– শবে বরাত…
মহাগ্রন্থ আল কোরআনে সরাসরি শবে কদর উল্লেখ আছে। শবে বরাতের কথা সরাসরি উল্লেখ নেই। যেমন আল্লাহ তায়ালার বাণী –
” আমি শবে ক্বদরে কোরআন অবতীর্ণ করেছি।
সুরা ক্বদর, আয়াত ০১
..
তবে পবিত্র কোরআনে আরেকটি রজনীর কথা উল্লেখ আছে। তাকে বলা হয়েছে লাইলাতুম মুবারাকা বা বরকত, কল্যাণময়ী রাত। যেমন –
” আমি কোরআন মাজীদকে নাযিল করেছি এক বরকতময় রাতে।
সূরা দূখান, আয়াত ০৩
..
লাইলাতুম মুবারাকা বা বরকতময় রজনী কোনটি?
প্রখ্যাত মুফাসসির হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস, হযরত আবু হুরাইরা, হযরত ইকরামা সহ বহু সংখ্যাক সাহাবী ও তাবেয়ীদের মতে, লাইলাতুম মুবারাকা বা বরকতময় রজনী দ্বারা চৌদ্দ-ই শা’বান দিবাগত রাত বা শবে বারাআত কে বুঝানো হয়েছে।
তাফসীরে দুররে মুনসুর খন্ড-৭, পৃ-৪০১
..
মহানবী সাঃ বলেন, শা’বান মাসের চৌদ্দ তারিখ দিবাগত রাতে প্রথম আকাশে একজন ঘোষক ডাকতে থাকেন, কেউ ক্ষমা চাওয়ার আছ কি? চাইলেই ক্ষমা করা হবে। কেউ কিছু চাওয়ার আছ কি? তাকে দেয়া হবে। যা চাওয়া হবে তাই দেয়া হবে। শুধু জিনাকারী ও আল্লাহর সাথে শরীককারী ব্যক্তি এ সৌভাগ্য লাভ করে না।
সুনানে বায়হাকী
..
হযরত আয়েশা বলেন মহানবী সাঃ বলেছেন, চার রাতে আল্লাহ তায়ালা কল্যাণের দরজা খুলে দেন…
০১.ঈদুল ফেতরের রাত
০২.ঈদুল আযহার রাত
০৩.শবে বরাতের রাত। যে রাতে মৃতের তালিকা তৈরি হয়। রিযিক নির্ধারিত হয় এবং কারা হজ্বে যাবে তাদের লিস্ট তৈরি হয়।
০৪.আরাফার রাত
সুনানে ইবনে মাজা পৃ.১০০
..
একদা হযরত ঈসা আঃ একটি পাহাড় অতিক্রম করছিলেন। পথে একটি বড় আকারের সাদা পাথর দেখতে পান। পাথরটির আকর্ষণে হযরত ঈসা আঃ বার বার ঘুরে দেখছিলেন। পাথরটি তার কাছে বিস্ময়কর মনে হচ্ছিল।
এ সময় মহান আল্লাহ তায়ালা তার কাছে ওহী প্রেরণ করে বললেন, আপনি কি চান এরচেয়ে বিস্ময়কর কিছু আপনাকে দেখায়? ঈসা আঃ বললেন হ্যাঁ দেখান।
তখনই সাদা পাথরটি ফেটে দুভাগ হয়ে যায়।
তিনি দেখলেন এক ব্যক্তি সেখানে রয়েছেন এবং তার হাতে সবুজ রংয়ের একটি লাঠি তার পাশেই রয়েছে একটি আঙ্গুর গাছ। ঐ ব্যক্তি বললেন এটাই আমার প্রতিদিনের রিজিক।
হযরত ঈসা আঃ বললেন, কতদিন থেকে আপনি এখানে রয়েছেন? লোকটি বললেন চারশ বছর ধরে আমি এখানে আছি।
তখন হযরত ঈসা আঃ বললেন, হে আল্লাহ আমার মনে হয় আপনি আপনার এই বান্দার চেয়ে উত্তমা আর কাউকে সৃষ্টি করেননি।
তখন আল্লাহ তায়ালা বললেন, উম্মতে মুহাম্মদীর যে লোক শবে বরাতের দু রাকাত নামায আদায় করবে, এ ব্যক্তির চারশ বছরের ইবাদতের চেয়ে ও উত্তম হবে।
নুযহাতুল মাজালেস- ২য় খন্ড, পৃ. ১৫৭
..
শবে বরাত নিয়ে অনেকজন বিভ্রান্তিকর মতবাদ ছড়াচ্ছে। মনগড়া যুক্তি প্রয়োগ করছে। সম্মানিত শবে বরাতের রাতকে অসম্মান করছে। কলুষিত করছে। নিজের দায়িত্ব, কর্তব্যবোধ ও বিবেকের তাড়নায় রেফারেন্স সহকারে শবে বরাত নিয়ে লিখেছি।
.
আনিসুল ইসলাম
১১/০৫/২০১৭
Leave a Reply