“দৈনিক
অর্থনীতি প্রতিদিনে” প্রকাশিত
প্রতিবেদনের অংশ-বিশেষ।
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল
ইউনিভার্সিটি ২০০২-এর ২৪
জানুয়ারি যাত্রা শুরুর পর থেকে আর পেছন
ফিরে তাকায়নি। এ বিশ্ববিদ্যালয়টির
লক্ষ্য হলো দেশেই আন্তর্জাতিক মানের
শিক্ষা দেওয়া। যাত্রা শুরুর সময়
শিক্ষার্থী ছিলেন মাত্র ৬৮ জন। ১২ বছর
পর বর্তমানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৫
হাজার ছাড়িয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের
চেয়ারম্যান মো. সবুর খানের সম্পূর্ণ নিজ
চেষ্টায় গড়ে ওঠা এ বিশ্ববিদ্যালয় এখন
বাংলাদেশের সেরা ১০ বিশ্ববিদ্যালয়ের
একটি। রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকায়
মিরপুর রোডের শুক্রাবাদে মাত্র
একটি ভবন নিয়ে যাত্রা শুরু
করে বিশ্ববিদ্যালয়টি। বিশ্ববিদ্যালয়
মঞ্জুরি কমিশন কর্তৃক অনুমোদিত এ
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠা
নটি বর্তমানে চারটি নিজস্ব
ক্যাম্পাসে মোট ছয়টি ভবন ব্যবহার
করে শিক্ষাদান করে আসছে।
পাঁচটি অনুষদে ২০টি বিষয়ে স্নাতক ও
স্নাতকোত্তর শিক্ষা চালু আছে।
অনুষদগুলো হলো-বিজ্ঞান ও
তথ্যপ্রযুক্তি অনুষদ, বাণিজ্য ও
অর্থনীতি অনুষদ, মানবিক ও সামাজিক
বিজ্ঞান অনুষদ, প্রকৌশল অনুষদ ও অ্যালাইড
স্বাস্থ্যবিজ্ঞান অনুষদ।। বিশ্ববিদ্যালয়ের
উপাচার্যের দায়িত্বে রয়েছেন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার
সায়েন্স বিভাগের
প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও রংপুর বেগম
রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের
প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য প্রফেসর ড. এম লুৎফর
রহমান।
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল
ইউনিভার্সিটি খুব অল্প সময়েই লাভ
করেছে দেশের তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক
ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা।
স্বমহিমায় উদ্ভাসিত হয়ে মানসম্মত ও
গুণগত শিক্ষার স্বীকৃতিস্বরূপ ড্যাফোডিল
ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অর্জন
করে নিয়েছে ওয়ার্ল্ড
কোয়ালিটি কমিটমেন্ট অ্যাওয়ার্ড,
গ্লোবাল এমিটি অ্যাওয়ার্ড ও এশিয়ার
শ্রেষ্ঠ বিজনেস স্কুল অ্যাওয়ার্ড।
গত বছর স্পেনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান
ওয়েবো মেট্রিকস কর্তৃক ওয়ার্ল্ড
ইউনিভার্সিটি র্যাংকিংয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টি
বাংলাদেশের সব সরকারি ও
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে তৃতীয়
এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের
মধ্যে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে। কম সময়েই
বিশ্ববিদ্যালয়টি আন্তর্জাতিক
শিক্ষার্থীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম
হয়েছে। ফলে বর্তমানে আমেরিকা, তুরস্ক,
নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, ইন্দোনেশিয়া,
নেপাল ও উত্তর কোরিয়ার দেড় শতাধিক
শিক্ষার্থী বিভিন্ন
বিষয়ে পড়াশোনা করছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ক্যাম্পাস মিরপুর
রোডের প্রধান সড়কের পাশে হওয়ায়
শিক্ষার্থীরা নির্বিঘ্নে যোগাযোগ
করতে পারেন। অবস্থানগত
কারণে শিক্ষার্থীরা ধানমন্ডি লেক,
সংসদ ভবন ও কলাবাগান মাঠে অবসর সময়
কাটানো ও খেলাধুলার সুযোগ পান।
আশুলিয়া মডেল টাউনে প্রায় ৪৫ একর
জায়গার ওপর বিশ্ববিদ্যালয়টির দৃষ্টিনন্দন
স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণাধীন অবস্থায়
রয়েছে। সেখানে ইতোমধ্যে বেশ
কয়েকটি বিষয়ে পাঠদানও শুরু হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ২০১৮
সালের মধ্যে আশুলিয়া মডেল
টাউনে দেশের সবচেয়ে বড় ও উন্নতমানের
স্থায়ী ক্যাম্পাসে পরিণত করা হবে,
যেখানে বিশ্বের সব দেশ থেকেই
পড়াশোনা করতে আসবে। আর
এটি হবে দেশের একমাত্র ফাইভ স্টার
বিশ্ববিদ্যালয়। থাকবে প্রত্যেক অনুষদের
জন্য পৃথক পৃথক ভবন, শিক্ষকদের জন্য পৃথক
আবাসনব্যবস্থা, সুইমিংপুল, ছয় একরের
বিশাল মাঠ, সব ধরনের খেলাধুলার ব্যবস্থা,
পার্ক, পুরো ক্যাম্পাসে উচ্চগতির ওয়াইফাই
ইন্টারনেট সুবিধাসহ অনেক কিছু।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক
শিক্ষা উপকরণের
পাশাপাশি রয়েছে সাড়ে চার শতাধিক
পূর্ণকালীন ও দেড় শতাধিক খ-কালীন দক্ষ
ও অভিজ্ঞ শিক্ষকম-লী।
ভর্তি প্রক্রিয়া থেকে শুরু
করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কর্মকা-ই
সফটওয়্যার ও কম্পিউটারাইজেশনের
আওতাভুক্ত।
যুগোপযোগী তথ্যপ্রযুক্তি শিক্ষায়
প্রশিক্ষিত করে তোলার
লক্ষ্যে এখানে প্রত্যেক
শিক্ষার্থীকে বিনামূল্যে ল্যাপটপ
দেওয়া হয়। প্রতিটি ক্যাম্পাসেই
রয়েছে ওয়াইফাই ইন্টারনেট সুবিধা।
ফলে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে বসেই
নিজস্ব ল্যাপটপ ব্যবহার করে ইন্টারনেট
ব্রাউজ ও শিক্ষাসহ বিনোদনের সব কাজ
করতে পারেন।
যুগোপযোগী বাস্তবভিত্তিক ও
কর্মমুখী শিক্ষা ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়টি
ব্যাপক ভূমিকা পালন করছে। চাকরির
বাজারের প্রতি লক্ষ
রেখে বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রথম ও একমাত্র
বিষয় মাল্টিমিডিয়া টেকনোলজি ও
ক্রিয়েটিভ আর্টস এবং রিয়েল এস্টেট
বিষয়ে চার বছর মেয়াদি অনার্স কোর্স চালু
করেছে। বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি অনুষদের
অধীনে রয়েছে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড
ইঞ্জিনিয়ারিং, সফটওয়্যার
ইঞ্জিনিয়ারিং,
মাল্টিমিডিয়া টেকনোলজি অ্যান্ড
ক্রিয়েটিভ আর্টস এবং পরিবেশ বিজ্ঞান
ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা। এ অনুষদের ডিনের
দায়িত্বে রয়েছেন চট্টগ্রাম
বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক রেজিস্ট্রার
