আসুন জেনে নিই এক অদ্ভুত প্রাণী ওকাপি সম্পর্কে

ওকাপি, পশ্চিম আফ্রিকার জাইরে পাওয়া যায়।ওকাপির দেহের গড়ন অনেকটা খচ্চর (Mule) – এর মতো, ঘাড় অবধি উচ্চতা ১.৫ – ১.৭ মিটার। ওজন ২০০ – ৩০০ কিলোগ্রাম।ওকাপি

মখমলের মতো ঘন মিহি লোমে ঢাকা গায়ের রঙ সাধারণভাবে লালচে বাদামি, আর পায়ের রঙ হলুদ। কিন্তু এর পশ্চাদ্দেশে এবং পায়ে আড়াআড়ি ভাবে মাখনের মতো সাদা এবং অনেক কালো ডোরাকাটা দাগ দেখা যায় (জেব্রার সঙ্গে তুলনীয়)।
এজন্য আগেকার দিনে একে জেব্রার সগোত্র বলেই মনে করা হত।

দেহের তুলনায় গলাটা এদের বেশ লম্বা, যদিও জিরাফের মতো অতটা লম্বা নয়। এর মাথার গড়নও অনেকটা জিরাফের মতো। শুধু তাই নয়, পুরুষ ওকাপির মাথার উপরে জিরাফের তথাকথিত দুটো শিঙের মতো উপবৃদ্ধি দেখা যায় (১.৫ সে.মি)।

মাথায় দুটো বড়ো বড়ো কান, এজন্য এর শ্রবণ শক্তি অত্যন্ত প্রখর। ওকাপি জোড়খুর বিশিষ্ট তৃণভোজী রোমন্থক প্রাণী। এর সবল জিভ বেশ লম্বা। অনেকটা জিরাফের মতো। এজন্য সে গলা বাড়িয়ে, মগডালের কচি কচি পাতাসহ ছোট ছোট শাখা – প্রশাখা, জিভের সাহায্যে জড়িয়ে ধরে মুখের মধ্যে টেনে নেয়, যেমনটি করে থাকে জিরাফ। প্রথমে গরুর মতো গপ গপ করে গিলে খায়। তারপর অবসর সময়ে বসে জাবর কাটে (গরুর মতো)।

আকৃতিগত ভাবে জিরাফের সঙ্গে ওকাপির বেশি মিল নেই। তবুও, বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিতে বিচার – বিশ্লেষণ করে, বর্তমানে একে জিরাফের পরিবারেরই অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, এবং বিজ্ঞান সম্মত নাম দেওয়া হয়েছে ওকাপিয়া জনষ্টনি (Okapia Johnstoni)। স্থানীয় নাম ওকাপির সঙ্গে আবিষ্কারক জনষ্টনের নামটা জুড়ে দিয়ে যে নামকরণ করা হয়েছে, সবদিক দিয়ে সার্থক হয়েছে।

ওকাপি সাধারণত জোড় বেঁধে নতুবা একাকী বনের মধ্যে বিচরণ করে, এবং গাছের মগডালের কচি কচি পাতা খেয়ে জীবনধারণ করে। এদের ঘ্রাণশক্তি এবং শ্রবণশক্তি অত্যন্ত প্রখর (বড় বড় কান-ই তার প্রকৃষ্ট প্রমাণ)।
তাছাড়া এত সচেতন এবং সতর্ক সামান্য বিপদের সম্ভাবনা দেখলেই গাছপালা ও লতাগুল্মোর মধ্য দিয়ে অবিশ্বাস্য দ্রুতগতিতে পালিয়ে যায়।





Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*