মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পাবলিক পরীক্ষায় ব্যাপক পরিবর্তন আসছে। এরমধ্যে এমসিকিউ পরীক্ষায় ১০ নম্বর কমে যাচ্ছে। তাছাড়া লিখিত পরীক্ষার আগে অনুষ্ঠিত হবে এমসিকিউ পরীক্ষা। এরমধ্যে কিছু কার্যকর হবে ২০১৬ সালের পরীক্ষায় এবং অন্যগুলো ২০১৭ সালের পাবলিক পরীক্ষায় কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষামন্ত্রণালয়।
০৭ অক্টোবর বুধবার শিক্ষা মন্ত্রণালয় অনুষ্ঠিত সভায় এসব বিষয় সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট কর্তকর্তা জানিয়েছেন।
জানা গেছে, ২০১৭ সাল থেকে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় এমসিকিউ পরীক্ষার মোট নম্বর থেকে ১০ নম্বর কমিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
শিক্ষামন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় সৃজনশীল পরীক্ষার আগে এমসিকিউ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এমন সিদ্ধান্ত দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
০৭ অক্টোবর সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পাবলিক পরীক্ষা পদ্ধতির সংস্কার বিষয়ক ওই সভা শেষে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার মুহ. সাইফুল্লাহ সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, এমসিকিউ প্রশ্নপত্রের পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার স্বার্থে ২০১৬ সাল থেকে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় এমসিকিউ প্রশ্নপত্রের পরীক্ষা সৃজনশীল প্রশ্নপত্রের পরীক্ষার আগে অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
যদিও এর আগের সব পাবলিক পরীক্ষায় সৃজনশীল প্রশ্নপত্রের পরীক্ষা শুরুতে সম্পন্ন হওয়ার পর এমসিকিউ প্রশ্নপত্রের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছিল।
বৈঠকে আরও সিদ্ধান্ত হয়, ২০১৭ সাল থেকে এসএসসি ও এইচএসসিতে এমসিকিউ পরীক্ষার মোট নম্বর থেকে ১০ নম্বর কমিয়ে দেওয়া হবে। তার ফলে বর্তমানে যেসব বিষয়ে ৪০ নম্বরের এমসিকিউ প্রশ্নপত্রের পরীক্ষা হয় সেসব বিষয়ে ৩০ নম্বরের এমসিকিউ প্রশ্নপত্রের পরীক্ষা হবে।
আর যেসব বিষয়ে ৩৫ নম্বরের এমসিকিউ প্রশ্নপত্রের পরীক্ষা হয়, সেসব বিষয়ে ২৫ নম্বরের এমসিকিউ প্রশ্নপত্রের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এ দু’টি পরীক্ষায় এমসিকিউ প্রশ্নপত্রে হ্রাসকৃত ১০ নম্বর সৃজনশীল প্রশ্নপত্রে যুক্ত হবে।
সভায় জেএসসি, এসএসসি ও এইচএসসি তিনটি পরীক্ষাতেই দিনের সংখ্যা ও সময়সীমা কমানোর বিষয়ে আলোচনা হয়। এজন্য জেএসসি ও এসএসসিতে মৌলিক বিষয়গুলোর পাবলিক পরীক্ষার ব্যবস্থা করা ও অন্য বিষয়গুলোর স্কুলভিত্তিক মূল্যায়নের ব্যবস্থা করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, প্রচলিত পরীক্ষা পদ্ধতির ত্রুটিবিচ্যুতি পরিহার করাসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদানের সময় বৃদ্ধি ও প্রাইভেট কোচিং নিরুৎসাহিত করার জন্য আরও উন্নত পরীক্ষা পদ্ধতি খুঁজে বের করার প্রয়োজন রয়েছে। পরীক্ষার্থীদের মানের পরিমাপক হিসেবে যথার্থ পরীক্ষা পদ্ধতি খুঁজে বের করার উপরও গুরুত্ব আরোপ করেন শিক্ষামন্ত্রী।
শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, পাবলিক পরীক্ষা পদ্ধতি সংস্কারের এ আলোচনা একেবারেই প্রাথমিক ও ‘ব্রেনস্ট্রমিং’ পর্যায়ে রয়েছে। ছাত্র, শিক্ষক, অভিভাবক, শিক্ষাবিদ, বিশেষজ্ঞসহ সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে আলোচনা, সেমিনার, কর্মশালার আয়োজনসহ সবার মতামতের ভিত্তিতে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
সভায় পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের সর্বোচ্চ গোপনীয়তা রক্ষার স্বার্থে প্রশ্নপত্র মুদ্রণ ও প্যাকেটজাতকরণের জন্য বিজিপ্রেসকে সম্পূর্ণভাবে অটোমোশনের আওতায় আনার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
বিজি প্রেসকে পুরোপুরি অটোমোশন করা হলে প্রশ্নপত্র প্রণয়নের ক্ষেত্রে মানুষের কোনো প্রকার স্পর্শ ছাড়াই প্রশ্নপত্র ছাপানো ও প্যাকেটজাতকরণ সম্ভব হবে।
সভায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, শিক্ষা বোর্ডগুলোর চেয়ারম্যান, রাজধানীর বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি স্কুল-কলেজের প্রধান ও সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা উপস্থিত ছিলেন।
Leave a Reply