বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের জঙ্গিবাদ নজরদারি নিয়ে যারা খুব চিন্তিত,তাদের উদ্দেশ্যে

আমি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করেছি এবং শিক্ষকতাও করেছি। এখন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াই। কিন্তু কাজ এবং অন্যান্য সূত্রে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে আমার নিয়মিত যোগাযোগ আছে। ঠিক একই ভাবে সরকারি বিশবিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষকই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে খণ্ডকালীন শিক্ষকতা ও অন্যান্যসূত্রে যুক্ত থাকেন। তো যারা মনে করেন, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়েই (এবং অথবা মাদ্রাসাতে) জঙ্গি তৈরি হয়, তাদেরকে আমার কিছু বলার আছে।

ইসলামী (ঠিক/ভুল যাই হোক) হলে সে জঙ্গি, আর ছাত্রলীগ/ ছাত্রদল হয়ে কোপাকুপি করলে সে জঙ্গি নয় কেন? সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অপেক্ষাকৃত মেধাবী শিক্ষার্থীরা পড়ছে এরকম যদি ধরেও নিই (যদিও মেধার মানদণ্ড ব্যাপারটা খুব সমস্যাজনক) -তাদের ধারণ করার জন্য কি ধরনের রাজনীতির চর্চা হচ্ছে সেখানে? এটা কি ষাটের দশক নাকি যেখানে মেধাবী তরুণের শাণিত চোখের ঝিলিক দেখা যায় ?কোন মেধাবী শিক্ষার্থী নিতান্ত দায়ে না পড়লে রাজনীতিতে যুক্ত হচ্ছে কি? টেণ্ডারবাজি, হলের সিট, নবাগত শিক্ষার্থীদের হেনস্থা করা আর পরীক্ষার কিছু নম্বর পেয়ে প্রথম শ্রেণি নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি পাওয়ার জন্য সরকার দলীয় শিক্ষকদের পদলেহন করার যে রাজনীতি, তা কোন সুস্থ, আত্মসম্মানবোধসম্পন্ন জ্ঞানপিপাসু শিক্ষার্থীর জন্য কাম্য হতে পারে? তাই মেধাবী শিক্ষার্থীরা ছাত্র রাজনীতি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে বহু আগেই। নাকি এটা জানেন না? যে সব শিক্ষার্থী ও শিক্ষক সুস্থ রাজনীতির চর্চা করেন, তারা নিতান্তই সংখ্যালঘু।যারা মূলধারার রাজনীতির সাথে যুক্ত তারা অস্ত্রবাজি, চাঁদাবাজি করেই রাজনীতি করে এটা তো আর বলার অপেক্ষা রাখে না । এই পরিস্থিতে যে ধনী কিংবা প্রভাবশালী ঘরের সন্তান সে তো আর টেন্ডারবাজির রাজনীতিতে আগ্রহী হবে না। তার দরকার অন্য কোন অ্যাডভেঞ্চার। স্বীকার করুন আর নাই করুন, কৈশোর বা তরুণ বয়সের অনেক কিছুই অ্যাডভেঞ্চার আর কৌতুহল দিয়েই শুরু হয়, সাঙ্ঘাতিক বিদগ্ধ প্রজ্ঞা দিয়ে নয়। এই সব তরুণকে তো ছাত্রলীগ বা ছাত্রদলের রাজনীতি আকৃষ্ট করবে না।

