সারা বিশ্বে ১৩৬ টা দেশের মানদন্ড বিবেচনায় নিয়ে উদ্যোক্তা সূচক তৈরি করা হয়েছে। সেখানে বাংলাদেশের অবস্থান ১৩৪ তম। আবার ইনোভেশনেও এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সর্বনিম্ন। তবে এ দুটির মানদন্ডে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে কার্যকর ও সময় উপযোগি প্রযুক্তি। তবে মানুষ ও সমাজকে বাদ দিয়ে কোন প্রযুক্তি নয়। প্রযুক্তি যেন বিভক্তি ও বৈষম্য তৈরি না করতে পারে। তরুণরা যেন চাকুরির পেছনে না দৌড়ায়ে উদ্যোক্ত হতে পারে সে বিষয়ে ব্যাংকগুলোকে আরো কার্যকর ভূমিকা নিতে হবে।
গতকাল রাজধানীর ঢাকা স্কুল অব ইকোনমিক্সের (ডিএসসিই) উদ্যোক্ত ক্লাবের আয়োজেন “উদ্যোক্তার উন্নয়নে প্রযুক্তিগত জ্ঞান ও বিপনন কৌশলের ভূমিকা” শীর্ষক সেমিনার এসব কথা বলেন বক্তারা। ডিএসসিইর উদ্যোক্তা অর্থনীতি কোর্সের সমন্বয়ক অধ্যাপক ড. মুহম্মদ মাহবুব আলীর সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন পল¬ী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) ও ডিএসসিইর গভর্নিং কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক হেলাল আহমদ চৌধুরী। সেমিনারে “সমতাভিত্তিক প্রবৃদ্ধি: পরিপ্রেক্ষিত বাংলাদেশ” শীর্ষক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, সমাজ ও মানুষকে বাদ দিয়ে কোন প্রযুক্তি নয়। প্রযুক্তি পরিবেশকে ধ্বংস করছে নাকি উন্নতি করছে সেগুলো নিয়ে আলোচনা হওয়া দরকার। প্রযুক্তির কারনে বিভক্তি ও বৈষম্য যেন না হয় সেদিকে নজর রাখতে হবে। কেননা এখনও বিশ্বমানের প্রযুক্তিগুলো গুটি কয়েকের হাতেই বন্দী রয়েছে।
প্রফেসর মহাম্মদ মাহবুব আলী বলেন, উদ্যোক্তাদের জন্য ব্যাংক যেমন অর্থায়ন করবে তেমনি নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য ১০-১৫ দিনের একটি প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা রাখতে পারে। বাংলাদেশে উদ্যোক্তার উন্নয়নে প্রযুক্তিগত জ্ঞানের উন্নয়ন ও যুগোপযোগী বিপনন কৌশল গ্রহণের বিকল্প নেই। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কর্মসংস্থানের চাহিদা অনুসারে শিক্ষা ব্যবস্থাপনার মান উন্নয়নে জোর দিতে হবে। পাশাপাশি প্রযুক্তির ও বিপনন কৌশলগুলোকে প্রায়গিক হতে হবে।
গতকালের সেমিনারে দুটি গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এসিআই ফরমুলেশনস লিমিটেডের পরিচালক এম. সামসুজ্জামান ও বাংলাদেশ সেন্টার ফর ফোরথ ইন্ডাষ্ট্রিয়ার রেভ্যুলেশনের সহ সভাপতি সৈয়দ তামজিদ উর রহমান। ডিএসসিইর উদ্যোক্তার উন্নয়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রেহানা পারভীন ও সারাহ তাসনীম বক্তব্য রাখেন।
এম. সামসুজ্জামান বলেন, যথাযথ বিপনন কৌশল না জানার কারনে উদ্যোক্তারা অনেক সময়ই ব্যর্থ হয়। তাই বিপনন কৌশলের পাশাপাশি মূল্য সংযোজনের কৌশলগুলো জানতে হবে। উদ্যোক্তা অর্থায়ন ব্যস্থাপনায় পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। সারা বিশ্বে মেধা ও প্রকল্প কৌশলের ওপর ভিত্তি করে ঋণ দেওয়া হয়। কিন্তু বাংলাদেশে সেটা মর্টগেজের ওপর ভিত্তি করে দেওয়া হচ্ছে। ফলে অনেক উদ্যোক্তাই বিকশিত হতে পারছে না।
অধ্যাপক হেলাল আহমদ চৌধুরী বলেন, ব্যাংকগুলো যাচ্ছেতাইভাবে সুদ হার নির্ধারণ ও পরিচালনা করছে। মুনাফা বাড়াতে গিয়ে গুনগত মানে অবনতি হচ্ছে। ফলে ব্যাংকিং খাত উদ্যোক্তা বান্দব হতে হবে। কেননা দেশে এখনও ৩৪ শতাংশ মানুষের বষয় ৩০ বছরের নিচে। এদেরকে চাকুরিতে না পাঠিয়ে উদ্যোক্তা তৈরিতে কিভাবে কাজে লাগানো যায় সে বিষয়ে ভাবতে হবে।
Leave a Reply