মহাকাশ নিয়ে আগ্রহী বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) একদল শিক্ষার্থী অংশ নিচ্ছেন মার্স সোসাইটি আয়োজিত সম্মানজনক ইউনিভার্সিটি রোভার চ্যালেঞ্জে (ইউআরসি)। আর মেধাবী তরুণদের এ দলকে স্পন্সর করছে গ্রামীণফোন।
বৈশ্বিকভাবে স্বীকৃত রোবোটিকস প্রতিযোগিতা – ইউনিভার্সিটি রোভার চ্যালেঞ্জ প্রতিবছর যুক্তরাষ্ট্রের সাউদার্ন ইউটাতে অনুষ্ঠিত হয়। মার্স সোসাইটির উদ্যোগের অংশ হিসেবে ইউআরসি চ্যালেঞ্জে শিক্ষার্থীদের দলকে পরবর্তী প্রজন্মের মার্স রোভার নকশা ও তৈরি করতে বলা হয়, যা পরবর্তীতে মঙ্গল যাত্রার ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করে। উল্লেখ্য, স্বনামধন্য আন্তর্জাতিক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান মার্স সোসাইটি মঙ্গলগ্রহ সম্পর্কে তথ্য জানার ক্ষেত্রে এবং মঙ্গলে মানুষের বসবাসের সম্ভাব্যতা অনুসন্ধানে কাজ করে।
আন্তর্জাতিক মঞ্চে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করতে আগামী ৩১ মে থেকে ৩ জুন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের ইউটার হ্যাঙ্কসভিলে অনুষ্ঠাতব্য ইউনিভার্সিটি রোভার চ্যালেঞ্জ ২০২৩ এর ফাইনালে অংশগ্রহণ করবে বুয়েটের ‘ইন্টারপ্ল্যানেটার’ টিম। ‘ইন্টারপ্ল্যানেটার’ টিম চার চাকার এক উদ্ভাবনী রোভার তৈরি করেছে। তারা এ রোভারের নাম দিয়েছে ‘প্রচেষ্টা ভি১.০।’ রোভারটিতে ফিচার হিসেবে রয়েছে অল-টেরেইন অটোনোমাস ট্রাভেল, এক্সট্রিম রিট্রাইভাল ও ডেলিভারি মিশন, রোবোটিক আর্ম এবং অণুজীব ও পুষ্টি নিয়ে মাটি বিশ্লেষণের জন্য প্রয়োজনীয় ইক্যুইপমেন্ট।
এ নিয়ে গ্রামীণফোনের সিইও ইয়াসির আজমান বলেন, ‘টিম ইন্টারপ্ল্যানেটারের এই যাত্রায় আমি উচ্ছ্বসিত। তাদের এই চেষ্টা রীতিমতো আক্ষরিক অর্থেই বিশ্বের গন্ডি পেরিয়ে মহাবিশ্বকে জানার চেষ্টায় বাধাগুলো জয় করে বাংলাদেশের জন্য নতুন সুনাম বয়ে এনেছে। তাদের উদ্যম এবং কঠোর পরিশ্রম আমাদের অদম্য তরুণ সমাজের উদাহারণ। এবং তাদের বিজয় এক অর্থে পুরো বাংলাদেশেরই বিজয়। ইন্টারপ্ল্যানেটার আমাদের তরুণদের যেকোনো বাধা পেরিয়ে যাওয়ার সক্ষমতাকেই প্রতিনিধিত্ব করছে, তাদের অ্যাডভেঞ্চারের চেতনা এবং সামনের সম্ভাবনা আমাকে আশা দেয় এবং আমি নিশ্চিত যে এটি আমাদের তরুণদের নতুন দিগন্ত জয় করতে অনুপ্রাণিত করবে। এটি আমার জন্য অত্যন্ত গর্ব ও আনন্দের যে গ্রামীণফোন মানবজাতির মঙ্গল গ্রহের এই বিজয়ী যাত্রার অংশ হতে পেরেছে ।’
টিম ইন্টারপ্ল্যানেটর ইতোমধ্যে বিশ্বজুড়ে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় স্বীকৃতি অর্জন করেছে। তাদের উল্লেখযোগ্য অর্জনগুলোর মধ্যে রয়েছে ইউরোপীয় রোভার চ্যালেঞ্জ (ইআরসি) ২০২২-এ বিশ্বব্যাপী অষ্টম স্থান অর্জন করা এবং প্রতিযোগিতায় ইউরোপের বাইরে শীর্ষ দল হিসেবে স্থান করে নেয়া। পাশাপাশি, তারা ইআরসি ২০২২ -এর রিমোট এডিশনে চতুর্থ স্থান অর্জন করেছে, যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত ইউনিভার্সিটি রোভার চ্যালেঞ্জ ২০১৬-এ পঞ্চম স্থান অর্জন করেছে, ইন্টারন্যাশনাল প্ল্যানেটরি এরিয়াল সিস্টেমস চ্যালেঞ্জে ইনোভেশন অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে, ইআরসি ২০২১ -এর রিমোট এডিশনে একাদশ তম অবস্থান অর্জন করেছে, ইআরসি ২০১৯ -এ ১৬ স্থান অর্জন করেছে এবং ইআরসি ২০২০ -এ বিশ্বব্যাপী ১৩তম অবস্থান (দক্ষিণ এশিয়ায় দ্বিতীয়) অর্জন করেছে।
তরুণদের মধ্যে উদ্ভাবন এবং শিক্ষার প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধিতে কাজ করে চলেছে গ্রামীণফোন। পাশাপাশি, গ্রামীণফোন সামগ্রিকভাবে এর লক্ষ্য – ডিজিটাল প্রযুক্তি-ভিত্তিক বাংলাদেশ বিনির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। ধারনা করা হচ্ছে, প্রচেষ্টা ভি১.০ প্রদর্শনের মাধ্যমে রোভার ভেসেলে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারের উৎকর্ষ সবার সামনে উন্মোচিত হবে। স্মার্ট বাংলাদেশের কানেক্টভিটি পার্টনার গ্রামীণফোন মনে করে ইন্টারপ্ল্যানেটারের সাফল্য দেশের আরও অনেক তরুণকে অনুপ্রাণিত করবে এবং তাদের রোবোটিকস ও প্রযুক্তির সাথে সম্পৃক্ততা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখবে।
Leave a Reply