ছাত্র রাজনীতি আর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা যেহেতু কলুষিত হয়েছেই, অতএব এর থেকে উদ্ধার পাওয়ার দু’টো রাস্তা বের করা হলো – অপেক্ষাকৃত সমর্থরা চলে যাবে দেশের বাইরে আর বাকীরা পড়বে ‘সেশনজট ও রাজনীতিমুক্ত’ প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে।এই ধারণা থেকে নর্থ-সাউথ ও প্রথম দিককার অন্যান্য প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ছিলো অপেক্ষাকৃত সুবিধাভোগী শ্রেণি থেকে আসা শিক্ষার্থীদের পড়ার জায়গা। কিন্তু লক্ষ লক্ষ জিপিএ র তোড়ে কবে সেই শ্রেণিবিভেদ ঘুচে গেছে!মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত, মফস্বল থেকে আসা হাজার হাজার শিক্ষার্থী মেসে থেকে বিভিন্ন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় আর মেডিকেল কলেজে পড়ছে।এরা এখন সংখ্যায় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের চাইতে বেশী।উচ্চবিত্তরাও এখানে মাইনরিটি।এরা মূলত চাকরি চায় কর্পোরেট জগতে, মিডিয়াতে। ব্যবসার স্বপ্ন দেখে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শতকরা ষাট জন অনার্স গ্রাজুয়েট যদি বিসিএস বা বাংলাদেশ ব্যাংকে পরীক্ষা দেয় তো, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয়জনও ঘুণাক্ষরেও সে চিন্তা করে না, মধ্যবিত্ত হলেও না। আমি কথা বলে জেনেছি, কেউ কেউ মনে করে ‘তারা পরীক্ষা দিয়ে টিকবে না’, কেউ মনে করে ‘ওখানে টাকা কম,’ আর বাকিরা মনে ওখানে অনেক ‘ধরাধরি করতে হয়’। তার চাইতে সরাসরি কর্পোরেট জগতে চলে যেতে পারলে কিছু সুরাহা হয়। সুতরাং বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী শুধু রাজনীতি না, দেশের প্রশাসন ও পলিসি প্রক্রিয়া থেকে দূরে সরতে থাকলো। এদের কমন ডায়ালগ হলো ‘আই হেইট পলিটিক্স’। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও তাদের মার্কেটিং এর অংশ হিসেবে সেইসব ছাত্রদের উপস্থাপন করে যারা উচ্চ বেতনে চাকরি করে। অবশ্য প্রাইভেট-পাবলিক সব বিশ্ববিদ্যালয়েই বিবিএ আর কম্পিউটার সায়েন্স সবচাইতে লোভনীয় এবং দামী(ভর্তির প্রতিযোগিতার কারণে) বিষয় হয়ে ওঠার মধ্য দিয়ে সমাজের সার্বিক চাওয়াটাও স্পষ্ট। কিন্তু যার বাবার অঢেল টাকা আছে সে কেন উচ্চ বেতনের চাকরির লোভে পড়বে? কিন্তু পড়বেটাই বা কি ? দর্শন বা ইতিহাস?-এই বিষয়ের কি কোন সোশ্যাল স্ট্যাটাস আছে?! –আবার সে নিজেও কি জানে জ্ঞানের আনন্দ? –যে ভয়ানক কোচিং কালচারে আর প্রাইভেট পড়ার কালচারে সে জিপিএ ফাইভ পাওয়ার চেষ্টায় সে বড় হয়েছে –তাকে কি কেউ জানার সুযোগ দিয়েছে যে –আনন্দের জন্যও, কৌতুহলের জন্যও জ্ঞান হতে পারে?

