ডিপ্রেশন আত্মহত্যার মুল কারন হতে পারে না

Topic : ডিপ্রেশন আত্মহত্যার মুল কারন হতে পারে না
লেখা: Orpita oyshorjo

আজকের টপিক ডিপ্রেশন হলেও শুরুতেই বলবো ভারতের নতুন প্রজন্মের অন্যতম জনপ্রিয় চলচ্চিত্র অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুত যিনি কিছু দিন আগে আত্মহত্যা করেছেন তার আত্মহত্যার মুল কারন ছিলো ডিপ্রেশন।
তিনি বেশ কিছুদিন ধরেই মানসিক বিষণ্নতায় ভুগছিলেন বলে জানা গেছে।
আসলে আগে আমাদের জানা উচিৎ ডিপ্রেশন টা কি ??
ডিপ্রেশন’ শব্দটি বর্তমান যুগে পরিচিত একটা কথা এটা থাকাটা খুবই স্বাভাবিক। কারন তরুণ প্রজন্মের মধ্যে বহুল প্রচলিত একটি শব্দ- ‘ডিপ্রেশন’। কিছু বুঝে কিংবা না বুঝেই এই শব্দটি ব্যবহারের উদাহরণও কম নয়! ছোটখাটো মন খারাপকেও “আমি ডিপ্রেশনে আছি” বলে চালিয়ে দেই ।
কিন্তু ডিপ্রেশনের সাথে কি আসলেই আত্মহত্যার সম্পর্ক আছে ??
আমরা ডিপ্রেশন বলতে বুঝি অন্য কারো সাথে, প্রিয়জনদের সাথে, এমনকি কখনো কখনো নিজেদের সাথেও তারা তাদের সমস্যাগুলো নিয়ে কথা বলতে চায় না, সেগুলো লুকিয়েই রাখে। সমস্যাগুলো নিয়ে কথা বলতে তাদের ভালো লাগে না, তাই কখনো কারো সাথে ভাগ করে নিলে সেটি আরো স্পষ্টতা পাবে, এ ভয়ে সেগুলোকে সামনেই আসতে দেয় না। কিন্তু তাতে কি সমস্যা চলে যায়? চেপে রাখার কারণে তা আরো বাড়ে। কিন্তু সমস্যা নিয়ে ভাবাটাও তারা ভয় পায়। যতদিন পারা যায় পালিয়ে বেড়ায় এবং সমস্যাগুলোকে এর চূড়ান্ত পর্যায় পর্যন্ত বাড়তে দেয়। কোনো মন খারাপ বা কষ্টের অনুভূতিকে প্রকাশ করে না, কারণ তারা ভয় পান যে তা বেরিয়ে এলে কোনোভাবেই নিজেকে সামলাতে পারবে না, অনুভূতিগুলোকে তাই দমিয়েই রাখা হয়। কিন্তু একদিন সেগুলো একসাথে বিস্ফোরিত হবে, তখন? ডিপ্রেশনে ভোগা মানুষেরা অনুভূতির সকল দরজা-জানালা বন্ধ করে রাখে, ভ্যাপসা পরিবেশে একসময় নিজেরই গুমোট লাগে।

এখানে আমার একটা প্রশ্ন আছে ” নিজের সব কথা কিংবা চাপা কষ্ট কি আসলেই সবার সাথে সবসময় শেয়ার করা যায়?
কিভাবে বুঝবো আমি যার সাথে কথা শেয়ার করলাম সে আমাকে একদিন না একদিন কথাটা ফেরত দিবে না ।
আসলেই কি আমরা অন্যের সাথে কথা শেয়ার করে হালকা হতে পারি ??
শুনেছি আত্মহত্যা করতে অনেক সাহস লাগে তাহলে কিভাবে ডিপ্রেশন থেকে মানুষ আত্মহত্যা করে ?
সবার সাথে কথা শেয়ার করলেই যদি সব সমাধান হতো তাহলে পৃথিবীতে এতো এতো মানুষ কেন আত্মহত্যা করেছে
কথা বলেই সমাধান করতে পারতো
কতটা কষ্ট হলে মানুষ আত্মহত্যা করে তা আপনি আমি বুঝতে পারবো না ।
যদি কেউ আমাকে বলে তাহলে কেন তারা আত্মহত্যা করে তাহলে আমি বলবো আমাদের চারপাশের মানুষদের জন্যই তারা আত্মহত্যা করে ।
মেয়ে কালো এটা নিয়েও মেয়েটাকে তার আশেপাশের মানুষজনদের কাছে কথা শুনতে হয় , বিয়ে হয় না জন্য পরিবারের কাছে খোঁটা শুনতে হয়, ছেলে বেকার , লেখাপড়ায় ভালো না তাও তাদের কথা শুনতে হয় এসব কারা বলে ডিপ্রেশন?? নাকি আশেপাশের মানুষজন তাহলে কিভাবে আপনারা বলেন অন্যর সাথে কথা শেয়ার করলেই সব ঠিকঠাক মত চলবে ।
আমি তো বলবো আত্মহত্যার জন্য নিজের পরিবারের সদস্যরা দায়ি, অনেকেই বলবে কেন ?
তাদের বলে রাখি আচ্ছা আপনার মন খারাপ বা আপনি ডিপ্রেশনে আছেন আপনার পরিবারের কেউ কি আপনাকে বুঝতে পেরেছিলো কখনো,, কখনো কি বলেছিলো কি হয়েছে আপনার ,
ধরুন আপনি কবিতা গল্প লিখতে ভালোবাসেন আপনার বাবা কখনো আপনাকে প্রকৃতির সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন,, বর্তমানে 100% এর মধ্য হয়তো 20% লাকি মানুষ আছে যারা তাদের পরিবারের কাছে সব কিছুই শেয়ার করতে পারে ।
কিন্তু যারা আত্মহত্যা করেছে তারা কি সেই 20% লাকি মানুষ??
যদি তারা হতো তাহলে কেন তারা আত্মহত্যা করতো ।
আমরা যারা মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান তারা কি কখনো পরিবারের সাথে সব কথা শেয়ার করতে পারি ??

