স্কুলের পরীক্ষাই হোক আর বোর্ড পরীক্ষাই হোক– ভালো ফলাফল পেতে চাইলে বোর্ড প্রশ্ন এবং তার পাশাপাশি বিভিন্ন স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রশ্নপত্র সমাধান করে অনুশীলন করার বিকল্প নেই।
প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা, আসসালামু আ’লাইকুম। আমি জান্নাতুল ফেরদৌস। বাংলাদেশের সকল স্তরের শিক্ষার্থীদেরকে সম্মিলিত করে লেখাপড়ার প্রয়োজনীয় তথ্য সেবা নিশ্চিত করতে এবং সেইসাথে বাংলা ভাষায় শিক্ষার তথ্য ভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করতে এখন থেকে তোমাদের জন্য নিয়মিত বোর্ডভিত্তিক এবং বিভিন্ন শীর্ষস্থানীয় স্কুলভিত্তিক প্রশ্নপত্রের সমাধান নিয়ে হাজির হবো লেখাপড়া বিডির পাতায়, ইনশাআল্লাহ।
আজকে তোমাদের জন্য থাকছে নবম-দশম শ্রেণীর রসায়ন বিষয়ের ২য় অধ্যায়ের উপর জ্ঞানমূলক এবং অনুধাবনমূলক প্রশ্নসমূহের সমাধান, যেগুলো কিনা বিগত বছরগুলোর বোর্ড প্রশ্নে এবং বিভিন্ন শীর্ষস্থানীয় স্কুলের পরীক্ষায় এসেছে।
রসায়ন ছাড়াও তোমাদের জন্য নিয়মিত থাকছে পদার্থবিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান, বাংলা, ইংরেজি, গণিত ইত্যাদি বিষয়ের বোর্ডভিত্তিক এবং শীর্ষস্থানীয় স্কুলভিত্তিক প্রশ্নপত্রের সমাধান।
তাই সেরা প্রস্তুতি নিতে এবং নিজের প্রস্তুতিকে ঝালিয়ে নিয়ে সবার থেকে একধাপ এগিয়ে থাকতে চোখ রাখো লেখাপড়া বিডির পাতায়।
রসায়ন
(২য় অধ্যায়)
জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
(১) আন্তঃআণবিক শক্তি কাকে বলে? [দি. বো. ‘১৯]
পদার্থের অণুসমূহের মধ্যকার আকর্ষণ শক্তিকে আন্তঃআণবিক শক্তি বলে।
(২) ব্যাপন কি? [রা. বো. ‘১৭; য. বো. ‘১৫; কু. বো. ‘১৬]
ব্যাপন হলো কোনো মাধ্যমে কঠিন, তরল বা গ্যাসীয় বস্তুর স্বতঃস্ফূর্ত ও সমভাবে পরিব্যাপ্ত হওয়ার প্রক্রিয়া।
(৩) গলনাঙ্ক কাকে বলে? [সকল বোর্ড ‘১৮; কু. বো. ‘১৯; য. বো. ‘১৫; ব. বো. ‘১৯, ‘১৫]
স্বাভাবিক চাপে (1 atm) যে তাপমাত্রায় কঠিন পদার্থ তরলে পরিণত হয় সেই তাপমাত্রাকে সেই পদার্থের গলনাঙ্ক বলে।
(৪) স্ফুটনাঙ্ক কী? [রা. বো. ‘১৫; চ. বো. ‘১৫]
স্বাভাবিক যাবে যে তাপমাত্রায় কোন তরল পদার্থ গ্যাসীয় অবস্থা প্রাপ্ত হয় সে তাপমাত্রাকে উক্ত পদার্থের স্ফুটনাঙ্ক ও বলা হয়
(৫) মোম কী? [গোবিন্দপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, হবিগঞ্জ]
মোম হচ্ছে উচ্চতর অ্যালকেন যা স্বাভাবিক তাপমাত্রা ও চাপে কঠিন।
(৬) ঊর্ধ্বপাতন কি? [ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা]
যদি কঠিন পদার্থকে তাপ দিলে তা সরাসরি গ্যাসে পরিণত হয় এবং ঠান্ডা করলে তা সরাসরি কঠিনে রুপান্তরিত হয় তবে উক্ত প্রক্রিয়াকে উর্ধ্বপাতন বলে।
অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
(ক) পাকা কাঁঠাল থেকে গন্ধ কোন উপায় পাওয়া যায়? ব্যাখ্যা করো। [সি. বো. ‘১৭]
পাকা কাঁঠাল থেকে গন্ধ কাঁঠালের ত্বকের ছিদ্রপথে বেরিয়ে এসে বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে পড়ে। এভাবে ত্বকের ছিদ্রপথে গন্ধ বেরিয়ে আসার প্রক্রিয়া হলো নিঃসরণ, আবার এই গন্ধ বের হওয়ার পর বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে পড়া হলো ব্যাপন। কাঁঠালের ভিতরে কাঁঠাল পাকার জন্য দায়ী উপাদানের চাপ বেশি হওয়ায় নিম্নচাপ অঞ্চলে অর্থাৎ বাইরে বেরিয়ে আসে নিঃসরণ প্রক্রিয়ায় আবার বের হওয়ার পর উপাদানটির স্বতঃস্ফূর্তভাবে ছড়িয়ে পড়ে ব্যাপন প্রক্রিয়ায়।
