এমপি বাবুর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় মুক্তিযোদ্ধাদের করব স্থান ও স্মৃতি সংরক্ষণ নির্মাণ শুরু

খুলনা-৬ (কয়রা-পাইকগাছা) আসনের এমপি আলহাজ্ব আখতারুজ্জামান বাবু মুক্তিযোদ্ধাদের খেদমতে ও প্রয়াত প্রবীণ আওয়ামীলীগ নেতাদের সম্মানে এক বিরল দৃষ্টান্ত রেখেছেন। সম্প্রতি তিনি প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধাদের কবর পাকাকরণ সহ দৃষ্টিনন্দন স্মৃতি সংরক্ষণ নির্মাণ কাজ শুরু করেছেন। রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানে এমন মহৎ উদ্যোগ বিরল।

কয়রা উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল করিমের কবর দীর্ঘদিন অযত্নে অবহেলায় রাস্তার পাশে পড়ে থাকে। পরে এমপি আখতারুজ্জামান বাবু কবর যিয়ারত করে কবর সংস্কারের কাজ শুরু করেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল করিমের স্মৃতি সংরক্ষণ স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে পুরোদমে কাজ চলমান আছে। এমপি আক্তারুজ্জামান বাবুর এমন ব্যক্তিক্রমী উদ্যোগকে মুক্তিযোদ্ধা, প্রবীণ আওয়ামীলীগ নেতা, মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্য ও একাবাসী সাধুবাদ জানিয়েছেন।

প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল করিমের প্রতিবেশী আব্দুর রকিব গাজি বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছেন আমাদের সকলের প্রিয় সন্তান রেজাউল করিম। তার কবরটি স্বাধীনতা যুদ্ধের পরে সরকারি বা বেসরকারিভাবে সংস্কারের পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। এমপি বাবুর প্রচেষ্ঠায় কবর সংস্কার ও স্মৃতি সংরক্ষণ নির্মাণ মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান আরও বাড়িয়ে দিলো।

উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা ইয়াকুব জানান, এমপির মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য এমন উদ্যোগ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের উৎসাহিত করেছে।

কয়রার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার এ্যাড. কেরামত আলী বলেন, মুক্তিযুদ্ধে কয়রা ৯নং সেক্টরের অধীনে ছিলো। ৫টি স্থানীয়ভাবে পরিচালিত হতো। তারমধ্যে বাগালি ইউনিয়নের বামিয়া গ্রামে শহীদ সোহরাওয়ার্দী ক্যাম্পের পরিচালনায় দায়িত্বে ছিলেন শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল করিম। তাঁর কবর সংস্কার ও স্মৃতিসংরক্ষণ নির্মাণ উদ্যোগ মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান, মর্যাদা আরও বাড়িয়ে দেবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনিশেষ বিশ্বাস বলেন, রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধা, জাতীর শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মরণে এমন একটি মহৎ উদ্যোগ গ্রহন করায় আমি ব্যক্তিগত ভাবে এমপি মহোদয়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে সরকার নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। সরকারের এই উদ্যোগের সাথে সাধারণ মানুষকেও এগিয়ে আসতে হবে।

উপজেলা চেয়ারম্যান এস এম শফিকুল ইসলাম স্থানীয় সংসদের এমন উদ্যোগকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, একাত্তরের শহীদদের জীবনের বিনিময়ে আমরা আজ স্বাধীন দেশে বাস করছি। তাই মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতায় দল মত নির্বিশেষে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।

এবিষয়ে সংসদ সদস্য আলহাজ্ব আক্তারুজ্জামান বাবু জানান, বঙ্গবন্ধুর ডাকে যাঁরা দেশের স্বাধীনতার পতাকে ছিনিয়ে আনতে জীবনোৎসর্গ করেছেন। তাঁরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। কয়রা ও পাইকগাছার মাটিতে ঘুমিয়ে থাকা শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদেরা কবর সংস্কার করা হবে। তাঁদের মহান আত্মত্যাগের স্মৃতি স্বরূপ কবর নিমার্ণ ও স্মৃতি সংরক্ষণ করা হবে। তিনি আরও জানান, বীর মুক্তিযোদ্ধা ছাড়া উপজেলার প্রয়ত প্রবীণ আওয়ামীলীগ নেতাদের কবর পাকা করণের কাজ ধাপে ধাপে করা হবে।

জানা গেছে, শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল করিম ১৯৫০ সালের ৩০ অক্টোবর কয়রা উপজেলার অন্তাবুনিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি শিক্ষা জীবনে ৫ম শ্রেণিতে বৃত্তি পান। পরে এসএসসি ও এইচএসসি ফাস্ট ক্লাসে উত্তীর্ণ হয়ে খুলনা বিএল কলেজে লেখাপড়া করেছেন। তিনি খুলনা এম এম সিটি কলেজের তৎকালীন ছাত্র সংসদের ভিপি ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে ১৯৭৪ সালের ১৯ এপ্রিল আততায়ীর গুলিতে তিনি নিহত হন।





Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*