কয়রায় জনগণের আস্থা স্মার্ট, পরিশ্রমী ইউএনও অনিমেষ

“সেই ধন্য নরকূলে লোকে নাহি ভুলে, মনের মন্দিরে নিত্য সেবে সর্বজন”। সারাবিশ্বের ন্যায় আমাদের দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও এমন কিছু সরকারি কর্মকর্তা রয়েছেন যারা তাদের কর্মযজ্ঞ দিয়ে জনগনের মনে আস্থার জায়গা করে নিয়েছেন।

এমনই একটা নাম বাংলাদেশের সর্বদক্ষিণের উপকূলীয় অঞ্চল খুলনার কয়রা উপজেলার নির্বাহী কর্মকতা অনিমেষ বিশ্বাস। অত্যন্ত সৎ, মেধাবী, বিনয়ী, সদালাপী, দায়িত্ব ও কর্তব্যপরায়ন এ কর্মকর্তা গত বছর ১৩ জুলাই’২০-এ কয়রা উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে যোগদান করেন।

সেই থেকেই উপজেলাবাসীর কল্যাণে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। দিনরাত একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্ত ছুটে চলেছেন। যেকোন দুর্যোগে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। তিনি যোগদানের কয়েকদিন আগে আম্পান লন্ডভন্ড করে দেয় এই উপজেলা। অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়। সকল প্রতিকূলতাকে উপেক্ষা করে অসহায় ও ক্ষতিগ্রস্থদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি।
বসতবাড়ি নির্মাণে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) এর মাধ্যমে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন । কখনো নিজের ব্যক্তিগত অর্থ দিয়েও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। এখানেই শেষ নয়। বর্তমান বৈশ্বিক প্রাণঘাতী মহামারি করোনা ভাইরাস এর প্রাদুর্ভাব রোধে নিয়েছেন সময়োপযোগী পদক্ষেপ।

জীবনের ঝুঁকি নিয়ে উপজেলা ব্যাপি মাইকিং, পোষ্টারিং, লিফলেট বিতরণ, গণসংযোগ, সভা, সমাবেশ এর মাধ্যমে মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা করেছেন। মাস্ক পরিধান, সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখা, জনসমাগম রোধ, বিভিন্ন হাট-বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা, জরিমানা আদায়, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করে মানুষের প্রশংসা কুঁড়িয়েছেন। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে করোনা এক্সপার্ট টিম গঠন, প্রশিক্ষণ প্রদান, কর্মহীনদের মাঝে খাবার বিতরণ সত্যিই প্রশংসার দাবিদার।

করোনা সংক্রান্ত কোন অভিযোগ তার কাছে গেলেই তিনি কারো মুখাপেক্ষী না হয়ে নিজেই দ্রুঁত ছুটে যান সেখানে এবং অভিযোগের সত্যতা যাচাই করে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। তার কর্ম প্রচেষ্টার ফলে জেলার মধ্যে অদ্যাবধি এই উপজেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে কম। তার এ চেষ্টা তিনি অব্যাহত রেখেছেন। ইউএনও অনিমেষ বিশ্বাসের উদ্যোগে সরকারি সহায়তার পাশাপাশি সাধারণ মানুষের সাহায্যে গড়ে তুলেছেন কয়রা সাইক্লিং গ্রুপ। ইউএনও এর আহবানে তাদের স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণে উপজেলায় একটি শক্তিশালী যুব সমাজের সংগঠন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। যে সংগঠন বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ অব্যাহত রেখেছে।

গেলো বছর ২০মে সুপার সাইক্লোন ঘূর্ণিঝড় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন, অসহায়দের সাহায্য সহযোগিতা, গ্রামবাসীর সাথে স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে বেঁড়িবাধ নির্মাণ সহযোগীতা সহ ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারি ও বেসরকারি আর্থিক সহায়তা প্রদানে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এভাবেই জয় করেছেন সাধারন মানুষের হৃদয়। জনগনের কাছে আস্থা ও বিশ্বাসের প্রতীক হয়ে উঠেছে।

কয়রার দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নের খেটে খাওয়া দিন মজুর আলম হোসেন জনান, “কয়রায় করোনা সংক্রমণ রোধে ও আম্পান পরবর্তী সময়ে ইউএনও স্যার নিজেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কয়রার প্রত্যন্ত অঞ্চল ছুটে চলেছেন। তার দেশ ও জনবান্ধব কর্মকান্ড কয়রায় সর্বত্র আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। কর্ম ও দক্ষতার মাধ্যমে তিনি মানুষের ভালবাসা ও সম্মান অর্জনে সক্ষম হয়েছেন।”

কয়রা সদর ইউপি চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির বলেন, “ইউএনও অনিশেষ বিশ্বাস যোগদানের পর থেকে রাত-দিন কয়রাবাসীর জন্য নিবেদিত প্রাণ হয়ে কাজ করে যাচ্ছে। এমন নিষ্ঠাবান, কর্মঠ ও মানবিক গুণাবলি সম্পন্ন ইউএনও কয়রাবাসী আগে দেখেনি।”

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ সুদীপ বালা জানান, “ইউনও অনিমেষ বিশ্বাস অত্যন্ত পরিশ্রমী। তিনি করোনা ও আম্পান ক্ষতিগ্রস্ত পরিস্থিতিতে সার্বক্ষণিক খোঁজ খবর নিচ্ছেন ও উপজেলার বিভিন্ন প্রান্তে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন।”

উপজেলা বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের কাছে ভালবাসার এক নাম ইউএনও অনিমেষ বিশ্বাস । এলাকাবাসী ইউএনও’র প্রশংসা করে জানান, “ইউএনও অনিমেষ বিশ্বাস একজন দক্ষ সরকারি অফিসার হিসাবে প্রতিনিয়ত মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশের সর্বদক্ষিণে দুর্যোগ প্রবণ উপকূলীয় দুর্গম এলাকায় তিনি প্রতিনিয়ত ছুটে গিয়ে মানুষকে কাঙ্ক্ষিত সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।”

কয়রা বাজার ব্যবসায় সমিতির সাধারন সম্পাদক আসাদুল ইসলাম বলেন, “জনগণের সেবা ও সরকারের কাঙ্ক্ষিত উন্নয়নে কয়রার ইউএনও অনিমেষ বিশ্বাস স্যার সত্যিই রাতদিন কাজ করছেন।”

কয়রা উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনিমেষ বিশ্বাস বলেন, “প্রজাতন্ত্রের জন্যই জনপ্রশাসন আর জনগণের সেবা করাই জনপ্রশাসনের প্রধান কাজ। কয়রায় যোগদানের পর থেকে সরকারি প্রজাতন্ত্রের একজন কর্মচারী হিসাবে অর্পিত দায়িত্ব পালন করছি মাত্র। করোনা পরিস্থিতেও সরকারি নির্দেশনা মতে জেলা প্রশাসকের নির্দেশমত কাজ করে যাচ্ছি। সারা দেশের ইউএনও -এসিল্যান্ডসহ সরকারি কর্মকর্তারা যেভাবে কাজ করছে আমিও তেমন কাজ করছি এর বেশি কিছুই নয়।”





Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*