কয়রা থানার জনবান্ধব, জনবন্ধু ওসি রবিউল হোসেন

“পুলিশ জনগণের বন্ধু” উক্তিটির যথার্থ প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠেছে চলতি বছরের শুরু থেকে শেষ অবধি খুলনার কয়রা থানার অফিসার ইনচার্জ মো: রবিউল হোসেনের কার্যক্রমে। পুলিশ নিয়ে অনেকের বিরূপ ধারণা থাকলেও সে ধারণা সম্পূর্ণ বদলে দিয়েছে তার মানবিকতা, সততা আর নিরলস জনসেবার মাধ্যমে। তিনি ব্যতিক্রমধর্মী মিষ্টভাষী একজন পুলিশ অফিসার। সহকর্মীদের নিয়ে তিনি রাতদিন অক্লান্ত পরিশ্রমে জনসেবা করে চলেছেন। যার জন্য তার ঝুলিতে রয়েছে অনেক সম্মাননা ও পুরস্কারও। তাকে চলতি বছরে ১৬ ফেব্রুয়ারি জেলা পুলিশের মাসিক সভায় শ্রেষ্ঠ অফিসার হিসাবে সম্মাননা দেন খুলনা জেলা পুলিশ সুপার এস এম শফিউল্যাহ।

দেশে বর্তমানে টুঙ্গিপাড়া গিমাডাঙার দায়িত্বশীল স্মার্ট আইজিপি’র খুলনার কয়রা থানার অধীনে তিনি যেন একজন প্রগতিশীল আদর্শ পুলিশ অফিসার। যার কয়রা থানায় দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে মাদকদ্রব্য নিমুর্ল, পুলিশি কাজে আধুনিকায়ন, তথ্য- প্রযুক্তির ব্যবহার সহ সততা এবং মননশীল মেধার পরিচয় দিয়েছেন।

“পুলিশ জনতার, জনতা পুলিশের” এই শ্লোগানের সবটাই বাস্তবায়িত করতে তিনি যেন বদ্ধপরিকর। অফিসার ইনচার্জ রবিউল হোসেন খুলনা জেলার কয়রা থানার মানুষের চোখে আদর্শবান, ন্যায়নিষ্ঠ ও গরীবের বন্ধুসুলভ পুলিশ অফিসার। বছর জুড়ে অধিকাংশ মানুষই তাকে সাধারণ জনগণ ন্যায় বিচার প্রাপ্তি ও আস্থার শেষ আশ্রয়স্থল হিসেবে দেখেছেন। তাঁর সততা, ন্যায়নিষ্ঠা ও বিচক্ষণ বুদ্ধিমত্তা এবং কর্তব্য পরায়ণতায় কয়রা থানা মাদক, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ ও দখল বাজদের হাত থেকে অনেকাংশে মুক্ত হয়েছে।

সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তার চোখে ধনী-গরীব, রিক্সাচালক হতে সব শ্রেণি পেশার মানুষ সমান। ওসি রবিউল হোসেন বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বেশে মানুষের মাঝে উপস্থিত হয়ে মানুষের সুখ দুঃখের কথা শুনেছেন, সমস্যা এবং সমাধানে আইনি পরামর্শও দিয়েছেন। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক থেকে শুরু করে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রী সহ সকলের এক প্রিয় ব্যক্তি ওসি রবিউল হোসেন।

তিনি শুধু একজন পুলিশ কর্মকর্তাই নন, বছর জুড়ে আইন শৃংখলার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার পাশাপাশি অনেক সামাজিক কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ ও অবদান রেখেছেন। দায়িত্বে পালনে কখনো তিনি অন্যায়ের সাথে কোন আপোষ করেন না। এর ফলে শোষকশ্রেণি সহ অনেক রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীর রোষানলেও তিনি পড়েছেন। তবুও ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা এবং প্রশিক্ষিত দক্ষ আইজিপির নির্দেশে পুলিশের সেবা জনগনের দ্বার গোড়ায় পৌঁছে দিতে তিনি কখনো কুণ্ঠিত হয়নি।

