স্বাস্থ্যবিধি মেনে ১৭ অক্টোবরের মধ্যে স্কুল খোলার দাবি জানিয়েছেন কিন্ডারগার্টেন শিক্ষকরা। একই সঙ্গে প্রায় ৪০ হাজার কিন্ডারগার্টেনে কর্মরত প্রায় ৮ লাখ শিক্ষক-কর্মচারীর জন্য প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা বরাদ্দ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়।
প্রাথমিক শিক্ষায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাফল্য তুলে ধরে নেতৃবৃন্দ বলেন, এই সাফল্যের ক্ষেত্রে কিন্ডারগার্টেনের অবদান প্রায় অর্ধেক। অথচ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ স্কুল বন্ধের মধ্যেও সরকারি বেতন পাচ্ছেন আর কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষকগণ একই বই পড়িয়ে এবং পিইসি পরীক্ষায় তুলনামূলক ভালো ফলাফল অর্জন করেও সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা থেকে বঞ্চিত। এই বৈষম্য একটি সফল রাষ্ট্রে চলতে পারে না। তারা বলেন, বর্তমানে দেশের অফিস-আদালত, মার্কেট, গার্মেন্টস, বাস, ট্রেন, লঞ্চ, পার্ক সর্বত্র লোক সমাগম স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এসেছে। কওমী মাদরাসা খুলে দেওয়া হয়েছে। সেখানে সংক্রমণের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। ‘ও’ লেভেল এবং ‘এ’ লেভেল পরীক্ষার অনুমতি দেয়া হলো। তাহলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কিন্ডারগার্টেন স্কুল খুলতে সমস্যা কোথায়? দেশে এখন করোনা সংক্রমণের মাত্রাও অন্য সময়ের তুলনায় অনেক সহনীয়। তাই ১৭ অক্টোবরের মধ্যে স্কুল খোলার ঘোষণা দিতে হবে। নইলে নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে আমরা ধারাবাহিকভাবে মানববন্ধন, যৌথ স্মারকলিপি প্রদান ও আমরণ অনশন কর্মসূচিতে যাব।
তারা উল্লেখ করেন, আর্থিক অনটনে পড়ে ইতোমধ্যে ৮ জন শিক্ষক হৃদরোগ, আত্মহত্যাসহ নানা কারণে মারা যান। অধিকাংশ স্কুল ভাড়া বাড়িতে অবস্থিত হওয়ায় ভাড়ার চাপে হাজারো স্কুল বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। শিক্ষকরা মানবেতর জীবন থেকে উত্তরণে কেউ কেউ পেশা পরিবর্তন করছেন। এটা রাষ্ট্রের জন্য অশনি সংকেত। তারা বলেন, রোহিঙ্গাদের সকল দায়িত্ব গ্রহণ করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মানবতার জননী আখ্যা পান। আমরা আজ ঘোষণা করছি, তিনি যদি কিন্ডারগার্টেনে কর্মরত ৮ লাখ শিক্ষক-কর্মচারীর পরিবারের সদস্যসহ প্রায় অর্ধকোটি মানুষের দায়িত্ব নেন, তবে আমরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে লাখো শিক্ষকের উপস্থিতিতে তাকে শিক্ষাক্ষেত্রে সাফল্যের কাণ্ডারী হিসেবে ‘আলোকিত বাংলাদেশের জননী’ হিসেবে আখ্যা দিতে চাই।
‘কিন্ডারগার্টেন ও সমমান স্কুল রক্ষা জাতীয় কমিটির’ ব্যানারে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
২১টি সংগঠনের অংশগ্রহণে গঠিত জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক মো. মিজানুর রহমান সরকারের উপস্থিতিতে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সদস্য সচিব জি এম কবির রানা।
Leave a Reply