টাকার মহিমা লেখক (হিল্লোল তালুকদার)

টাকার মহিমা
হিল্লোল তালুকদার

টাকারে তুই বড্ড জ্বালা,
তুই কখনো সাদা কখনো কালা,
দিবানিশি খেলছিস তুই অদ্ভূত খেলা,
তোর খেলাতেই এই দুনিয়ায় সব আজবের এমন মেলা।

তুই কখনো মেঘ, কখনো বৃষ্টি,
তুইরে বড় অনাসৃষ্টি,
তোর নাইরে আবেগ নাইরে কৃষ্টি,
তবু তোর পানেতেই সবার দৃষ্টি।

তুই ক্ষনে হাসাস ক্ষনে কাঁদাস,
তুই সবার পানে বাঁকা চোখে তাকাস,
তুই আধাঁর ঘরে আলোর আভাস,
তোর নাইরে রুপ নাই গন্ধ বাতাস।

তোর নাইরে আবেগ নাই ভালবাসা,
তবু জিনিসটা তুই মস্ত খাসা,
তোর চরণে লোটায় আশা,
সকল বাধায় তুই ভরসা।

তুই থাকলে পরে সবই আছে,
না থাকলে তুই সবই মিছে,
এই দুনিয়া মিছে তোরই কাছে,
তাই সরবে বা নিরবে সবাই ছোটে তোরই পাছে।

তোর নাইরে আপন নাইরে পর,
সবাইকে বলিস আমাকে ধর,
আমি থাকলেই সবকিছু তোর,
নইলে এই দুনিয়ায় তুই যাযাবর।

টাকারে তুই সর্বনাশা,
কখনো তুই মরণ নেশা,
কখনো তুই পথের দিশা,
তাই তোকে পেতেই এত পেশা।

যখনরে তুই খুব দরকারী,
যখন তোকে খুজে ফিরি,
তখন দেখি তুই ফেরারী,
ভেবে মরি কি যে করি!!!!

তোর হরেক রুপে হরেক নাম,
তোর বছর বছর বাড়ে দাম,
সবাই তোকে কদর করে,বলেনা কেউ বুড়োভাম,
সবারই তুই বড় আপন, হোক সে যদু,মধু কিংবা রাম।

তোই খোলা চোখে কাগজের নোট,
তোর লীলাতে সবখানেতে চলছে দেখি হরির লোট,
হোক সে একক কিংবা জোট,
তোরে ছাড়া মিলেনা ভোট।

তোর কাছেতেই সব ক্ষমতা,
তোর নাইরে মায়া নাই মমতা,
মিছেরে তোর সব সাধুতা,
তোর কাছে মূল্যহীন আবেগ বা সততা।

তোর কাছেতে সবাই নত,
দুনিয়ার প্রেম ভালবাসা যত,
নিঠুর নাই কেউ তোরই মতো,
তাই তোকে সালাম…কোটি, লক্ষ,হাজার শত।

তোর কাছেতে তুচ্ছ সবাই,
তবু তোর পাছেতেই ছুটে বেড়াই,
তোকে পেয়ে মনটা জুড়াই,
তুই থাকলে কাছে শান্তিও পাই।

তুই সৃষ্টির সৃষ্টি, অনাদির আদি,
তুই না থাকলে দুঃখে কাঁদি,
এই ধরাতে তুই না থাকতি যদি,
হত না কেউ রাজকুমারী, কেউ বা আবার দাসী বাদি।

তোর দয়াতে খাই বা পড়ি,
তোর কারনে নড়িচড়ি,
তুই থাকলে সম্মানও পাই ভুড়িভুড়ি,
তুই না থাকলে এই জীবনে দিতে হয় এক মস্ত দাড়ি।

তুই-ই হাসাস, তুই-ই কাঁদাস,
তুই-ই ভাসাস, তুই-ই ডুবাস,
তুই-ই আকাশ, তুই-ই বাতাস,
তোর কারনেই দুনিয়াদারি,মিছে মায়ায় বসবাস।

তুই কিনতে পারিস বেচতেও পারিস,
তুই ভাংগতে পারিস গড়তেও পারিস,
তুই নাচতে পারিস নাচাতেও পারিস,
তুই জাগাতে পারিস,ঘুম পারাতেও পারিস।

চলছিস তুই আপন মনে,
কখনো সুদে কখনো ঋণে,
ঘুরিসরে তুই জনে জনে,
ভাব জমাস না কারো সনে।

তোর নাইরে বর্ন নাইরে ভাষা,
তবুরে তুই বাঁচার আশা,
তুই বুঝিস না প্রেম ভালবাসা,
তবু সবাই তোকে খুজে, কৃষক, শ্রমিক, মজুর, চাষা।

তুই কখনো ফুটাস মনেতে ফুল,
কখনো ফুটাস গায়েতে হুল,
বুঝিনা তোর সুর,তাল,বোল,
তোকে ঘিরেই যত গন্ডগোল।

যখনই তোকে কাছে ডাকি,
কেন দিস তুই আমায় ফাঁকি,
তবে কি তুই সত্যিই মেকী?
নাকি আমড়া কাঠের মস্ত ঢেঁকি?

কেন খেলিস লুকোচুরি?
কেন দিস না ধরা তরা করি?
জীবনে যদি তোরে না ধরি,
তবে বাঁচবো বলতো কেমন করি?

তোর সমানে নাইরে কেউ,হয়না কারো সাথে তোর তুলনা,
তুই থাকলে জ্বালা,না থাকলেও সব যন্ত্রনা,
তোকে ধরতেই সব কূট-কৌশল,ষড়যন্ত্র আর মন্ত্রনা,
তুই-ই ই বেহুস তুই-ই জটিল, তুই-ই আসল সান্তনা,।

সবাই বলে লক্ষ্মীরে তুই, বস না এসে আমার ঘরে,
খুব যতনে রাখব তরে, থাকবিরে তুই আদর ভরে,
টক,ঝাল,মিষ্টি সবই দেব,খাবিরে তুই পেটটি পুরে,
এই জীবনটা শেষ হলো,শুধু তোকে পাওয়ার তরে।

কথা নাই আর অবশিষ্ট,
টাকারে তুই সর্বশ্রেষ্ঠ,
তোকে ধরতে সবাই সচেষ্ট,
তাই, তুই দিসনারে আর কাউকে কষ্ট।





About আব্দুস সামাদ আফিন্দী নাহিদ 29 Articles
বাংলাদেশের প্রথম শিক্ষা বিষয়ক বাংলা কমিউনিটি ব্লগ সাইট "লেখাপড়া বিডি"র নিয়মিত পাঠক ও লেখক হিসেবে ২০১৮ সাল থেকে নিয়োজিত আছেন আব্দুস সামাদ আফিন্দী । তিনি সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার তরুন লেখক ও সাংবাদিক। লেখাপড়ার পাশাপাশি তিনি নিয়মিত সুনামগঞ্জ জেলার শিক্ষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য তুলে ধরছেন।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*