এভাবেই পাকা কাঁঠালের গন্ধ নিঃসরণ আর ব্যাপন দুই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পেয়ে থাকে থাকি।
(খ) নিশাদল কে উর্ধ্বপাতিত পদার্থ বলা হয় কেন? ব্যাখ্যা করো। [য. বো. ‘২০]
যেসব কঠিন পদার্থকে উত্তপ্ত করলে তরলে পরিণত না হয় সরাসরি গ্যাসে পরিণত হয় তাদেরকে উর্ধ্বপাতিত পদার্থ বলে। নিশাদল (NH4Cl) কে তাপ দিলে এটি কঠিন অবস্থা থেকে সরাসরি গ্যাসীয় অবস্থায় পরিণত হয়। এজন্য নিশাদল কে উর্ধ্বপাতিত পদার্থ বলা হয়।
(গ) I2 কে তরল অবস্থায় পাওয়া সম্ভব কিনা? ব্যাখ্যা করো। [ঢা. বো. ‘১৯; রা. বো. ‘১৯]
I2 কে তরল অবস্থায় পাওয়া সম্ভব না। কারণ এটি একটি উর্ধ্বপাতিত পদার্থ। উর্ধ্বপাতিত পদার্থগুলোকে তাপ দিলে তা তরলে পরিণত না হয়ে সরাসরি বাষ্পে পরিণত হয়। যেহেতু আয়োডিন (I2) একটি উর্ধ্বপাতিত পদার্থ, সেহেতু কঠিন আয়োডিন (I2) কে তাপ দিলে তা তরলে পরিণত না হয়ে সরাসরি I2 এর বাষ্পে পরিণত হয়। অর্থাৎ আয়োডিন (I2) কে তরল অবস্থায় পাওয়া সম্ভব নয়।
(ঘ) আয়োডিনকে তাপ দিলে সরাসরি বাষ্পে পরিণত হয় কেন? [রা. বো. ‘১৫]
যেসব কঠিন পদার্থকে উত্তপ্ত করলে তরলে রূপান্তরিত না হয়ে সরাসরি গ্যাসে পরিণত হয় তাদেরকে উর্ধ্বপাতিত পদার্থ বলে। আয়োডিন একটি উর্ধ্বপাতিত পদার্থ; কারণ কঠিন আয়োডিনকে তাপ দিলে তা সরাসরি বাষ্পে পরিণত হয়।
কঠিন আয়োডিন ⇌ আয়োডিন বাষ্প
(ঙ) একই পদার্থ ভিন্ন ভিন্ন তাপমাত্রায় ভিন্ন ভিন্ন অবস্থা প্রদর্শন করে কেন? [বগুড়া জিলা স্কুল, বগুড়া]
প্রতিটি পদার্থ আন্তঃআণবিক শক্তির কারণে অণুসমূহ পরস্পরের সন্নিকটে অবস্থান করে। অন্যদিকে অণুসমূহ সর্বদা কম্পমান থাকে। তাপমাত্রা যত বাড়ে কম্পনও তত বাড়ে। তাপ শক্তির প্রভাবে তাদের মধ্যে গতিশক্তির সঞ্চার হয়। ফলে অণুসমূহ পরস্পর হতে বিচ্ছিন্ন হতে চায় এবং এক পর্যায়ে অণুসমূহ বন্ধন ছিন্ন করে দূরে সরে যায়। আবার তাপমাত্রা হ্রাস করলে অণুসমূহ পরস্পরের কাছাকাছি চলে আসে। এভাবে তাপের প্রভাবে একই পদার্থ কঠিন, তরল বা গ্যাসীয় অবস্থা প্রদর্শন করে।
(চ) NH3 ও HCl এর মধ্যে কোনটির ব্যাপন হার বেশি এবং কেন? [রাজশাহী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, রাজশাহী]
NH3 ও HCl এর মধ্যে NH3 এর ব্যাপন হার বেশি। এর কারণ নিম্নরূপ–
কোনো পদার্থের ব্যাপন হার তার আণবিক ভর ও ঘনত্বের উপর নির্ভরশীল। পদার্থের আণবিক ভর ও ঘনত্ব যত কম হবে তার ব্যাপনের হার তত বেশি হবে। NH3 এর আণবিক ভর 17 এবং ঘনত্ব 0.758 g/L ; HCl এর আণবিক ভর 36.5 এবং ঘনত্ব 1.62 g/L অপেক্ষা কম। তাই NH3 এর ব্যাপনের হার HCl অপেক্ষা বেশি।
(ছ) ব্যাপন ও নিঃসরণের মধ্যে পার্থক্য লেখ। [কুমিল্লা ক্যাডেট কলেজ, কুমিল্লা]
নিচে ব্যাপন ও নিঃসরণের মধ্যে মৌলিক পার্থক্য তুলে ধরা হলোঃ
১. ব্যাপন হলো সাধারণ বায়ুমন্ডলীয় চাপে অণুসমূহের স্বতঃস্ফূর্ত মন্থর প্রক্রিয়া।
অন্যদিকে, নিঃসরণ হলো অধিক চাপের প্রভাবে গ্যাসীয় দ্রুত প্রক্রিয়া।
২. ব্যাপনের বেলায় আধারের ভিতরে ও বাইরে একই বায়ুচাপ থাকে।
তবে, নিঃসরণের বেলায় আধারের ভিতরে অধিক চাপ এবং বাইরে কম চাপ বা ভ্যাকুয়াম অবস্থা থাকে।
৩. ব্যাপন দীর্ঘ সময় স্থায়ী হয়
কিন্তু, নিঃসরণ স্বল্প সময় স্থায়ী হয়।
এর আগে জীববিজ্ঞান বিষয়ের উপর বিগত বছরগুলোর বোর্ড প্রশ্ন এবং শীর্ষস্থানীয় স্কুলের প্রশ্নপত্রসমূহের সমাধান দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে আরও এমনসব লেখা পেতে নিয়মিত ভিজিট করো লেখাপড়া বিডি র ওয়েব সাইটে।
Leave a Reply