বাধা পেরিয়ে আনন্দ-উচ্ছ্বাসে রাবির নবম সমাবর্তন পালিত

বর্ণিল ক্যাম্পাসে আনন্দ-উচ্ছ্বাসমুখর পরিবেশে সদ্য গ্রাজুয়েটদের অংশগ্রহণে পালিত হলো উত্তরবঙ্গের শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নবম সমাবর্তন।
RU Convocation
সমাবর্তন উপলক্ষ্যে গ্রাজুয়েটদের পদচারণায় দিনভর মুখর ছিল মতিহারের সবুজ চত্বর। প্রিয় ক্যাম্পাসে পুরনো বন্ধু-সহপাঠীকে কাছে পেয়ে আনন্দ ভাগাভাগি আর স্মুতি রোমন্থনে কাটলো প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের একটি দিন।

১৮ জানুয়ারি রোববার বিকেলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেডিয়ামে সমাবর্তনের মূল অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

মূল অনুষ্ঠান শুরুর আগেই নয়টি অনুষদের বিভিন্ন বিভাগ থেকে নিবন্ধিত শিক্ষার্থীদের মাঝে কস্টিউমস ও সনদ বিতরণ করা হয়।

প্রিয় ক্যাম্পাসে এসে শিক্ষাজীবনের বহু কাঙ্ক্ষিত এই মাহেন্দ্রক্ষণে আনন্দ ভাগাভাগি করতে নতুন-পুরনো শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখর ছিলো পুরো ক্যাম্পাস।

অনেকেই ক্যাম্পাস জীবনের ফেলে আসা সেই সোনাঝরা দিনগুলোতে ফিরে যান। শিক্ষক-সহপাঠী ও দেশ বরেণ্য ব্যক্তিদের সংমিশ্রণে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস মহোৎসবে পরিণত হয়।

সমাবর্তনে অংশ নেওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য গ্রাজুয়েটদের চোখেমুখে উচ্ছ্বাস ছাপিয়ে উঠে। দীর্ঘ দিন পর পুরনো বন্ধুদের কাছে পেয়ে গল্প-আড্ডা-ছবি তোলায় ব্যস্ত ছিল গ্রাজুয়েট শিক্ষার্থীরা।

ক্যাম্পাস জীবনের প্রাণের সতীর্থদের স্মৃতি ধরে রাখতে চলে ছবি তোলার হিড়িক। নতুন রুপ পাওয়া ক্যাম্পাসের আনাচ-কানাচ থেকে ভেসে আসে ক্যামেরার ‘ক্লিক ক্লিক’ শব্দ। অনেকে সমাবর্তনের পোশাক পরে সকাল থেকে ছবি তুলে স্মৃতির অ্যালবামে বন্দি করে রাখে প্রিয় এই ক্ষণটিকে।

তবে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের অবরোধ এবং রাজশাহী বিভাগের আট জেলায় রোববার থেকে দু‘দিনের হরতাল কিছুটা বিঘ্ন সৃষ্টি করে গ্রাজুয়েটদের আনন্দে। সমাবর্তন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সনদ গ্রহণের জন্য ঝুঁকি নিয়ে সিংহভাগ প্রাক্তন শিক্ষার্থী উপস্থিত হলেও আসতে পারেননি অনেকে। তবে যারা এসেছিলেন তাদের আনন্দ থামিয়ে রাখতে পারেনি হরতাল অবরোধ।

বিশ্ববিদ্যালয় স্টেডিয়ামে সমাবর্তনের মূল অনুষ্ঠান শুরুর আগে সাবাশ বাংলাদেশ চত্বর থেকে রাষ্ট্রপতি ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার‌্য মো. আবদুল হামিদর এবং আমন্ত্রিত অতিথিদের অংশগ্রহণে বর্ণাঢ্য র‌্যালি বের করা হয়। এরপর মূল অনুষ্ঠানে অংশ নেন রাষ্ট্রপতি।

সমাবর্তন বক্তা ছিলেন ভারতের জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার‌্য তালাত আহমদ।

রাষ্ট্রপতি গ্রাজুয়েটদের মাঝে ডিগ্রি প্রদান করেন। এ ক্ষণটিও ছিল আনন্দের। হাজার হাজার গ্রাজুয়েটের আনন্দসুলভ উল্লাসের শব্দ ছড়িয়ে যায় দিগ্বিদিক।

শিক্ষাজীবন শেষ করা গ্রাজুয়েটদের উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রপতি শিক্ষাকে দেশ গড়ার হাতিয়ার উল্লেখ করে এই শিক্ষাকে কাজে লাগিয়ে ক্ষুধা দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে নিরন্তর প্রচেষ্টা চালানোর আহ্বান জানান।

উৎসবে যোগ দেওয়া গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী সিরাজুল ইসলাম বলেন, এই সমাবর্তন অনুষ্ঠান কেবল আনুষ্ঠানিকতা নয়, জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। দীর্ঘ দিন পর ক্যাম্পাসে এসে পুরনো বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হওয়াটাই ছিল সব চেয়ে বেশি আনন্দের। তবে হরতাল-অবরোধের জন্য রাজনৈতিক দলকেও দুষছেন কেউ কেউ।

মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী আরিফুল হক বলেন, যানবাহনে হামলার আশঙ্কা নিয়ে তিনি ট্রেনে এসেছেন ঢাকা থেকে। কিন্তু ট্রেনে ২০ ঘণ্টা বিলম্ব ছিল বড় ভোগান্তি। তবে সেই কষ্ট আর নেই।

সমাবর্তনে ২০০৬ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত স্নাতকোত্তর, এমবিবিএস, বিডিএস, এমফিল ও পিএইচডি কোর্সের ৪ হাজার ৭৭১ জন প্রাক্তন শিক্ষার্থীর মাঝে সনদ প্রদান করা হয়।

সৌজন্যেঃ বাংলানিউজ





About লেখাপড়া বিডি ডেস্ক 1519 Articles
লেখাপড়া বিডি বাংলাদেশের প্রথম শিক্ষা বিষয়ক বাংলা কমিউনিটি ব্লগ।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*