ফ্যাশন ((Fashion )হল জনপ্রিয় যে কোন শৈলী বা রীতি| এটি বিভিন্ন ক্ষেত্রের হতে পারে: বিশেষত পোশাক, জুতো, ব্যবহারিক জিনিসপত্র, সাজসজ্জা, দেহসজ্জা এবং আসবাবপত্রের ক্ষেত্রে বেশী ব্যবহৃত হয়। ফ্যাশন মৌলিক ও পরিবর্তনশীল হয়, এবং একজন ব্যক্তি অভ্যাসগতভাবে যে শৈলীতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে সেটাই তার ফ্যাশন| আর সে দিক থেকে চিন্তা করলে ডেনিম ফ্যাশন অনেক পুরানো আর ট্রেন্ডি।
বাংলাদেশের ফ্যাশনে ডেনিমের জয়গান আর এর নান্দনিক প্রসার দিন দিন বেড়েই চলছে। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে ডেনিম তথা জিন্স কাপড়ের ব্যাবহার আজ ছেলে বুড়ো সবার কাছেই জনপ্রিয়। অন্য দিকে সারা দুনিয়ায় ডেনিমের বাজার সুবিশাল। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশও হয়ে গেছে সে বাজারের বিশাল এবং গুরুত্বপূর্ণ অংশবিশেষ। ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারে এ মুহূর্তে জিন্সের বৃহত্তম রপ্তানিকারক বাংলাদেশ। যেটা আগে ছিল আমাদের পাশের দেশগুলো। চীন, ভিয়েতনাম,ভারত ,কোম্বডিয়া আজ আমাদের সাথে টেক্কা দেয়ার চেস্টা করে যাচ্ছে। লাইফস্টাইল জগতে রয়েছে হাই ফ্যাশন বলে একটি কথা। ডেনিম এবং জিন্স সে হাই ফ্যাশনের চরম উদাহরণ।
সারা দুনিয়ার ডেনিম ক্রেতাদের চাহিদা মেটানোর জন্য যে পর্যায়ের অবকাঠামো, জনবল এবং আর্থিক সামর্থ্য থাকা আবশ্যক, তার বিচারেও এক অনন্য অবস্থানে বিরাজ করছে বাংলাদেশ। আমাদের দেশের এ্যাপারেল ইন্ডাস্টিগুলো ধাপে ধাপে এগিয়ে যাচ্ছে জনপ্রিয়তার শীষে।ক্রেতার চাহিদা এগিয়ে চলছে সেই সাথে।
তবে বাংলাদেশে ডেনিমের শুরুর গল্পটা মোটেই এরকম ছিল না । একজন সেলিব্রেটির মতোই ধীরে ধীরে গড়ে উঠেছে এর জনপ্রিয়তা। জায়গা পেয়েছে ক্ল্যাসিক ফ্যাশনে। যেটা অনেকাংশে দখল করে নিয়েছে পুরুষদের বাজার। ছেলেদের জন্য ডেনিম এক অন্য রকমের চাহিদা দখল করে রেখেছে। তাই তো এই প্রডাক্টটি পুরুষদের কাছে এক আইডিয়াল পোশাক।
এই ক্ষেত্রে আমাদের দেশীয় ডিজাইনাররা ডেনিম ফ্যাশন নিয়ে নতুন করে ভাবতে শুরু করেছে। ফ্যাশন ডিজাইনাররা আকর্ষণীয়তা , ট্রেন্ড, বাজারে পূর্বাভাস এবং জলবায়ু সঙ্গে মিল রেখে পোশাক ডিজাইন করেন। তারা ফ্যাব্রিক, বুনন, কাপড়ের গুণাবলী, উপাদান, রং এবং নকশা এবং পরিবর্তন প্রবণতা সম্পর্কে জ্ঞান রাখেন।যেটা পরবরতি ধাপে যাবার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করছে। কিন্তু সেটা হতে হবে আরও গতিশিল ও প্রানবন্ত ময়।
বাংলাদেশের ফ্যাশন ইনস্টিটিউট ও উনিভারসিটি গুলো একটি গুরুতবপুন্য ভুমিকা পালন করছে। এই সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগূলোতে যদি মাঝে মধ্যে ডেনিম বিষয়ক ওয়ার্কশপ, সেমিনার, ফ্যাশন ইন্ডস্টির সাথে যোগসুত্র করে একটি সিলেবাস তৈরি করা যায় সেই দিকে লক্ষ্য রেখে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের এগিয়ে আসা উচিৎ। এতে করে ফ্যাশন ডিজাইন পড়ুয়া ছাত্র ছাত্রীরা ডেনিমের উপর একটি সঠিক ধারনা পাবে।
কারিগরী দিক থেকে পোশাকীয় পরিভাষাগুলোর সঙ্গে ডেনিম ফ্যাশন পরিভাষাটির যোগসূত্র বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে শব্দটি জমকালো বা মুল্যবান পোশাক বা ব্যবহার্য বোঝাতে অধিক ব্যবহৃত হচ্ছে| ডেনিম ফ্যাশন ,পুরুষ ও নারীদের জন্য বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই পৃথক ফ্যাশনের প্রচলন দেখা যায়, তবে কিছু ক্ষেত্রে উভয়ের উপযোগী অভিন্ন ফ্যাশনও পাওয়া যায়। আর ফ্যাশনের মজাই এখানে। এক ধারা যেতে না-যেতেই চলে আসে আরেকটি ডেনিমের ট্রেন্ড। ফ্যাশনের চলতি ধারা হিসেবে এখন বিভিন্ন ধরনের কাটিং, পেট্রান ,কাপড়ের বুনন ,মেয়েদের ধুতি সালোয়ার, চাপা ও চওড়া প্যান্ট দেখা যাচ্ছে। কখনো ঢোলা পাজামার সাথে প্রিন্ট ডেনিম,আবার ফিটেট কুর্তা খুবই জনপ্রিয়। দিন দিন এর নকশা আর প্যাটার্ন পরিবর্তন হচ্ছে। নিজের স্টাইলের সঙ্গে মিলিয়ে ক্রেতারা সেখান থেকে বেছে নিচ্ছেন মানানসই পোশাকটি। চাপা কাট বেশি দেখা যাচ্ছে ফ্যাশন হাউসগুলোর নকশায়। তবে ভিন্নতাও চোখে পড়ে বাচ্চাদের ডেনিম পোশাকে।
লেখা-মোরশেদ মহিউদ্দিন/
সিনিয়র লেকচার
ডিপারমেন্ট অফ ফ্যাশন ডিজাইন।
বিজিএম ইএ ইউনিভার্সিটি অফ ফ্যাশন টেকনোলজী।
এক্স ডেনিম এক্সপারট ও প্রোডাক্ট ডেভলপার
কলাম্বিয়া গার্মেন্টস
Leave a Reply