আগামী দুই বছরে দুই হাজার ইউনিয়নে নারী ক্ষমতায়নে ভূমিকা রাখতে কাজ করবে গ্রামীণফোন। আন্তর্জাতিক নারী দিবসের চেতনার সাথে একাত্ম হয়ে গ্রামীণফোন #ডিজিটাল প্রতিপাদ্যের অধীনে ‘ইন্টারনেট এর দুনিয়া সবার’ শীর্ষক একটি দীর্ঘমেয়াদী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। যার লক্ষ্য লিঙ্গ সমতায় উদ্ভাবন ও প্রযুক্তির ব্যবহার।
দুই বছরব্যাপী এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে সারাদেশে উঠান বৈঠক আয়োজিত হবে। যার মাধ্যমে যেসব নারীদের প্রযুক্তি ব্যবহারের সুযোগ নেই কিংবা সীমিত সুযোগ রয়েছে তাদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করা হবে এবং তাদের ডিজিটাল স্বাক্ষরতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখার মাধ্যমে তাদের ক্ষমতায়ন করা হবে। ২ হাজার ইউনিয়নের গ্রাম ও প্রান্তিক অঞ্চলের নারীদের বিশেষ এ উঠান বৈঠকে যোগ দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হবে যেখানে ইন্টারনেট তাদের জীবনকে কিভাবে উন্নত করতে পারে এবং সম্ভাবনা উন্মোচনে সাহায্য করতে পারে তা নিয়ে সচেতন করা হবে। সেশনগুলি বাস্তব জীবনের উদাহরণ উপস্থাপন করে নারীদের প্রযুক্তি ব্যবহার নিয়ে যে ট্যাবু ও ভুল ধারনা প্রচলিত রয়েছে তা ভাঙতে তাদের সচেতন করবে। এছাড়াও অনুপ্রেরণামূলক মহিলাদের সাথে তাদের সংযোগের মাধ্যমে নারীদের ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তির সম্ভাবনা এবং প্রয়োজনীয়তাগুলি প্রদর্শন করবে।
গ্রামীণফোনের কর্মী ও সংশ্লিষ্ট এলাকার অনুপ্রেরণাদায়ী নারীরা উঠান বৈঠকে তাদের মত ব্যক্ত করবেন। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহার সম্পর্কে শিক্ষা ও সচেতনতা তৈরি সম্পর্কে আলোচনা করবেন, যাতে অংশগ্রহণকারীরা ইন্টারনেটের শক্তিকে কাজে লাগিয়ে তাদের ব্যক্তিগত জীবন ও কাজের ক্ষেত্রে সফলতা অর্জন করতে পারেন। অনলাইন নিরাপত্তার উপর অতিরিক্ত ফোকাস দিয়ে অনলাইন এবং অফলাইন মডিউল উভয়ই ব্যবহার করা হবে। উঠান বৈঠকের প্রথম রাউন্ড ৯ মার্চ থেকে শুরু হবে এবং লক্ষ্য পৌঁছানো পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে চলবে।
গ্রামীণফোনের সিইও ইয়াসির আজমান বলেন, ‘আমাদের চারপাশে অনেক অনুপ্রেরণামূলক গল্প রয়েছে। যেমন দিনা মৃ যিনি মধুপুরের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে ফ্রিল্যান্সিং করছে কিংবা ফোয়ারা ফেরদৌস যিনি ঘরে বসে তার নিজস্ব এফ-কমার্স ব্যবসা প্রতিষ্ঠা করেছেন বা ড. তাসনিম জারা যিনি প্রতিদিন অনলাইনে চিকিৎসা সংক্রান্ত ভুল তথ্যের বিরুদ্ধে লড়াই করেন। কিন্তু এমন অনেক নারীও আছেন যাদেরকে আমরা এই গল্পগুলো বলে, তাদের হাতের মুঠোয় থাকা সম্ভাবনাগুলোকে উন্মোচনে অনুপ্রাণিত করতে পারি।’
তিনি আরও বলেন, ‘স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে হলে আমাদের নারীদের এই যাত্রায় সমানভাবে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। ডিজিটাল সাক্ষরতাকে ২০০০টি ইউনিয়নে নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে, আমরা শুধুমাত্র দেশের আনাচে কানাচে থাকা মহিলাদের ইন্টারনেট ব্যবহার সম্পর্কে শিক্ষিত করতে চাই না বরং আমাদের অনুপ্রেরণাদায়ী মহিলাদের একটি প্ল্যাটফর্ম দিতে চাই যেখানে তারা পিছিয়ে পড়া মহিলাদের অনুপ্রাণিত ও ক্ষমতায়নের জন্য তাদের গল্পগুলি শেয়ার করতে পারে।’
জিএসএম’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো লিঙ্গ বৈষম্য বৃদ্ধি পেয়েছে – ২০২১ সালে যা ছিল ৪৮ শতাংশ। ডিজিটাল বৈষম্য দূর করা এবং প্রান্তিক নারীদের ক্ষমতায়নের লক্ষ্য নিয়ে যাত্রা শুরু করে গ্রামীণফোন। লিডিং প্রযুক্তি কোম্পানি হিসেবে ‘ইন্টারনেট এর দুনিয়া সবার’ গ্রামীণফোনের ডিজিটাল ডিভাইড কমিয়ে আনার প্রতিশ্রুতিকে প্রতিফলিত করে। সারাদেশে নারীদের জন্য ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তির পক্ষে কথা বলে এবং তা ত্বরান্বিত করা এই প্রজেক্টের লক্ষ্য।
Leave a Reply