ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এগ্রিকালচার এন্ড টেকনোলজি (আইইউবিএটি) এর ৬ষ্ঠ সমাবর্তন ১৯শে জুলাই মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয়। সমাবর্তনে প্রায় দুই হাজার পাচ শত স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীকে ডিগ্রি প্রদান করা হয়। কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফল অর্জনকারী ৪ জন স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীদের আইইউবিএটির প্রতিষ্ঠাতা মিয়ান স্বর্ণপদক প্রদান করা হয়। সমাবর্তনে কৃষি, ব্যবসায়, ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক, সিভিল, কম্পিউটার, মেকানিক্যাল, ইকনোমিক্স, ট্যুরিজ্ম এন্ড হসপিটালিটি এবং নার্সিং বিষয়ে ডিগ্রি প্রদান করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য মহামান্য রাষ্ট্রপতি মো আবদুল হামিদের প্রতিনিধি হিসেবে সমাবর্তনে সভাপতিত্ব করেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার এর মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। সমাবর্তনে মূল বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জর্জিয়ার ককেশাস বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট এবং ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অফ ইউনিভার্সিটি প্রেসিডেন্টস এর বোর্ড চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কখা শেঞ্জেলিয়া। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মাননিয় শিক্ষা উপমন্ত্রী জনাব মহিবুল হাসান চৌধুরী এবং আইএসি যুক্তরাজ্য এর রেজিডেন্ট জাজ ও ফিনল্যান্ডের অনারারি কনসুল জুলিয়ান ফিলিপস।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন আইইউবিএটি’র বোর্ড অব ট্রাষ্টিজ এর চেয়ারম্যান জনাব জুবের আলিম। এসময় তিনি নতুন গ্র্যাজুয়েটদের সাধুবাদ জানান, পরিশ্রম ও সততার মাধ্যমে মাতৃভূমির উৎকর্ষ সাধন কাজ করার আহব্বান জনান এবং আইইউবিএটি’র হাত ধরে বাংলাদেশে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ইতিহাস ও অর্জন তুলে ধরেন।
সভাপতির বক্তব্যে মাননিয় শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি শিক্ষার গুনগত মানই আইইউবিএটি’র সফলতার মূল মন্ত্র বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন আইইউবিএটি তার জ্ঞান ভিত্তিক এলাকা উন্নয়ন: কমিউনিটি পর্যায়ে স্বনির্ভরতার একটি পদক্ষেপ এর আওতায় প্রতিটি গ্রাম থেকে একজন পেশামুখী গ্রাজুয়েট তৈরি কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়টিতে অর্থের কারণে ভর্তি নিরুৎসাহিত করা হয় না এবং এই বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশের ৫৩০ টি উপজেলা থেকে শিক্ষার্থী বা গ্রাজুয়েট আছেন। এটি বাংলাদেশের সার্বিক অগ্রগতিতে নিঃসন্দেহে একটি ভালো পদক্ষেপ।
তিনি দেশ ও জাতির স্বাধীনতায় এবং শিক্ষা ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধ শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান তুলে ধরেন। তিনি বলেন বর্তমান আওয়ামী লিগ সরকার শিক্ষাত্রে বিনিয়োগ বৃদ্ধি করেছে এবং দেশে অনেক বিজ্ঞান শিক্ষা ভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছেন। তিনি শিক্ষা ক্ষেত্রে মান বৃদ্ধি, ও বিজ্ঞান ভিত্তিক শিক্ষা প্রদানের উপর গুরুত্ব দেয়ার আহ্বান জানান। তিনি বহু প্রতিবন্ধকতা সত্বেও ডিজিটাল বাংলাদেশ ও মধ্যম আয়ের দেশে উন্নিত করার ক্ষেত্রে সরকারের অর্জন ও ভবিষ্যত সম্পর্কে ডেল্টা প্লান তুলে ধরেন।
সমাবর্তন বক্তা অধ্যাপক ড. কখা শেঞ্জেলিয়া বলেন, একবিংশ সতাব্দির জ্ঞান-ভিত্তিক সমাজে জ্ঞানই সঞ্চালক আর সততাই প্রথিবীর অন্যতম সম্পদ। এ সময়ের অফুরন্ত সুবিধা ও অসুবিধা এবং চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের অভূতপূর্ব প্রতিযোগিতা যার মুখোমুখি আমরা কখনই হই নি তার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। তিনি সদ্য গ্র্যাজুয়েটদের শুভেচ্ছা জানান, অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পেরে উচ্ছাস প্রকাশ করেন এবং আইইউবিএটি’র সঙ্গে এক সাতে কাজ করার আশা ব্যক্ত করেন। তিনি গ্র্যাজুয়েটদের সফলতায় তাদের পিতামাতা, শিক্ষক ও সমাজের অবদান মনে রাখার আহ্বান জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জুলিয়ান ফিলিপস আইইউবিএটি’র প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ড. মিয়ানের সুদুপ্রশারি পদক্ষেপ এবং আইইউবিএটি’র উত্তর উত্তর অগ্রগতির প্রসংসা করেন। তার সন্তান লিও ফিলিফস আইইউবিএটি’তে ভিজিটিং ফেলো হিসেবে অনেকদিন ছিলেন যা তাঁর কর্মজীবনের উন্নয়নে অনেক অবদার রেখেছে বলে জানান। এ জন্য তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন আইইউবিএটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুর রব এবং কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে বক্তব্য রাখেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. হামিদা আখতার বেগম। স্বাগত বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যপক রব বাংলাদেশের পতিটি গ্রাম থেকে পেশামুখি গ্র্যাজুয়েট তৈরির ক্ষেত্রে আইইউবিএটি’র প্রত্যয় তুলে ধরেন। এবং এই প্রত্যয়ের আওতায় দেশের সকল জেলা, প্রায় সকল উপজেলা থেকে গ্র্যাজুয়েট তৈরির অর্জন ও চাকুরী এবং নতুন উদ্যোগে গ্র্যাজুয়েটদের সফলতা তুলে ধরেন।
ভ্যালেডিকটরি বক্তব্য রাখেন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং গোল্ড মেডালিষ্ট গ্র্যাজুয়েট আবু বকর সিদ্দিক ।
উল্লেখ্য দেশে প্রতিষ্ঠিত প্রথম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইইউবিএটি শুরু হয়েছিল ১৯৯১ সালে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ও আইবিএর সাবেক পরিচালক শিক্ষাবিদ ড. এম আলিমউল্যা মিয়ান স্বনামধন্য এই প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা।
Leave a Reply