উদ্বোধনের প্রায় আড়াই মাস পর রাঙামাটি মেডিকেল কলেজে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্লাসসহ একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ২৮ মার্চ শনিবার ক্লাস শুরুর আগে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে মেডিকেল কলেজের আশপাশে পুলিশ ও বিজিবির নিরাপত্তা ব্যবস্থা ব্যাপক জোরদার ছিল। শেষ পর্যন্ত কোনো ধরনের বিঘ্ন ছাড়াই শেষ হয় প্রথম দিনের ক্লাসহ সব কার্যক্রম।
উল্লেখ্য, সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতিসহ আদিবাসী সুশীল সমাজের কয়েকটি সংগঠন শান্তি চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত রাঙামাটিতে মেডিকেল কলেজ স্থাপনের বিরোধিতা করে আসছিল। ১০ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টেলিকনফারেন্সের মাধ্যেমে রাঙামাটি মেডিকেল কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। ওই দিন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ রাঙামাটি জেলায় অবরোধকে কেন্দ্র করে শহরে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার রূপ নেয় এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রথমে ১৪৪ ধারা এবং পরে কারফিউ জারি করা হয়। এরপর থেকে মেডিকেল কলেজের সব কার্যক্রম সম্পূর্ণ বন্ধ ছিল।
জানা গেছে, শহরের রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে পাশের অস্থায়ী একটি ভবনে গতকাল শনিবার সকাল ১০টার দিকে কোনো প্রতিবন্ধকতা ছাড়াই আনুষ্ঠানিকভাবে মেডিকেল কলেজের ক্লাসসহ একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়। প্রথম দিনে ভর্তিকৃত ৫১ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৪৪ শিক্ষার্থী ক্লাসে উপস্থিত ছিলেন। বর্তমানে এ মেডিকেল কলেজে শিক্ষক হিসেবে কলেজের অধ্যক্ষসহ তিনজন শিক্ষক যোগদান করেছেন। তাছাড়া এখনও কলেজের আসবাবপত্র ও আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র ঘাটতি রয়েছে।
সূত্র জানায়, গতকাল কলেজের একাডেমিক কার্যক্রম শুরু উপলক্ষে সংক্ষিপ্ত এক পরিচিতি পর্ব অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ সময় বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. মোস্তফা জামান, জেলা সিভিল সার্জন ডা. স্নেহ কান্তি চাকমা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদ ও কলেজের অধ্যক্ষ ডা. টিপু সুলতান। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পুলিশের সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার চিত্ত রঞ্জন পাল, রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. নুয়েন খীসা প্রমুখ।
রাঙামাটি মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. টিপু সুলতান জানান, গতকাল শনিবার থেকে মেডিকেল কলেজে সুন্দরভাবে ক্লাসসহ একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে আর কোনো সমস্যা দেখা দেবে না।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ জানান, মেডিকেল কলেজে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে। রাষ্ট্র ও কলেজ কর্তৃপক্ষ যদি মনে করে তবে প্রয়োজন অনুসারে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হবে।
তথ্যসূত্রঃ সমকাল
Leave a Reply