মাধ্যমিক (ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি) স্তরের শিক্ষার্থীদের ইংরেজি বিষয়ে ১০ নম্বর করে মোট ২০ নম্বরের শ্রবণ ও মৌখিক পরীক্ষা দিতে হবে। আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে এটা কার্যকর হবে। পরে পর্যায়ক্রমে পাবলিক (জেএসসি ও এসএসসি) পরীক্ষাতেও এ বিষয়ে পরীক্ষা নেওয়া হবে।
তবে আগামী ২ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া এসএসসি পরীক্ষায় তা কার্যকর হবে না।
একই সঙ্গে সমমানের মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদেরও একইভাবে আরবি বিষয়ে পরীক্ষা দিতে হবে।
একটি গণমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে শিক্ষাসচিব মো. নজরুল ইসলাম খান এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, এ বিষয়টি বাস্তবায়নের জন্য খুব শিগগিরই প্রজ্ঞাপন জারি করতে সংশ্লিষ্ট শাখাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষাসচিব বলেন, বাংলাদেশে বিদ্যালয়, এমনকি উচ্চশিক্ষার পরও অধিকাংশ শিক্ষার্থী প্রয়োজনীয় কথাবার্তা ইংরেজিতে বলতে পারে না। অন্যের কথাও বুঝতে পারে না। ব্যবহারিক জীবনে এটা জানা জরুরি। আবার তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ায় বর্তমানে বিভিন্ন ক্ষেত্রেই ইংরেজি অপরিহার্য হয়ে পড়ছে। একইভাবে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা আরবি লিখতে পারে, কিন্তু অধিকাংশই শিক্ষার্থী বুঝে বলতে পারে না। কর্মক্ষেত্রে যাতে কাজে লাগে সে জন্যই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে শিক্ষাসচিব জানান।
এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য কিছু নীতিগত সিদ্ধান্তও হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে, শ্রবণের জন্য প্রয়োজনীয় সিডি ও শিক্ষক নির্দেশিকা সরবরাহ করা। পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের নির্দেশমালা অনুযায়ী করা হবে। শিক্ষকদের পেশাগত উন্নয়নে সুযোগ তৈরি করা এবং শিক্ষকদের এর জন্য প্রণোদনার ব্যবস্থা করা হবে। এ বিষয়ে ইতিমধ্যে একটি ‘করণীয় পত্র’ তৈরি করা হয়েছে।
করণীয় পত্রে বলা হয়, বাস্তবতার সঙ্গে তাল মেলানোর জন্য জাতীয় শিক্ষাক্রমে প্রথাগত গ্রামারভিত্তিক ইংরেজি শিক্ষার পরিবর্তে ‘কমিউনিটিকেটিভ গ্রামার’ শিক্ষার ওপর জোর দেওয়া হয় এবং সেভাবে পাঠ্যক্রম তৈরি করা হয়। কিন্তু প্রয়োজনীয় উদ্যোগের অভাবে এ বিষয়ে কাঙ্ক্ষিত সফলতা আসেনি। এখন পর্যন্ত পাঠ্যপুস্তকের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় শ্রবণের জন্য সিডি তৈরি করে শিক্ষার্থীদের দেওয়া যায়নি। ফলে শিক্ষার্থীরা ইংরেজি শ্রবণ অনুশীলন করতে পারেনি। এ ছাড়া পরীক্ষা সংস্কার করে ইংরেজি শোনা ও বলাকে বিদ্যালয়ভিত্তিক বা পাবলিক পরীক্ষায় অন্তর্ভুক্ত করা যায়নি। ফলে শিক্ষার্থীরা গুরুত্বপূর্ণ এই দুটি দক্ষতা অর্জনে আগ্রহী হয়নি। শিক্ষকেরাও কার্যকর কোনো ভূমিকা রাখতে পারেননি। নতুন এই পদ্ধতির বিষয়ে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের বাইরে তদারক, শিক্ষাবিষয়ক সহায়তা, এমনকি শিক্ষাক্রমে উল্লিখিত শিক্ষক নির্দেশিকাও দেওয়া হয়নি।
সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ সমস্যাগুলোর সমাধান করে ইংরেজি শ্রবণ ও মৌখিক—এ দুটি বিষয়ে দক্ষতা মূল্যায়নে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
তথ্যসূত্রঃ দৈনিক শিক্ষাডটকম
Leave a Reply