বিপদ কাওকে বলে কয়ে আসে না। তবে এমন কিছু ভয়ংকর জায়গা রয়েছে যেগুলো সম্পর্কে আগে থেকেই বলা যাবে বিপদের কথা। জানুন তেমন কয়েকটি জায়গা সম্পর্কে।
আমরা অনেকেই সুযোগ পেলেই চেষ্টা করি ভূতের গল্প পড়তে কিংবা শুনতে। কিন্তু বাস্তবে ভুতের বাড়ি বা বিপদজনক স্থান থাকতে পারে তা কি কখনও চিন্তা করেছি? আজ এমন কয়েকটি স্থান সম্পর্কে আলোচনা করা হবে। যেগুলো প্রকৃতপক্ষে ভয়ঙ্কর ভূতুড়ে স্থান হিসেবে পরিচিতি।
স্ক্রিমিং টানেল
স্ক্রিমিং টানেল যাকে বলা হয় চিৎকার টানেল। নায়াগ্রা জলপ্রপাতের পাশেই অবস্থিত এই স্ক্রিমিং টানেলটি। এখানে তারাই যেতে পারেন যারা খুব সাহসী হৃদয়ের অধিকারী। যারা ভয়-ডরহীনভাবে প্রেতাত্মাদের সন্ধান করতে পারেন। নায়াগ্রা জলপ্রপাত হতে নিউইয়র্কের টরেন্টো পর্যন্ত যে রেললাইন চলে গেছে সেটার পাশে এর অবস্থান। এই টানেলের দক্ষিণ প্রবেশপ্রান্তের নিকটে একটি বিখ্যাত ফার্মহাউস ছিল। কিন্তু এক রাতে ফার্মহাউসে আগুন লেগে সব পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
সেসময় ছোট্ট এক মেয়ে আগুনের মধ্যে বাঁচার জন্য চিৎকার করতে থাকে। এক সময় বুনো দৌড় দিয়ে মেয়েটি সেখান হতে বেরিয়ে আসে। দৌঁড়ে টানেলের মধ্যে প্রবেশ করে যাতে করে গায়ের আগুন নেভানোর জন্য কারো কাছ হতে সাহায্য পাওয়া যায়। তবে তার আগেই সে পুরোপুরি অগ্নিদগ্ধ হয়ে লুটিয়ে পড়ে। তথন থেকেই এই টানেলের মধ্যে যখনই কেও ম্যাচের কাঠি জ্বালায়, সঙ্গে সঙ্গে চিৎকার ভেসে আসে আর সেই সঙ্গে বেরিয়ে আসে একটি প্রেতাত্মা। যে আগুন জ্বালায় তাকে প্রেতাত্মা আক্রমণ করে এবং মেরে ফেলে। অবাক করার ব্যাপার হলো, ফার্মহাউসে কীভাবে আগুন লাগলো তা আজওও কেও জানে না।
হাইগেট সিমেস্ট্রি
সিমেস্ট্রির অবস্থান হলো উত্তর লন্ডনের হাইগেটে। সন্ধ্যা নেমে এলেই এখানে পূর্ণমাত্রায় ভয়ানক ভূতুড়ে পরিবেশ তৈরি হয়। বলা হয়ে থাকে- যারা প্রেতাত্মা শিকারি তাদের জন্য এটি আদর্শ স্থান। এখানে রয়েছে মস্তকবিহীন মূর্তি, জরাজীর্ণ এবং ক্যাচক্যাচে শব্দময় পথ, বিভিন্ন ফাটল দিয়ে অযাচিত এবং অনাহুত ঘাস আর লতাপাতার উঁকি-ঝুকি, আবার সেগুলোর বাতাসে দোল খাওয়া, প্যাঁচার অস্বাভাবিক ডাকাডাকি- সব মিলিয়ে জায়গাটি এক ভয়ঙ্কর স্থান। এমনই স্থান হলো এটি। আর তাই লন্ডনের ভূতুড়ে এলাকা হিসেবে হাইগেট সিমেস্ট্রি অবস্থান করছে শীর্ষস্থানে।
ভাংগার্ত কেল্লা
ভাংগার্ত কেল্লাটি ভারতের রাজস্থানে অবস্থিত। জনশ্রুতি রয়েছে যে, একজন কালা যাদুকর নাকি এই কেল্লায় বসবাসরত সকলকে অভিসম্পাত করেছিল যে, তাদের সকলের অপমৃত্যু ঘটবে। শুধু তাই নয়, তাদের আত্মা এই কেল্লা দখল করে রাখবে। কোনো একটা সময় সত্যিই সবাই অস্বাভাবিকভাবে মৃত্যুবরণ করে। এরপর হতে অনেকেই ওই স্থানে গেলে অস্বাভাবিক অনেক কিছু লক্ষ্য করেন।
এই ভাংগার্ত কেল্লার দেওয়ালে কান পাতলে নাকি ভেতরে গৃহস্থালির বাসন-কোসনের শব্দ শোনা যায়। এরচেয়েও অবাক করার বিষয় হলো, এখানে কোনো ভবনের ছাদ থাকে না। কেও যদি ছাদ দেওয়ার চেষ্টা করেন তাহলে সেটা আপনা আপনি ধ্বসে পড়ে। এটিই এই স্থানটিকে আরও বেশি ভূতুড়ে ও ভয়ংকর করেছে। মানুষ এখানে যেতে তাই ভয় পায়।
চাঙ্গি বিচ
সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি বিচ হলো ভূতুড়ে স্থানগুলোর মধ্যে অন্যতম। অনেকেই বিশ্বাস করেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এখানে জাপানের সৈন্যরা চীনের সৈন্যদের নির্মমভাবে হত্যা করতো। জাপানবিরোধী কাজে লিপ্ত রয়েছে- এমন সন্দেহে এই চাঙ্গি বিচে হাজার হাজার চীনা সৈনিককে নির্মমভাবে নির্যাতন করে মারা হতো। নির্দোষ চীনা সৈনিকদের মৃত্যুর নীরব সাক্ষী হিসেবে এখনও এই বিচ রয়ে গেছে।
তখন থেকে এখানে চিৎকার এবং কান্নার শব্দ শোনা যায়। আবার কখনওবা রাতে গভীর গর্ত খুঁজে পাওয়া যায়। যেগুলো সৈনিকদের সমাহিত করার জন্য ব্যবহৃত হয়েছিল। সবচেয়ে ভয়ঙ্কর বিষয় হলো, এখানে ঘুরতে আসা অনেকেই রাতের বেলা বিচে মস্তকবিহীন চীনা সৈনিকদের মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখেছেন বলে শোনা যায়।
আজকের মত বিদায়। আবার দেখা হবে।
Leave a Reply