জনপ্রিয় লেখক ও শিক্ষার্থীদের কল্যাণে নিবেদিতপ্রাণ অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেছেন প্রায় সবগুলো পরীক্ষার প্রশ্নই ফাসঁ হয়েছে, প্রায় সবাই প্রশ্ন পেয়েছে পরীক্ষার আগেই। শুধু সৎ ও প্রকৃত শিক্ষিত বাবা-মায়ের ছেলেমেয়েরা ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্র নেননি। এ পরীক্ষার কী ফল হলো, কত জিপিএ ফাইভ পেল তা নিয়ে আমার কোনও বক্তব্য বা মতামত নেই।
এ ফলকে আমি কোনও গুরুত্ব দেই না। আমার মন খারাপ সেইসব ছেলেমেয়েদের জন্য যাদেরকে নিয়ে প্রশ্নফাঁস বিরোধী আন্দোলনে নেমেছিলাম। বুধবার রাতে ডেইলিএডুকেশন.নেট-এর সঙ্গে আলাপকালে জাফর ইকবাল এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো প্রশ্নফাঁস নিয়ে রাজপথে আন্দোলনকারী জাফর ইকবাল বলেন, আমার চিন্তা যারা ফাঁস হওয়া প্রশ্ন পেয়ে পরীক্ষা দিয়ে ভালো জিপিএ পেয়েছেন তারাই আবার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় ভালো জিপিএ-র সুফল পাবেন। আর যারা নির্ভেজাল পরীক্ষা দিয়ে কম জিপিএ পেয়েছেন তারা স্কোরের দিক থেকে পিছিয়ে পড়বেন। তাদের মন খারাপ দেখে আমার খুব খারাপ লাগছে। অথচ আমি এদের জন্য কিছুই করতে পারলাম না। এটাই আমার দু:খ।
তিনি বলেন, যে কোনও পাবলিক পরীক্ষার ফলপ্রকাশের পর সাংবাদিকরা আমার কাছে মূল্যায়ন জানতে চান। মতামত চান। আমিও আমার চিন্তামতো, সাধ্যমতো উত্তর দেই, মূল্যায়ন করি। কিন্তু এবারের ফলাফল নিয়ে আমার কোনও মূল্যায়ন নেই। তিনি বলেন, শিক্ষা ব্যবসায়ীদের প্রতিষ্ঠানগুলো হঠাৎ করেই পাবলিক পরীক্ষায় বিষ্ময়কর ভালো ফললাভ করছে। কিন্তু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় এসব শিক্ষাব্যবসায়ীদের প্রতিষ্ঠান থেকে জিপিএ ফাইভ পাওয়া কোনও শিক্ষার্থী চান্স পায় না। এটাই প্রমাণ করে কিছু একটা ঘাপলা দিয়ে তারা চোখ ধাঁধানো ফল লাভ করেন।
উল্লেখ্য, এবারের উচ্চম্যাধমিক পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হওয়া নিয়ে দেশব্যাপী হই চই হয়। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্ম হয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রশ্নফাঁস বিরোধী আন্দোলন-অনশনে অংশ নেন জাফর ইকবাল। তিনি চিরতরে প্রশ্নফাঁস বন্ধ ও জড়িতদের শাস্তির দাবী করলেও বরাবরের মতোই পাশ কাটিয়ে যান শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। তবে জুন মাসে দাখিল করা আন্ত:মন্ত্রণালয় তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে স্বীকার করা হয় ইংরেজি ও গণিত প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে। তবে কাউকে চিহ্নিত করা থেকে বিরত থেকেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সোহরাব হোসাইনের তদন্ত কমিটি।
Leave a Reply