প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যে ভয়ংকর তত্ত্বটি প্রচার করতে সফল হয়েছে, তা হলো ‘শিক্ষা ও রাজনীতি হচ্ছে পরস্পর বিরোধী’। মজার ব্যাপার হলো, সাংঘাতিক অধিকার সচেতন ছাত্রলীগ আর ছাত্রদল কিন্তু কখনো এসব প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করার চেষ্টাও করেনি। অনেক নেতার যেমন এইসব বিশ্ববিদ্যালয়ে বিনিয়োগ আছে, আবার কেউ কেউ সেখান থেকে বিনা আয়াসে বখেরা পায় কিনা আমি জানি না, তবে কোন বোঝাপড়া নিশ্চয়ই আছে। বামদলগুলো ও তাহাদের আচরণ চিরকালের মতো রহস্যময়ই থাকিয়া গেলো। তাহলে বাকি রইলো কে? – যাদের গুপ্ত সংগঠন ও কার্যক্রম পরিচালনার দক্ষতা আছে তারা এই পরিস্থিতিতে সুযোগ নেবে, তাতে অবাক হবার কি আছে? নাকি তারা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে হাত গুটিয়ে বসে আছে? আমি যে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছি সেখানে শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ, কিন্তু বিভিন্ন ঘটনা ও মহড়ায় তাদের বাহিনী দেখে তো জানা গেল তারা বরাবর গোপন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছিলো। আর অমুক শিক্ষক জামাতী- এসব তো হর হামেশাই শোনা যেত। মূলধারার রাজনীতি যখন ক্রমশ দীন হয়, তখন এসব তো ঘটতেই থাকে।

একারণে আমার বক্তব্য হলো দয়া করে পাবলিক বনাম প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়, ইংলিশ মিডিয়াম বনাম বাংলা মিডিয়াম, মাদ্রাসা বনাম বাংলা মিডিয়াম, আলীয়া বনাম কওমি- এসব ফালতু বিতর্ক বন্ধ করুন। দয়া করে প্রশ্ন করুন একই দেশে এতগুলো শিক্ষা ব্যবস্থা কেন? কেন দরিদ্র অনাথ শিশুটি কওমি মাদ্রাসায় অন্যের দানের উপর নির্ভর করে কুন্ঠিত মনে বড় হবে?আর যদি এই শিক্ষা জিইয়েই রাখা হয়, তবে তাকে কেন মূলধারায় আসার পথ অবরুদ্ধ করে রাখা হবে? কেন ইংলিশ মিডিয়ামের ভাল স্কুল এমন ফি হাঁকাবে যা উচ্চবিত্তের পক্ষেই সম্ভব হবে, আর মধ্যবিত্ত খেয়ে না খেয়ে সে ফি জুগিয়ে সন্তানের মধ্য দিয়ে শ্রেণি উত্তরণের চেষ্টা করবে? প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার ধরন আর পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের তফাত কি শুধু এসি রুমেই নাকি মানের কোন বিরাট হেরফের আছে ? থাকলে চোখে ঠুলি এঁটে আছে কারা? কেন অন্যের বাড়িতে কাজ করে রোজগার করা নারীটির বস্তির স্কুলে পড়া বাচ্চার জন্য প্রাইভেট টিউশনির খরচ জোগাতে হয়? এইরকম বহুধারায় বিভক্ত সমাজে আপনি কেন আশা করবেন একজন কিশোর বা তরুণ ঐক্য আর সংহতির বোধ ধারণ করবে? ক্রিকেট দিয়ে সেই বোধ জাগ্রত হয়, কিন্তু বাস্তবায়িত হয় না, কারণ সেতো জীবনে ক্রিকেট খেলার মাঠ পায় না, তাই জানে না ঘামে ভেজা জার্সি বদল করার আনন্দ! যে দেশে পাঁচ বছর অন্তর ইতিহাস বই এর কন্টেন্ট বদলে যায়, সেই দেশ তার কাছে এক জটিল জিগস পাজল-তা সে মিলাতেই পারে না।এইরকম অবয়বহীন ইমেজ নিয়ে কর্পোরেট শপথ আর বৃহত্তম পতাকা তৈরির গৌরব তরুণের তীব্র আবেগকে সাধনায় উত্তরণ ঘটাবে না, দেশপ্রেমের নামে ফ্যাসিজমকেই উস্কে দেবে।

ধর্ম ও সেকুলারিজম নিয়েও বোগাস বু বন্ধ করা দরকার। সারাদিন ভারতীয় সিরিয়ালে পুজা দেখে ভারতীয়দের বা হিন্দুদের কালচার পরিত্যাগ করতে বলা খুব সহজ, কিন্তু একজন শিশুর মনস্তত্ত্ব জটিল হতে থাকে। সে না বোঝে ইসলাম, না বোঝে আমাদের স্থানীয় হিন্দু সমাজের সাথে সংস্কৃতির যোগসূত্র। সেকুলার কর্পোরেটবাণীর অসারত্বগুলোও একটু বোঝা দরকার— ‘উৎসব সবার’ বলে দুর্গা পূজা মণ্ডপে গিয়ে নাচানাচি আর মন্দির ভাঙ্গা এবং হিন্দুদের ওপর আক্রমণ করার সময় ‘ধর্ম যার যার’ বলে দায় এড়ানো যায় না।

যদি সন্তানকে ধার্মিক বানাতে চান, তাহলে শুধু ‘আল্লাহ হাফেজ’ আর ‘আলহামদুল্লিলাহ, ভালো আছি’, নয়, দয়া করে শেখান যে,চার খলিফাই ছিলেন মনোনীত বা নির্বাচিত। মদিনা সনদে ইহুদী গোত্রকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিলো।সংখ্যাগরিষ্ঠের ধর্মগুলোর মধ্যে ইসলামে রাজনীতির বিশদ আলোচনা আছে, ইসলামেও গণতন্ত্রের রূপরেখা আছে। সৌদি রাজতন্ত্র মানেই ইসলাম নয়, পদদলিত সকল হাজীও ইসলামী উম্মাহর অংশ। সালাফিজম বা ওহাবিজম ইসলামের একমাত্র রূপ নয়।
যদি না জানেন তাহলে একটু স্কুলের পাঠ্যবইগুলো খুলে দেখুন কি শেখানো হচ্ছে! ফেসবুকে ইসলামী বলে যেসব পোস্ট রাসুল বা সাহাবীদের নাম দিয়ে চালানো হয় সেগুলো আরো দশজনকে শেয়ার করে সৌভাগ্যের রাস্তা শর্টকাট না করে যাচাই করুন। ডঃ অমুক বা অমুক আলেম না, নিজেই পড়ুন। ইসলাম ধর্মে আল্লাহ আর মানুষের মধ্যখানে আর কাউকে লাগার কথা নয়।

আরো মনে রাখা দরকার যে সরকার আর জনগণ এককথা নয়। মুক্তিযুদ্ধের সময় ইউএসএ সরকার মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিলো, কিন্তু আমেরিকার জনগণ পাশে দাঁড়িয়েছিলো। আমেরিকা রাষ্ট্র সম্পর্কে বিষোদগার করার সময় জোয়ান বায়েজ আর জর্জ হ্যারিসনের কথাও বলুন। যদি পৃথিবীতে মুসলিমদের প্রতি অবিচার বোঝাতে হয়, তাহলে শুধু ফিলিস্তিন আর সিরিয়ার কথা নয়, নাইজেরিয়ার কালো মুসলিমদের কথাও বলতে হবে। আপনি গাজার জন্য মিছিল করবেন, রোহিংগারা কালো আর পশ্চিমা মুসলিম নয় বলে তাদের জন্য একটি কথাও না বললে কি করে মুসলিম উম্মাহকে ধারণ করবেন? ইরাকের কথা বললে জানাতে হবে যে যে বহুসংখ্যক কুর্দিকে সাদ্দাম নিধন করেছিলেন তারাও মুসলিম ছিলো। দয়া করে এও বলুন -হামাস আর ফিলিস্তিনবাসী এক নয়।গাজায় ইস্রায়েলী হামলার পরপর অনেক অমুসলিমরা প্রতিবাদ করেছে, যাদের মধ্যে অনেক ইহুদীও ছিলেন-তখন আরব লীগ নীরব ছিলো। আজো আছে। মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতির সাথে তেলের রাজনীতিকে একটু সম্পর্কিত করলে হয়তো বোঝা যাবে, শুধু ধর্ম দিয়ে নয়। হালাল খাবার জন্য ভ্যাকেশনে মালয়েশিয়া গিয়ে শুধু তাদের হিজাব দিয়ে ‘মডার্ণ মুসলিম’ দেখালে তো হবেনা –বলতে হবে প্রতিটি দেশের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য তাদের নিজ নিজ যোগ্যতায় অর্জিত।

আর দয়া করে মিষ্টি মিষ্টি সুশীল বাণী বন্ধ করুন- ‘সবাইকে ভালবাসতে হয়’ গোছের। শেখান যে পৃথিবীতে নিয়ত অবিচার, বৈষম্য আর সহিংসতার মুল শিকার হলো শিশু, নারী আর সংখ্যালঘুরা। বাচ্চার হাত দিয়ে ভিক্ষা দিয়ে দোয়া করতে বললেই তো আর বৈষম্য ঘুচে যায় না।‘ধনী-গরীব আল্লাহর সৃষ্টি’ এই জাতীয় মধ্যযুগীয় ক্যাথলিক বাণী বন্ধ করে বোঝান যে, কিছু মানুষের লোভ আর শোষণের ফলেই কোটি কোটি মানুষ অনাহারে দিন কাটাচ্ছে। যদি তর্কের জন্য ধরেও নেই যে ফারাজের বন্ধুদের জন্য ত্যাগের ঘটনাটি সত্যি, তাহলেও দেখা যাচ্ছে যে নিরীহ ভালমানুষী দিয়ে সে রক্ষা করতে পারেনি নিজেকে বা বন্ধুদেরকেও। আবার যারা জঙ্গি তারাও কিন্তু মরার জন্যই গিয়েছিলো। সুতরাং ব্যক্তিগত ভালমানুষী কিংবা জনবিমুখ রাজনৈতিক আদর্শ কাউকেই রক্ষা করবে না। মৃত্যুই এর পরিণতি। আমার ক্লাসে দেখেছি, ইংলিশ মিডিয়ামের ছেলেমেয়েরা বাংলা মিডিয়াম থেকে আসা শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেনা, মাদ্রাসা ছাত্ররা পরিচয় গোপন করে। দাঁড়ি আর টুপি নিয়ে সুশীল সমাজের বিদ্রূপ তো চিরায়ত, তা গত কয়েক দশকে নাটক-সিনেমার কমিক চরিত্রগুলো দেখলেই বোঝা যাবে। আদিবাসীদের চেহারা ও পোশাক, গার্মেন্টসের মেয়ে, হিরো আলম আর হুজুর নিয়ে যতখুশী বিদ্রূপ চলবে, আর মানবতাবাদী হয়ে ওঠা আর সব মানুষকে সমান ভাবার মত ভয়ানক আশাই বা কেন? মাদ্রাসা শিক্ষা বিপজ্জনক হলে, রূপপুর কিংবা রামপাল বিপজ্জনক নয় কেন? যত বিভক্তি টানবেন তত আপনি কাদের সহযোগিতার ক্ষেত্র প্রস্তুত করছেন? যারা এই বিভাজনগুলো জিইয়ে রেখে বাংলাদেশের মানুষ ও প্রকৃতিকে ধ্বংস করছে, তাদের? ভালো। তাতে হত্যাকারী বা নিহত –কোন একপক্ষের সংখ্যা নিশ্চয় বাড়বে।

লিখেছেনঃ অবন্তী হারুন

ফ্যাকাল্টি,ইউনিভার্সিটি অফ লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ

ফেসবুক থেকে সংগৃহীত…





About লেখাপড়া বিডি ডেস্ক 1519 Articles
লেখাপড়া বিডি বাংলাদেশের প্রথম শিক্ষা বিষয়ক বাংলা কমিউনিটি ব্লগ।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*