প্রফেসর ড. এস এম মাহবুব-উল-হক মজুমদার।
প্রকৌশল অনুষদে রয়েছে ইলেকট্রনিকস
অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন
ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড
ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং,
টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং, আর্কিটেক্ট
ডিপার্টমেন্ট ও সিভিল
ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্ট
(প্রস্তাবিত)। এ অনুষদের
দায়িত্বে রয়েছেন দেশের অন্যতম
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ প্রফেসর এম সামছুল
আলম। অ্যালাইড স্বাস্থ্যবিজ্ঞান
অনুষদে রয়েছে ফার্মেসি, নিউট্রিশন
অ্যান্ড ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং ও পাবলিক
হেলথ ডিপার্টমেন্ট। এ অনুষদের প্রস্তাবিত
বিষয়গুলো হচ্ছে লাইফ সায়েন্স, জেনেটিক
অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি ও মেডিক্যাল
আলট্রা সাউন্ড। এ অনুষদের ডিনের
দায়িত্বে রয়েছেন অধ্যাপক ডঃ আহমদ
ইসমাইল মোস্তফা। বাণিজ্য ও
অর্থনীতি অনুষদে রয়েছে বিবিএ, রিয়েল
এস্টেট ও এমবিএ প্রোগ্রাম। এ অনুষদের
ডিনের দায়িত্বে রয়েছেন অধ্যাপক
রফিকুল ইসলাম। মানবিক ও সামাজিক
বিজ্ঞান অনুষদের অধীনে রয়েছে এলএলবি,
ইংরেজি এবং সাংবাদিকতা ও
গণযোগাযোগ বিভাগ। এ অনুষদের ডিনের
দায়িত্বে রয়েছেন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও
সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক অভিজ্ঞ
শিক্ষক প্রফেসর ড. গোলাম রহমান।
বিশেষজ্ঞ শিক্ষকদের তত্ত্বাবধানে বিশ্ব
মানের শিক্ষা ও সুবিধাদির
পাশাপাশি সহপাঠ কার্যক্রম ও
শিক্ষার্থীদের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক
যুগোপযোগী করে গড়ে তুলতে এবং ইন্টার্ন
ও চাকরি দেওয়ার
ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যারিয়ার
ডেভেলপমেন্ট সেন্টার (সিডিসি)
নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আর
শিক্ষার্থীদের শিক্ষাবিষয়ক সামগ্রিক
সহযোগিতার জন্য সার্বিকভাবে কাজ
করে চলেছে ডিরেক্টর অব স্টুডেন্ট
অ্যাফেয়ার্স (ডিএসএ)। ব্যবহারিক
ক্লাসের জন্য রয়েছে ডিজিটাল ল্যাব,
কম্পিউটার ল্যাব, টেক্সটাইল, ফিজিকস,
ইংলিশ ল্যাংগুয়েজ ল্যাব, সিসকো ল্যাব,
মাইক্রোসফট আইটি একাডেমি, লিনাক্স,
রেডহাট ও ওরাকল ল্যাব।
পড়ালেখার পাশাপাশি রয়েছে রোভার
স্কাউট কার্যক্রম, ডিবেটিং, স্পোর্টস,
সায়েন্স, কম্পিউটার, বিজনেস, কালচারাল
ক্লাবসহ ব্যায়ামাগার, মিডিয়া ল্যাব,
সাইবার ক্যাফে ও ক্যান্টিন সুবিধা। সব
মিলিয়ে বাংলাদেশের
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে অত্যন্ত
সাফল্য ও সুনামের সঙ্গে পরিচালিত
হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। ছাত্রছাত্রীদের
উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্র হিসেবে এ
বিশ্ববিদ্যালয়টি এশিয়ার
মধ্যে হতে পারে একটি অনন্য
উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল
ইউনিভার্সিটি গরিব ও
মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের বিভিন্ন
ক্যাটাগরিতে বৃত্তি দিয়ে থাকে। উচ্চ
মাধ্যমিক পরীক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ
অর্জনকারী শিক্ষার্থীদের ফ্রি অধ্যয়নের
ব্যবস্থা রয়েছে। সেমিস্টার ফাইনাল
পরীক্ষায় ভালো জিপিএ
অর্জনকারী ছাত্রছাত্রীরা শতকরা ১০
থেকে ১০০ ভাগ পর্যন্ত
বৃত্তি পেয়ে থাকেন। এ ছাড়া সহোদর
একাধিক ছাত্রছাত্রী এ
বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করলে ৪০ ভাগ
বৃত্তি দেওয়া হয়। সিজিপিএ ৩ দশমিক ৯
প্রাপ্ত ছাত্রছাত্রীদের অ্যাওয়ার্ড
দেওয়া হয়। পূর্ণকালীন শিক্ষকের
সার্বক্ষণিক সহায়তা ও সার্বক্ষণিক
বিদ্যুতের ব্যবস্থা রয়েছে।
ক্লাসরুমগুলো শীতাতপনিয়ন্ত্রিত।
বিশ্ববিদ্যলয়টিতে রয়েছে স্বয়ংসম্পূর্ণ
লাইব্রেরি, যেটি পাঁচতলাবিশিষ্ট ভবনের
পুরোটা জুড়ে অবস্থিত। শিক্ষার্থীদের
মেধা বিকাশ ও গবেষণাকর্মে সহায়তার
জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের
জন্য রয়েছে দেশি-বিদেশি প্রায় ১৬
হাজার রেফারেন্স বই, ছয় হাজার জার্নাল,
ই-জার্নাল, ই-বুক, সাপ্তাহিক, পাক্ষিক ও
মাসিক ম্যাগাজিন, সিডি, ভিসিডি,
ডিভিডিসহ দেশীয় ও আন্তর্জাতিক
পত্রপত্রিকা। লাইব্রেরির সব কর্মকা-ই
অনলাইন ও স্বয়ংক্রিয়
পদ্ধতিতে পরিচালিত হয়ে থাকে।
যে কোনো শিক্ষার্থী অনলাইনের
মাধ্যমে তার প্রয়োজনীয় বইয়ের জন্য
বুকিং দিতে পারেন। লাইব্রেরির
সর্বাধুনিক সুবিধাসংবলিত সুবিশাল
ফ্লোরে একসঙ্গে প্রায় ৪০০
শিক্ষার্থী শান্ত ও
নিরিবিলি পরিবেশে অধ্যয়নের সুযোগ
পান। শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের
দেওয়া চাহিদা অনূযায়ী দেশি-
বিদেশি রেফারেন্স বই সংরক্ষণের
মাধ্যমে লাইব্রেরিকে সব সময় সক্রিয়
রাখা হয়। লাইব্রেরিতে বসেই
শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা নোট, পরীক্ষার
অ্যাসাইনমেন্ট ও গবেষণাপত্র
তৈরি করতে পারে।
সম্প্রতি দক্ষিণ কোরিয়ার দ্যং সিউ
ইউনিভার্সিটি থেকে আটজন
শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ‘লাইফ
এথিকস’ নামক গবেষণা প্রকল্পের জন্য
আসে। এর পরপরই এ বিশ্ববিদ্যলয়ের ১২
সদস্যের একদল শিক্ষার্থীর কোরিয়ার
দ্যং সিউ
ইউনিভার্সিটিতে বর্তমানে শিক্ষারত
আছে।
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল
ইউনিভার্সিটির বাণিজ্য ও
অর্থনীতি অনুষদ, মানবিক ও সামাজিক
বিজ্ঞান অনুষদ, অ্যালাইড হেলথ সায়েন্স
অনুষদ, প্রকৌশল অনুষদ এবং বিজ্ঞান ও
তথ্যপ্রযুক্তি অনুষদ থেকে প্রতি বছর
নিয়মিত পাঁচটি করে জার্নাল নিয়মিত
প্রকাশ হচ্ছে। এতে উচ্চমানের গবেষণাকর্ম
স্থান পেয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়পর
্যায়ে গবেষণা কার্যক্রম
একটি অত্যাবশ্যকীয় বিষয়। এ
ক্ষেত্রে ডিআইইউ শিক্ষকরা দক্ষতার
সঙ্গে অব্যাহত রেখেছেন এ কার্যক্রম।
Leave a Reply