কয়রা থানা সূত্রে জানা গেছে, গত এক বছরে কয়রা থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন মামলার ১৭৬৮ জন গ্রেফতারী পরোয়ানা আসামীকে জেল হাজতে প্রেরন করেছেন। ৬৬জন সাজাপ্রাপ্ত আসামীকে করেছেন আইনের মুখোমুখি। কয়রা উপজেলা এখন প্রায় মাদকমুক্ত। মাদকের বিরুদ্ধে জিরো ট্রলারেন্স ঘোষণা করে বছর জুড়ে ৪০টি মাদক মামলায় ৪৬ জনকে গ্রেফতার করে মোবাইল কোটে সাজা প্রদান, অর্থ দন্ড সহ নিয়োমিত মামলায় কোটে চালান করেছেন। পুলিশের বিশেষ অভিযানে ৬টি বন মামলায় ১৪ জনকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। কয়রায় চলতি বছরে ৬টি ধর্ষণ মামলায় এপর্যন্ত ৬ জন আসামীকে আটক করা হয়েছে।

এছাড়াও নারী নির্যাতন মামলার আসামী আটক সহ পারিবারিক সালিশের মাধ্যমে তাদের সুষ্ঠু জীবন যাপনে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে ওসি সাহেবের রয়েছে উপজেলাব্যাপী সুনাম আর সাধুবাদ। এবছরে কয়রা থানা দালাল মুক্তর পাশাপাশি জুয়ার আসর বন্ধ করার ব্যাপারে পুলিশ প্রশাসনকে প্রশংসা জানিয়েছে সর্বস্তরের জন সাধারণ।

এদিকে কোভিড-১৯ মোকাবেলায় পুলিশের প্রচার প্রচারনা ও সচেতনতামূলক কার্যক্রম এখনও চলমান রয়েছে। যৌন হয়রানী, বাল্য বিবাহ, ইভটিজিং প্রতিরোধে পুলিশ প্রশাসন মানুষকে সজাগ রাখতে বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ ও বাস্তবায়নের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন।

কয়রা থানা অফিসার ইনচার্জ রবিউল হোসেন বলেন, বর্তমান সরকার গণমানুষের বন্ধু। সরকার আমাদের পাঠিয়েছেন মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে, তাদেরকে হেফাজত করে মানুষের সাথে মিলেমিশে তাদের সুখ দুঃখ ভাগাভাগি করে নিতে। আমরা মানুষের অতন্ত্র প্রহরী হয়ে কাজ করে যাচ্ছি। দেশকে মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, চাঁদাবাজ, ইভটিজার মুক্ত করে মানুষের মাঝে শান্তি ফিরিয়ে আনা আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য।

তিনি আরও বলেন, আমার কাছে ধনী-গরিব, রিক্সা চালক সহ সব শ্রেনি পেশার মানুষ সমান। একজন নির্যাতিত মানুষের শেষ আশ্রয়স্থল হলো পুলিশ। সেই লক্ষ্যে গোটা বছর মানুষের পাশে থাকার চেষ্ঠা করেছি। খুলনা জেলা পুলিশ সুপার এস এম শফিউল্যাহ স্যারের দিক নির্দেশনায় কয়রার সার্বিব আইন শৃংখলা ভালো রাখা সম্ভব হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত বছর আগস্টে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে তিনি কয়রা থানায় যোগদান করেন। এর আগে জনাব রবিউল হোসেন মাগুরা জেলার মোহাম্মদপুর থানায় ওসি হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ১৯৯১ সালে পুলিশ বাহিনীতে যোগদান করে ঢাকা মেট্রো, চট্টগ্রাম মেট্রো, খুলনা, মেহেরপুর সহ বিভিন্ন জেলায় পুলিশ পরিদর্শক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন । ব্যক্তি জীবনে দুই পুত্র সন্তানের জনক ওসি রবিউল হোসেনের বাড়ি যশোর জেলার শার্শা উপজেলায়।

তিনি কয়রা থানাকে জনবান্ধব থানা হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। পাশাপাশি কয়রার সার্বিক আইনশৃংখলা ভালো রাখতে সকলের সহযোগিতাও কামনা করেছেন।





Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*