নাটোরের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা গাইড বা নোট বইয়ের ওপর নির্ভরশীল। অভিভাবকরাও এতে বাধা দেন না। বরং তাদের ধারণা এতে ছেলে-মেয়েরা ভালো ফলাফল করছে।
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা পিকেএসএস’র জরিপে এ তথ্য জানা জানা গেছে।
সংস্থাটি গবেষণার জন্য পরিচালিত সামাজিক নিরীক্ষায় শিক্ষার সঙ্গে সম্পৃক্ত প্রতিটি জনগোষ্ঠীর কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করেছে। এ তথ্য সংগ্রহের জন্য অংশগ্রহণমূলক পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে। জরিপে সেবা গ্রহণকারী ও সেবা দানকারী উভয়েই সরাসরি অংশ গ্রহণের মাধ্যমে তাদের মতামত এবং তথ্য প্রদান করেছে।
সেবা গ্রহণকারী সরকারি সেবার পর্যাপ্ততা, মান, দুর্বলতা এবং সরকারি সেবা প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা ইত্যাদি সম্পর্কে মতামত দিয়েছেন।
নাটোরের সিংড়া উপজেলার পৌরসভার একটি স্কুল ও উপজেলায় একটি, ইউনিয়নের দু’টি স্কুল। মোট চারটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ গবেষণা পরিচালিত হয়।
গবেষণায় প্রকাশ করা হয়েছে- প্রায় ৯৫% শিক্ষার্থী নোট বই কিনেছে। তবে, শিক্ষকরা তাদের নোট বই কিনতে বলেননি। তবে, নোটবই শিক্ষার মান বৃদ্ধি করে এবং ভালো ফলাফলে সহায়ক বলে তারা একমত। মাত্র ২২% শিক্ষার্থী কোচিং সেন্টারের সঙ্গে যুক্ত এবং ৭% শিক্ষার্থী কোচিং করে স্কুলে। তাদের স্কুলে শাস্তি দেওয়া হয় না।
প্রায় ৭২% স্কুলে নিরাপদ পানির ব্যবস্থা রয়েছে। ১০০% স্কুলে টয়লেট রয়েছে, স্কুলে ছেলে ও মেয়েদের পৃথক টয়লেটের ব্যবস্থা রয়েছে। তবে, অধিকাংশ টয়লেট স্বাস্থ্যসম্মত নয়।
নাটোর জেলায় ১১ জন শিক্ষকের সাক্ষাতকার নেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে ছয়জনের শিক্ষাগত যোগ্যতা মাস্টার্স পাস। দু’জনের শিক্ষাগত যোগ্যতা বিএ পাস ও তিনজনের শিক্ষাগত যোগ্যতা এইচএসসি পাস।
শিক্ষকরা বলেছেন তাদের ডিজিটাল পরিচয়পত্র রয়েছে ও তারা স্কুলের নোটিশ বোর্ডে এটি ঝুলিয়ে রাখেন। তারা ক্লাস নেওয়ার পূর্বে পাঠ পরিকল্পনা করেন। সব শিক্ষক শিক্ষা উপকরণ ব্যবহার করেন। ২৭% শিক্ষক চারের অধিক ক্লাস নেন। প্রায় ৮৫% শিক্ষক বলেছেন তারা অপেক্ষাকৃত দুর্বল শিক্ষার্থীদের প্রতি অধিক মনোযোগ দেন।
এছাড়া প্রতিটি বিদ্যালয়ে খেলাধুলার ও আনন্দ বিনোদনের ব্যবস্থা করা, বিদ্যালয়গুলোর আঙিনায় শিশুপার্কের/মিনি পার্কের ব্যবস্থা করা, প্রতিটি বিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়ন বিশেষভাবে করা, ফিডিং প্রকল্পের ব্যবস্থা করা, প্রতিটি বিদ্যালয়ে লাইব্রেরি ও কম্পিউটার থাকা এবং প্রশিক্ষক থাকা, প্রতিটি বিদ্যালয়ের সীমানার প্রাচীর থাকা, প্রতিটি বিদ্যালয়ে প্রয়োজনীয় উপকরণ সরবরাহ নিশ্চিত করা, প্রতিটি বিদ্যালয়ের রাস্তা পাকাকরণ করা (মূল রাস্তা হতে), শিক্ষক ও অভিভাবকে বাচ্চাদের প্রতি সচেতন হওয়া, প্রতিটি বিদ্যালয়ে উপবৃত্তির ব্যবস্থাসহ উপবৃত্তির হার ১০০% থাকা এবং প্রতিটি বিদ্যালয়ে নিরাপদ পানির ব্যবস্থা নিশ্চিত করার বিষয়গুলো উল্লেখ করা হয়েছে এ জরিপে।
সৌজন্যেঃ বাংলানিউজ
Leave a Reply