অনেক সময় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের এক কলেজ থেকে অন্য কলেজ পরিবর্তনের প্রয়োজন হয়। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ছাড়পত্র/কলেজ পরিবর্তনের নিয়ম প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। চলুন জেনে নেওয়া যাক নিয়মাবলিঃ
- শিক্ষার্থী ১ম বর্ষ উত্তীর্ণ হওয়ার পর (ক) সরকারি কলেজ হতে সরকারী ও বেসরকারী কলেজে, (খ) বেসরকারী শ্রেণীতে উন্নীত হলে ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করতে পারবে না। আবার শিক্ষার্থী একটি কলেজে ১ম বর্ষে ভর্তির আবেদন করেছিল কিন্তু রিলিজ স্লিপের মাধ্যমে অন্য কলেজে ভর্তি হয়েছে সে ক্ষেত্রে পূর্বে আবেদনকৃত কলেজে বা সমমান কলেজে ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করতে পারবেনা।
- চাকুরিতে অভিভাবক (পিতা/মাতা/স্বামী) অন্য জেলা শহরে বদলী হলে, পিতা/মাতা জীবিত না থাকলে/অসমর্থ হলে আইনগত ভাবে কাউকে অভিভাবকত্ব প্রদান করলে সে অভিভাবক হিসেবে বিবেচিত হবে। সেক্ষেত্রে আইনানুক অভিভাবকের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে হবে। শুধুমাত্র সরকারী, স্বায়ত্বশাসিত ও আধা-সরকারী প্রতিষ্ঠানে কর্মরত অভিভাবকের বদলী জনিত কারনে ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করতে পারবে। চাকুরীরত অভিভাবকের সম্মতিপত্র আবেদনের সাথে সংযুক্তি করতে হবে।
- মেয়ে শিক্ষার্থী বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলে (সম্মান শ্রেণিতে ভর্তির পর), সে ক্ষেত্রে বিবাহের কাবিননামা, (হিন্দু,খ্রিস্টান ও বৌদ্ধদের ক্ষেত্রে ১ম শ্রেণীর গেজেটেড কর্মকর্তা কর্তৃক/ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান/ওয়ার্ড কাউন্সিলর কর্তৃক প্রত্যয়নপত্র, স্বামী-স্ত্রীর যৌথ ছবি ও বিয়ের দাওয়াতপত্র, স্বামী যে প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করেন তার প্রত্যয়নপত্র, যোগদানপত্র, জাতীয় পরিচয়পত্র/অন্য কর্মে নিয়োজিত তার প্রামান্যপত্র।
- শিক্ষার্থী তার স্থায়ী ঠিকানার নিকটবর্তী কলেজে যৌক্তিক কারণে ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করতে পারবে। যদি তার নিজের জেলার কোন কলেজে তার পঠিত বিষয়টি অধিভুক্তি না থাকে তাহলে পার্শ্ববর্তী জেলার নিকটবর্তী কলেজে ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করতে পারবে। সে ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর নিজের/পিতা/মাতা এর জাতীয় পরিচয়পত্র ও অভিভাবকের মতামত পত্র জমা দিতে হবে। কর্তৃপক্ষ বিষয়টি বিবেচনার যোগ্য মনে করলে TC দিবেন।
- অভিভাবকের মৃত্যু জনিত কারণে ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করতে পারবে, যদি অভিভাবক সদ্য মৃত্যুবরন করেন সেক্ষেত্রে ডাক্তার কর্তৃক ডেথ সার্টিফিকেট এর কপি অথবা চেয়ারম্যান কর্তৃক প্রত্যয়নপত্র জমা দিতে হবে। প্রকৃত অভিভাবকের মৃত্যু জনিত কারণে অভিভাবকত্বের দায়িত্ব যার উপর অর্পিত হয়েছে তার সম্মতিপত্র এবং তার পেশা ও কর্মস্থল সংক্রান্ত প্রামান্য কাগজপত্র এবং জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি আবেদনের সাথে জমা দিতে হবে।
- শিক্ষার্থী প্রতিবন্ধি হলে এক্ষেত্রে প্রতিবন্ধি বিষয়ে সমাজকল্যাণ অধিদপ্তরের সনদপত্র জমা দিতে হবে।
- একই জেলা/বিভাগীয় শহরে অবস্থিত দুটি কলেজের মধ্যে ছাড়পত্রের অনুমোদন দেয়া যাবে না। তবে বিশেষ কারনবশত মেয়ে শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রে উক্ত শর্ত শিথিল যোগ্য।
