিয়র লেকচারার হিসেবে কর্মরত আছেন।

* ড. শাহ’র ফোনে দেয়া সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে আবু সালেহ মো. রোকন (ইমেইল এড্রেসঃ orokono@gmail.com) কর্তৃক সম্পাদিত।





Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*