ছোট বেলায় বাংলা সিনেমায় দেখতাম ভিলেন জোর করে নাইকাকে ধর্ষণ করছে। তখন ধর্ষণ জিনিসটা না বুঝলেও এটা বুঝতাম যে এটা খুব খারাপ কাজ। যা করা উচিৎ না।
তবে আস্তে আস্তে যখন বড় হতে লাগলাম তখন আসে পাশের পরিবেশ আমাকে বেশ ভাবিয়ে তুলল। কিছু দিন পর পরেই দেশের কোথাও না কোথাও মেয়েরা ধর্ষিত হচ্ছে। কখনো বাসে, কখনো বা স্কুলে! এর কোনো সুস্থ বিচারও কখনো হতে দেখিনি। তখন ভেবে নিলাম যে, এটা হয়তো এমন খারাপ কাজ যা সকলে সমর্থন করে।
যাক, এগুলো আগের কথা। আজকাল বাংলাদেশ নাকি ডিজিটাল দেশের দিকে যাচ্ছে। শিক্ষার হার নাকি অনেক বেড়েছে, তাহলেতো মানুষের চিন্তা ধারাও অনেক উন্নত হয়েছে। এখনত হয়তো আর এই দেশে মেয়েদেরকে ভোগ্য পণ্যের মত ব্যবহার করা হয় না। টেলিভিশন খুললে সরকার পর্যায়ের কর্মকর্তারা যখন বলেন দেশের আইনী পরিবেশ এখন খুবই স্বাভাবিক, দেশে কোনো অরাজকতা নেই তখন বেশ ভালো এবং নিরাপদ বোধ করি। কিন্তু পরক্ষনেই যখন অন্য কোন মাধ্যম হতে জানতে পারি অমুক ব্লগার খুন! অথবা অমুক দিনে নারীদের লাঞ্ছিত করা হয়েছে অথবা ক্লাস ওয়ান এবং ক্লাস ফাইভে পড়া শিশু বাচ্চা স্কুলের ভিতর ধর্ষিত, তখন মনটা চায় সেইসব মানুষদের গলাটা চেপে ধরি।
তবে ধরি না, কারণ গুম হওয়ার কোনো ইচ্ছা ভাবনা আমার নেই।
যাই হোক, অনেক ঘটনার মত ঢাকার মোহাম্মদ প্রিপারেটরী স্কুলের ২ ছোট বাচ্চার ধর্ষনের ঘটনাও আস্তে আস্তে চলে যাচ্ছে মাটির তল দেশে। দুই বাচ্চার একজন ক্লাস ওয়ানে পড়ত আর অন্যজন ক্লাস ফাইভে।
ক্লাস ফাইভে পড়া বাচ্চা মেয়েটি আর নেই। মারা গিয়েছে একটি হাসপাতালের আইসিইউ তে। সেই স্কুলের পক্ষ থেকে ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়া হচ্ছে। হয়ত স্কুলের রেপুটেশনের জন্যেই।
স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের প্রতিবাদ করতে দেয়া হচ্ছেনা। তাদের হুমকি দেয়া হয়েছে যে প্রতিবাদ করলে SSC এর সার্টিফিকেট দেয়া হবে না। তাহলেকি আবারও প্রমাণ হবে,” জোর যার, মুল্লক তার?”
স্কুল কর্তৃপক্ষকে চেপে ধরলেই হয়তো বের হয়ে যাবে সব। তবে কাজটা করতে হবে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকেই । দেশে এখনো নিষ্ঠাবান অফিসার রয়েছে যারা নিশ্চয়ই ওই মেয়ে দুটির ভিতর নিজের মেয়েকে দেখতে পাবে। এই আশাতেই বুক বেধে রইলাম।
Leave a Reply