প্রধান শিক্ষক বিজয় কুমার বিদায় বেলায় নিজে কাঁদলেন, সবাইকে কাঁদালেন

সফিকুল ইসলাম শিল্পী, রানীশংকৈল প্রতিনিধিঃ ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলায় ঐতিহ্যবাহী জাতীয়ভাবে শ্রেষ্ঠ রাণীশংকৈল মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক বিজয় কুমার সুদীর্ঘ ২৫ বছর ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক, ও অভিভাবকের সাথে শিক্ষকতা পেশায় থেকে অবসর নিলেন ২ জানুয়ারি সোমবার বিকালে স্কুলে ছোট একটি ব্যানার বিহীন মঞ্চে থেকে।

এ সময় অতিথিদের আসনে ছিলেন মাননীয় জাতীয় সংসদ সদস্য-অধ্যাপক ইয়াসিন আলী, ঠাকুরগাঁও-৩ ও সেলিনা জাহান লিটা সংরক্ষিত এমপি-৩০১, আব্দুল হামিদ মাস্টার, সাবেক প্রধান শিক্ষক, আ’লীগ সভাপতি সইদুল হক, ঠাকুরগাঁও প্রেস ক্লাব সভাপতি আবু তরাব মানিক, প্রভাষক প্রশান্ত কুমার, উপজেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান, ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক, অভিভাবক ও সাংবাদিক বৃন্দ।

সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বিদ্যালয়ের রুটিন তদারকি করেন বিদায়ী প্রধান শিক্ষক। বাবা কৈলু কুমার ও মা পদ রানী পালের বড় ছেলে এবং স্ত্রী ছায়া পালের স্বামী প্রধান শিক্ষক বিজয় কুমার। জানা গেছে রোজ হেটে কিংবা ভেন-রিক্সা যোগে যাতায়াতের বাহন হিসাবে এই সুদীর্ঘ সময় অতিবাহিত করেন মরণত্তোর দেহদানকারী এই মহামানব।

১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৯২ সালে যোগদানের পর সহস্রাধিক ছাত্র-ছাত্রীকে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, পাইলট, বিজ্ঞানী, কর্নেল, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক তৈরির মত কারিগর ছিলেন তিনি। এই মহান পুরুষ ২০০৯ সালে জাতীয় ভাবে শ্রেষ্ঠ মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে ও ২০১১ সালে জাতীয় ভাবে সর্বোচ্চ ছাত্র-ছাত্রী উপস্থিতি পুরষ্কার জয় করেন। জেলা শ্রেষ্ঠ শিক্ষক হিসাবে ন্যাপ (ঘঅচঊ) কর্তৃক পুরুষ্কার গ্রহণ এবং সাবেক প্রধান মন্ত্রী খালেদা জিয়ার হাত থেকে (শিক্ষায়) ১৯৯৪ সালে পুরুস্কার গ্রহণ করেছেন। তিনি জাতীয়ভাবে শ্রেষ্ঠ পুরুস্কারটি বর্তমান মাননীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকট থেকে পুরষ্কার ও সনদ গ্রহণ করেছেন নিজে উপস্থিত থেকে।

বিদ্যালয়টিতে বর্তমানে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ৯৩০ জন ও শিক্ষক ২১ জন এবং প্যারা শিক্ষক ৪ জন আছে। হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রীর কারিগর বিজয় কুমার সহজ সরল ও মহাজ্ঞানী রাণীশংকৈল বাসি বাংলাদেশ কে প্রমাণিত করেছেন তার মরণত্তোর দেহ ও চোখ দানের মাধ্যমে।

উল্লেখ্য তিনি ঘোষনা দেন ঢাকা বঙ্গবন্ধু কলেজ- হাসপাতালে দেহ দান এবং পবিত্র চোখ দুটিকে স্থানীয় সংঙ্গিত বিদ্যালয়ের একজন অন্ধ শিল্পী (নাসিরুল হক) কে মৃত্যুর পরেই দান করবেন যা স্কুলের বিদায়ী বক্তব্যে ঘোষণা দেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *