সদ্য ঘোষিত এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল-২০১৬ এ ফেল করার খবর শুনে আত্মহত্যা করেছিল বরিশাল উদয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সর্বোজিত ঘোষ (১৭)। কিন্তু ১৪ মে ২০১৬ তারিখ প্রকাশিত সংশোধিত ফলাফলে দেখা যায় সে জিপিএ ৪.৬৭ পেয়েছে।
এর আগে ১১ মে (বুধবার) এসএসসি পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ায় সর্বোজিত ঘোষ আত্মহত্যা করে। সে বরিশাল নগরের কাটপট্রি এলাকার বাসিন্দা ও স্বর্ণ ব্যবসায়ী শেখর ঘোষের বড় ছেলে।
ফলাফল খারাপ করার খবর শুনে ওই দিন বাড়ি সংলগ্ন প্যারারা রোডের একটি নির্মাণাধীন বহুতল ভবনের ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে সে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। বেলা আড়াইটায় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
মৃতের বাবা শেখর ঘোষ জানায়, পরীক্ষার রেজাল্ট (ধর্মে ফেল করায়) খারাপ হওয়ার খবর জানতে পেরে সে এই আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে কিছুক্ষণ পরেই চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
স্বজনদের আক্ষেপ বোর্ড যদি এ ভুল না করতো তাহলে হয়তো হৃদয়ের জীবনে এ পরিণতি হতো না।
সন্তানের মৃত্যুর পর থেকে পিতা শেখর ঘোষ শয্যাশায়ী। তিনি কারও সঙ্গে দেখা করছেন না। স্বজনরা জানান, বাবা শেখর ঘোষ ও মা শিলা ঘোষের আহাজারিতে গোটা কাঠপট্টি সড়ক এখন শোকে মুহ্যমান। দুই ভাইয়ের মধ্যে সর্বজিৎ ছিল বড়। ছোট ভাই শুভজিৎ সপ্তম শ্রেণির ছাত্র।
উল্লেখ্য, প্রধান দুই পরীক্ষকের ভুলের কারণে হিন্দু ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা বিষয়ে ‘খ’ ও ‘গ’ সেটের নৈমিত্তিক উত্তরপত্রের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলেন। ফলে বরিশাল বোর্ডের এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে বিপর্যয় ঘটে। পরে বিষয়টি বোর্ড কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিগোচর হলে তা সংশোধন করে ১৪ মে বিকেলে পুনরায় নিরীক্ষা শেষে সংশোধিত ফলাফল ঘোষণা করা হয়। এতে বদলে গেছে ওই বিষয়ে মোট এক হাজার ৯৯৪ শিক্ষার্থীর ফলাফল।
যার মধ্যে হিন্দু ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা বিষয়ে ফেল থেকে পাস করেছে এক হাজার ১৪১ জন, ফেল থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৭৯ জন। এর মাধ্যমে মোট জিপিএ-৫ বেড়েছে ১৫টি।
পরীক্ষার ফলাফল পরিবর্তনের জন্য মোট আবেদন পড়েছিল আট হাজার ৮০৯টি। যার মধ্যে সংশোধিত ফলাফলে পরিবর্তন ঘটেছে এক হাজার ৯৯৪টির।
এদিকে, এ ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে নিয়মানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বোর্ড চেয়ারম্যান প্রফেসর মু. জিয়াউল হক।
Leave a Reply