আইইউবিএটিতে শেষ হলো ১৬তম সাউথ এশিয়ান ম্যানেজমেন্ট ফোরাম

ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজিতে (আইইউবিএটি) এর নিজস্ব ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হয়েছে ১৬তম সাউথ এশিয়ান ম্যানেজমেন্ট ফোরাম। শনিবার (১৮ ডিসেম্বের) সমাপনী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শেষ হল দুই দিনব্যাপি ১৬তম সাউথ এশিয়ান ম্যানেজমেন্ট ফোরামের। অনুষ্ঠানের আয়োজক অ্যাসোসিয়েশন অব ম্যানেজমেন্ট ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউশনস ইন সাউথ এশিয়া (এএমডিআইএসএ)। এবারের মূল প্রতিপাদ্য ”ব্যাবসা ও ব্যবস্থাপনায় মহামারির প্রভাব: টেকসই ও প্রবৃদ্ধি কৌশল।

সমাপনী অনুষ্ঠানের শুরুতেই জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা যুদ্ধের বীর-শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান উপস্থিত অতিথি ও অংশগ্রহণকারীগণ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন আইইউবিএটি’র ব্যবসায় অনুষদের ডিন অধ্যাপ ড. খায়ের জাহান সোগরা। দুই দিনের এই ফোরাম সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন কনফারেন্স ম্যানেজার সহযোগী অধ্যাপক হাসানুজ্জামান তুষার।

ফোরামে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ৯৭টি সারসংক্ষেপ ও ৫১টি পূর্ণাঙ্গ গবেষণাপত্র প্রকাশ করা হয়। ভারত থেকে ২৫টি, শ্রীলংঙ্কা থেকে ৩টি, নেপাল থেকে ৩টি, মালদ্বীপ থেকে ২টি, চীন থেকে ২টি, মালায়শিয়া থেকে ২টি ও বাংলাদেশ থেকে ৬০ গবেষণাপত্র তূলে ধরেন গবেষকগণ।

দুই দিন ব্যাপি ফোরামে বানিজ্য ব্যবস্থাপনা, ডিজিটাল এজুকেশন, অর্থনীতি, স্বাস্থ্যসেবা, মানবসম্পদ, মার্কেটিং ইত্যাতি বিষয়ের উপরে প্যারালাল সেশন ও রিসার্চ ট্র্যাক সেশনের আয়োজন করা হয়। রিসার্চ ট্র্যাক সেশনে ফোরামের দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের শিক্ষাবিদ ও গবেষকগণ উপস্থিত ছিলেন।

সেরা গবেষণা পত্রের ঘোষণা দিতে অনলাইনে যুক্ত হন সাউথ এশিয়ান জার্নাল অব ম্যানেজমেন্টের সম্পাদক অধ্যাপক ম্যাথিউ জে ম্যানিমালা।

সমাপনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনা মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘করোনায় পরিস্থিতি খারাপ হলেও বাংলাদেশ সরকার সবসময় ভবিষ্যতের কথা ভেবে উন্নয়নের চেষ্টা করেছে। পরিস্থিতি যেমনই হোক না কেন সারা দেশ থেকে অশিক্ষা, দারিদ্রতা দুর করে, ভবিষ্যতের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলতে আমরা সবসময়-ই বদ্ধ পরিকর যার কারনে আমাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সবসময়েই ইতিবাচক রয়েছে। বৈশ্বিক পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমাদের প্রয়োজন নেতৃত্ব দিতে জানে এবং বানিজ্য ব্যবস্থপনায় ভূমিকা রাখতে পারেন এমন দক্ষ জনবল। যারা আগামী দিনে দেশের অর্থনীতি উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে। আমি আইইউবিএটিকে ধন্যবাদ জানাই ১৬ত সাউথ এশিয়ান ম্যানেজমেন্ট ফোরাম আয়োজন করার জন্য। আগামীর বাংলাদেশের তরুণদের পথ দেখাতে আইইউবিএটির এই নিরলস চেষ্টাকে আমি সাধুবাদ জানাই। মানসম্মত শিক্ষার পাশাপাশি দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে এই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের গড়ে তোলে। যার প্রতিফলন আজকের এই আয়োজন।’

বিশেষ অতিথি হিসাবে অনলাইনে যুক্ত হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনিস্টিইউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের পরিচালক ও এএমডিআইএসএ এর ভাইস প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক মোহাম্মদ আব্দুল মোমেন। তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি এই আয়োজনের মধ্য দিয়ে, মহামারির পরবর্তী সময়ে সারা বিশ্বের বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো যে প্রতিকূলতার ভেতর দিয়ে যাচ্ছে তা মোকাবিলা করার পরামর্শ পাওয়া যাবে। সারা বিশ্বের এই সার্বিক পরিস্থিতি মোকাবেলা করার ক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তিতে বানিজ্যের সুস্থ পরিবেশ গড়ে তোলাই হবে আমাদের আগামীর প্রত্যয়।’

দুই দিনব্যাপি ১৬তম সাউথ এশিয়ান ম্যানেজমেন্ট ফোরামে সভাপতিত্ব করেন আইইউবিএটি’র উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুর রব। বক্তব্য রাখেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. হামিদা আখতার বেগম এবং কোষাধাক্ষ্য অধ্যাপক সেলিনা নার্গিস।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথিকে শুভেচ্ছা স্মারক প্রদান করেন আইইউবিএটি এর উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুর রব এবং উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. হামিদা আখতার বেগম।

সভাপতির বক্তব্যে ড. আব্দুর রব বলেন, ’১৪ বছর পর বাংলাদেশ এই ফোরাম আয়োজনের সুযোগ পেল। আইইউবিএটি এই ফোরাম আয়োজনের সুযোগ পেয়ে গর্বিত। আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে করোনা পরবর্তী সময়ে বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো যে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে, তা মোকাবেলায় এই ফোরাম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আমি আশাবাদী। ভবিষ্যতে দেশের আগামী প্রজন্মের শিক্ষার্থী, ব্যাবসায়ী ও নীতি-নির্ধারকদের নিয়ে এমন আয়োজন আইইউবিএটিতে অব্যহত থাকবে। ’

গত শুক্রবার (১৭ ডিসেম্বর) উদ্বোধনী আয়োজনের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছিল ১৬তম সাউথ এশিয়ান ম্যানেজমেন্ট ফোরাম। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পাকিস্তানের শুকুর আইবিএ ইউনিভার্সিটি এর উপাচার্য এবং এএমডিআইএসএর সভাপতি অধ্যাপক ড. সৈয়দ মীর মোহাম্মাদ শাহ।





Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*