ঐতিহ্যবাহী কাপাসিয়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের বহুল প্রত্যাশিত ৭৫ বৎসর পূর্তিতে ২ দিন ব্যাপী বর্ণাঢ্য ও জমকালো উৎসব অনুষ্ঠান গতকাল শুক্রবার রাতে শেষ হল। ১৯৩৮ সালে প্রতিষ্ঠিত প্রাচীন এ প্রতিষ্ঠানের ১৯৪৮ সালের প্রাক্তন শিক্ষার্থী আলহাজ্ব সাহেব আলী মাষ্টার আনুষ্ঠানিক ভাবে বৃহস্পতিবার বিকালে উৎসব অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন।
উদ্বোধণী অনুষ্ঠানে ক্যাম্পাসে নির্মিত বিশাল প্যান্ডেলে আয়োজক কমিটির আহবায়ক সাবেক এমপি মুহম্মদ শহীদুল্লাহ’র সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুফিয়া বেগম, প্রাক্তন শিক্ষার্থী প্রবীণ সাংবাদিক আতাউর রহমান, প্রফেসর ড. আবু নঈম খান।
অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলওয়াত করেন আহসানুল হক মোস্তাক ও গীতা পাঠ করেন অর্পিতা। এর আগে প্রবীন ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা জাতীয় পতাকা ও বিদ্যালয়ের নিজস্ব পতাকা উত্তোলণ করেন। এ সময় হাজারো শিক্ষার্থীর যৌথ কন্ঠে জাতীয় সঙ্গীতের সূরের মূর্ছনায় ক্যাম্পাসের আকাশ বাতাস প্রকম্পিত হয়ে উঠে। সন্ধ্যায় ক্যাম্পাসের ঐতিহাসিক শতবর্ষী আমগাছ তলায় মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করা হয়।
শুক্রবার সকাল ৯ টায় বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী সমিতির উদ্যোগে আহবায়ক সাবেক সংসদ সদস্য মুহম্মদ শহীদুল্লাহ’র সভাপতিত্বে আয়োজিত হিরক জয়ন্তী অনুষ্ঠানে স্মৃতিচারণ মূলক বক্তব্য রাখেন, সদস্য সচিব স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সচিব এম এ কাদের সরকার, বিশিষ্ট শিল্পপতি আলহাজ্ব ইঞ্জিনিয়ার খালেদ এহসান মজনু, বিশিষ্ট সাংবাদিক আতাউর রহমান, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোতাহার হোসেন মোল্লা, বীর মুক্তিযুদ্ধা ফজলুর রহমান, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মফিজ উদ্দিন, প্রধান শিক্ষিকা সুফিয়া বেগম, আব্দুল হাই কাজমী, আব্দুস সালাম, ইকবাল হায়দার সবুজ, লেলিন সহ বিভিন্ন বষের্র ছাত্ররা স্মৃতিচারণ করে বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে প্রাক্তন কৃতি ছাত্রদের মাঝে সম্মাননা ক্রেষ্ট প্রদান করা হয়। ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে একটি আকর্ষণীয় স্মরণিকা প্রকাশ করা হয়। স্মৃতি হিসাবে সকল প্রাক্তন ছাত্রদের মাঝে ৭৫ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানের মনোগ্রাম সম্বলিত ব্যাগ, গেঞ্জি, ক্যাপ, মগ সহ বিভিন্ন শিক্ষা উপকরন বিতরণ করা হয়। সন্ধ্যা থেকে রাত ১১ টা পযর্ন্ত মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন বিখ্যাত শিল্পী মমতাজ বেগম, মাসুমা সুলতানা সাথী, পুতুল।
পূর্তি উপলক্ষে বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে আকর্ষনীয় বিশাল গেইট, মাঠ জুড়ে বিশাল প্যান্ডেল, তথ্য কেন্দ্র, খাবার ও উপহার সামগ্রী বিতরণের জন্য আলাদা বুথ নিমার্ণ করা হয়েছিল। রং-বেরংয়ের বাতি লাগিয়ে বিদ্যালয়ের চর্তুদিকের ভবন গুলোর সৌন্দর্য্য বর্ধণ করা হয়েছে। মাঠ জুড়ে বিভিন্ন রংয়ের আলপনা দিয়ে সাজানো হয়েছে। বিদ্যালয় সংলগ্ন সড়কের দু’ধারে লাগানো হয়েছে রঙ্গিন বাতি। বর্ণাঢ্য আলোক সজ্জা দেখার জন্য গত কয়েক দিন যাবত সন্ধ্যা থেকে রাত অবধি পথচারী ও এলাকার লোকজন ভীড় করে।
১৯৩৮ সালে প্রতিষ্ঠিত এ বিদ্যালয়ের শুরু থেকে উদ্যোক্তা, সুভানুধ্যায়ী, শুভাকাঙ্খি, শিক্ষার্থী ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের এ উৎসব মিলন মেলায় পরিনত হয়। অনুষ্ঠানে দীর্ঘ দিন পর পুরাতন বন্ধুদের পেয়ে অনেকেই আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন এবং আড্ডায় মেতে উঠেন। ক্যাম্পাসের আকাশে রঙ্গীন, বণার্ঢ্য ও আকর্ষণীয় আতশ বাজির মাধ্যমে পূর্তি অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে। এ অনুষ্ঠান কাপাসিয়ার ইতিহাসে স্মারক হয়ে থাকবে।
Leave a Reply