- সংশ্লিষ্ট কলেজের শিক্ষাকার্যক্রম/ বিষয়ের অধিভুক্তি স্থগিত হলে এক্ষেত্রে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ পরিদর্শন শাখা কর্তৃক প্রদত্ব অধিভুক্তি বাতিলের পত্র সংযুক্ত করতে হবে।
- আবেদনের সাথে রেজিস্ট্রেশন কার্ড, সংশ্লিষ্ট বর্ষের প্রবেশপত্র ও পরীক্ষার ফলাফল এবং পিতামাতার জাতীয় পরিচয়পত্র সংযুক্ত করতে হবে।
- একজন শিক্ষার্থী ফলাফল প্রকাশের দিন থেকে ৪৫ দিনের মধ্যে ছাড়পত্রের জন্য অনলাইনে আবেদন করতে পারবে এবং একজন শিক্ষার্থী একাধিকবার ছাড়পত্র নিতে পারবে না।
বিঃ দ্রঃ আবেদন করার সময় Reason এর স্থানে ছাড়পত্রের কারন স্পষ্ট করে অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে।
ছাড়পত্রের মাধ্যমে কলেজ পরিবর্তনের ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত সংযুক্তি প্রয়োজনঃ
যেভাবে অনালাইনে আবেদন করবেন তার ভিডিও
যেভাবে আবেদন করবেনঃ
২৪ মে ২০২২ তারিখ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত কলেজ পরিবর্তনের নিয়মাবলী সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের পদ্ধতি সম্পর্কে কিছু উল্লেখ করা হয়নি। তবে এর আগে গত ১৭ জুন ২০১৫ তারিখ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ছাড়পত্র/কলেজ পরিবর্তনের আবেদনের পদ্ধতি প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। উক্ত প্রক্রিয়া নিচে তুলে দেওয়া হলোঃ
- একজন শিক্ষার্থী ফলাফল প্রকাশের দিন থেকে ৪৫ দিনের মধ্যে অনলাইনে ছাড়পত্রের জন্য প্রাথমিক আবেদন করতে পারবে। আবেদনের সাথে প্রার্থীর মোবাইল নম্বর সংযুক্ত করতে হবে। আবেদন করতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট (nu.edu.bd) এর Services মেনু তে গিয়ে Student Login এ গিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। রেজিস্ট্রেশন এর পদ্ধতি জানতে এই পিডিএফ ফাইলটি ডাউনলোড করে নিন। রেজিস্ট্রেশন করা হয়ে গেলে ওই লিঙ্কে লগইন করতে হবে। লগইন করার পর বামদিকে Academic Services এ ক্লিক করলে Academic Services For Student এর তালিকা পাবেন। এই তালিকায় Transfer College(TC) তে ক্লিক করলে ছাড়পত্রের আবেদন ফরম পাবেন।
- প্রার্থীর প্রাথমিক আবেদন যাচাই বাছাই করে এক সপ্তাহের মধ্যেই SMS এর মাধ্যমে তার আবেদন বিবেচনা যোগ্য কিনা তা জানিয়ে দেওয়া হবে। আবেদন গ্রহণযোগ্য হলে প্রার্থীকে ছাড়পত্রের ফিসহ নির্ধারিত ফরমে বিশ্ববিদ্যালয়ে চূড়ান্ত আবেদনপত্র জমা দিতে হবে। চূড়ান্ত আবেদনের সাথে শুধুমাত্র ছাড়পত্র প্রদানকারী কলেজের অনাপত্তিপত্র জমা দিতে হবে। উল্লেখ্য যে, শিক্ষার গুনগত মানোন্নয়নের প্রতি লক্ষ রেখে ছাড়পত্র অনুমোদনের ক্ষেত্রে প্রার্থী যে কলেজে ভর্তি হতে ইচ্ছুক সে কলেজের প্রার্থীত বিষয়ের শিক্ষার্থী – শিক্ষক সংখ্যানুপাত Optimum সংখ্যার অনেক বেশী হলে প্রার্থীর আবেদন বিবেচনা করা হবে না।
- কোর্স ফাইনাল পরীক্ষার ফরম পূরণ শুরু হলে ছাড়পত্র ইস্যু করা যাবে না। তাছাড়া স্নাতক (সম্মান ) শ্রেণীতে ৩য় ও ৪র্থ বর্ষে বিশেষ কারণ ছাড়া ছাড়পত্র প্রদান করা যাবে না।
- প্রামাণ্য তথ্যে কোন জালিয়াতির প্রমাণ পাওয়া গেলে শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল বলে গন্য হবে।
[ছারপত্রের মাধ্যমে কলেজ পরিবর্তনের নিয়মাবলী সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি ডাউনলোড]
Leave a Reply