০৮-৪-২০১৬ তারিখ শুক্রবার বিকেল ৪ টায় খুলনা সরকারি মহিলা কলেজ অডিটরিয়ামে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত খুলনা বিভাগের সকল কলেজ অধ্যক্ষদের সঙ্গে ‘জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালন ব্যবস্থা ও শিক্ষার মানোন্নয়ন’ বিষয়ে এক মতবিনিময় সভা উপাচার্য প্রফেসর ড. হারুন-অর-রশিদ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়।
সভাপতির ভাষণে উপাচার্য বলেন, “গত ৩ বছর ধরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার ও প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে নতুন আঙ্গিকে ঢেলে সাজাতে আমরা কাজ করে আসছি। বর্তমানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় দেশের ৩৮টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে প্রায় শতভাগ আইটি নির্ভর একমাত্র উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বিশ্ববিদ্যালয়ের সমূদয় কর্মকা- এখন অন-লাইনে পরিচালিত হচ্ছে। ৬টি আঞ্চলিক কেন্দ্রকে ক্রিয়াশীল করা হয়েছে। তড়িৎ সেবাদানের লক্ষ্যে ওয়ান-স্টপ সার্ভিস সেন্টার ও কলসেন্টার-এর ব্যবস্থা করা হয়েছে। নিজ জায়গায় বসেই সম্মানিত শিক্ষকবৃন্দ তাদের একাউন্টে পরীক্ষার সম্মানি পাচ্ছেন। বিভিন্ন প্রয়োজনে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের এখন আর স্বশরীরে পূর্বের ন্যায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের গাজীপুর ক্যাম্পাসে আসতে হচ্ছে না। আর দীর্ঘদিনের পুঞ্জিভূত সেশনজটকে এক নম্বর চ্যালেঞ্জ হিসেবে বিবেচিত করে এ থেকে শিক্ষার্থীদের পরিত্রান দেয়ার লক্ষ্যে গ্রহণ করা হয়েছে ‘ক্রাশ প্রোগ্রাম’ নামে বিশেষ পদক্ষেপ। ফলে একাধিক ব্যাচের শিক্ষার্থীদের সেশনজট থেকে ইতোমধ্যে মুক্ত করা সম্ভব হয়েছে। এ প্রোগ্রাম অনুযায়ী ২০১৮ সালের মধ্যভাগ থেকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো পর্যায়ে আর সেশনজট থাকবে না। ঐ সময়ের মধ্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় হবে সম্পূর্ণ সেশনজটমুক্ত। সেশনজটের পর এখন আমাদের সামনে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হচ্ছে কলেজ শিক্ষার মানোন্নয়ন। তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার, অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি, মানসম্পন্ন পাঠ্যপুস্তকের ব্যবস্থা, ল্যাব-এর সুযোগ সৃষ্টি, পরীক্ষা হল নির্মাণ, শিক্ষকদের অধিকতর প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, নিবিড় মনিটরিং ইত্যাদির মাধ্যমে সারা দেশের কলেজ শিক্ষার মানোন্নয়নে আমাদের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা গ্রহণ করতে হবে। তথ্য-প্রযুক্তি জ্ঞানে সমৃদ্ধ মানসম্পন্ন গ্র্যাজুয়েটস ব্যতীত বিশ্বায়নের এই যুগে কোনো জাতির পক্ষে উন্নয়ন ও প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা সম্ভব নয়। এসব দিক বিবেচনা করে, বিশ্ব ব্যাংক ও বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে ১৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের ‘কলেজ এডুকেশন ডেভলোপমেন্ট প্রজেক্ট’ গ্রহণ করা হয়েছে। আশা করা যায়, কয়েক মাসের মধ্যে এর কাজ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে। শিক্ষার মানোন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে সমাজ চাহিদা, জাতীয় উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানের সম্ভাবনার দিক বিবেচনায় রেখে আমাদের নতুন নতুন বিষয়ে বিভাগ খোলা বা শিক্ষাদানের ব্যবস্থা থাকতে হবে।”
সভায় বিভিন্ন কলেজের প্রায় ৩০০ অধ্যক্ষ অংশগ্রহণ করেন। এঁদের মধ্যে প্রফেসর অধ্যক্ষ আবদুল আলিম, অধ্যক্ষ শামিম মৃধা, অধ্যক্ষ আবদুর রহমান, অধ্যক্ষ এস.এম অহিদুজ্জামান, অধ্যক্ষ শাজাহান মিয়া, অধ্যক্ষ এ কে এম জাফরুল্লাহ, অধ্যক্ষ মীর্জা নুরুজ্জামান, অধ্যক্ষ আমানুল হক, অধ্যক্ষ গাজী নুজরুল ইসলাম, অধ্যক্ষ আজিজুর রহমান, অধ্যক্ষ সফিকুল ইসলাম, অধ্যক্ষ মিহির কুমার সাহা সহ ২৫ জন সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বক্তব্য রাখেন।
সভার শুরুতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার শাখা প্রধান জনাব মো. মুমিনুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালনের ক্ষেত্রে সফ্টওয়ার তৈরিসহ এ পর্যন্ত গৃহীত উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরের মাধ্যমে তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে উপাচার্য ছাড়াও, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ নোমান উর রশীদ, আঞ্চলিক পরিচালক জনাব আ স ম আবদুল হক পরিচালক উপস্থিত ছিলেন।
Leave a Reply