বর্তমানে লকডাউনে সোস্যাল মিডিয়াতে আসলেই লক্ষ্য করি অনেকেই বলে ডিপ্রেশনে থাকলে কথা বলুন সবার সাথে মানলাম কথা বললেই ভালো থাকবো কিন্তু যার সাথে কথা বলবো সে কি 24 ঘন্টা আমার সাথে থাকবে আমার সাথে কথা বলবে ,, আচ্ছা মানলাম থাকলো কিন্তু মনের মধ্যে চাপা কষ্ট যেটা দিনের পর দিন পরিবার থেকে প্রতিবেশীর থেকে পাচ্ছি আমরা সেটার কি হবে ?
কখনো ভেবেছিলাম কি আমরা ।

এখন অনেকেই বলবে তাহলে কিভাবে আত্মহত্যার মতো জঘন্য কাজ থেকে সবাই বেরিয়ে আসবে
তাদের বলে রাখি আত্মহত্যা থেকে বাঁচাতে পারে আমাদের পরিবার , আমাদের প্রতিবেশীরা।
কিভাবে??
পরিবার কে বলবো সময় দিন সন্তান কে , তাদের বুঝতে শিখুন, তাদের সাথে বন্ধুত্ব সম্পর্ক রাখুন, তাঁরা কি বলে সেটা আগে শুনুন, তাঁরা কিসে আনন্দ পায় সেটা করুন,,,
আর প্রতিবেশীদের বলবো অহেতুক অন্যকে নিয়ে সমালোচনা না করে তাদের বুঝান ।

এবার আসি আমরা ডিপ্রেশন থেকে বাঁচতে কি করবো ?

1। নিজের পছন্দের কাজগুলো করুন
2। পরিবারের কথা শুনুন তবে যেটা আপনার ভালো হয় তাই করার চেষ্টা করুন সব সবসময় পরিবারের কথা শুনা লাগবে এমন টাও কিন্তু না
নিজেকে ভালো পথে নিয়ে যান
3। হাসুন, হাসলে মন ভালো থাকে
4। খুব কষ্ট হলে ,মরে যেতে ইচ্ছে করলে এক পাতিল পানি গরম করুন তারপর তার দিকে তাকিয়ে থাকুন পারবেন কি হাতটা ফুটন্ত পানিতে ডুবেদিতে
তাহলে চিন্তা করুন আত্মহত্যা করলে সারা জীবন কিভাবে
ফুটন্ত পানিতে ডুবে থাকবেন
5। নামাজ পরুন , সাথে হাদিস এবং কোরান শরীফ পরুন
অন্যরা নিজেদের ধম তে সময় অতিবাহিত করুন
6। তারপরও কষ্ট হলে চিৎকার করে কান্না করুন মন হালকা থাকবে
7। প্রতিদিন নিজেকে নিয়ে ভাবুন,নিজেকে খুঁজে বের করুন নিজের ভিতর থেকে নিজেকেই
8। অহেতুক ঝুঁকিপূর্ণ আচরণ করবেন না
9। প্রকৃতিকে নিয়ে ভাবুন,,সবুজের মাঝে সবসময় থাকুন দেখবেন ভালো থাকবেন ।
10 । আত্মহত্যা বা ডিপ্রেশন নয় সবসময় ভাবুন আমি ভালো আছি ।

ভালো থাকুন, নিজেকে নিয়ে ভাবুন আত্মহত্যা বা ডিপ্রেশন নয় নিজেকে ভালোরাখার চেষ্টা করুন ।
আত্মহত্যা বা ডিপ্রেশন কে না বলুন
আসুন আমরা নিজেদের বুঝতে শিখি, অন্যদের বোঝাতে চেষ্টা করি
আত্মহত্যা বা ডিপ্রেশন কোন সমাধান হতে পারে না ।।
নিজেকে বাঁচিয়ে রেখে সফলতাই একমাত্র সমাধান ।
আসুন সফলতা অর্জন করি ।
ভালো থাকি ।





About Oyshorjo 15 Articles
লিখতে ভালো লাগে তাই লিখি সবসময়, গল্প কিংবা কবিতা যাই পাই তাই লিখি , লেখালেখি করে সবার মন জয় করতে চাই

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*