প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে এবার ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও বিতরণ করে প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়ার উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। ‘ডিজিটাল প্রশ্ন ব্যাংক’ থেকে প্রশ্ন নির্বাচন করে নিয়োগ পরীক্ষা নেয়া হবে।
আগামী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা থেকেই এ পদ্ধতি ব্যবহার করতে চায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ কারণে এরইমধ্যে প্রযুক্তিবিদদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রাথমিকের বিগত কয়েকটি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় এ উদ্যোগ নিচ্ছে মন্ত্রণালয়।
২০১৩ সালে প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসের পর ১৭ জেলায় দ্বিতীয়বার পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জ্ঞানেন্দ্র নাথ বিশ্বাস বলেন, প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের সুপারিশের আলোকে ম্যানুয়ালের পরিবর্তে ডিজিটাল পদ্ধতির প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও বিতরণের চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে।
শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া আরও স্বচ্ছ, দুর্নীতিমুক্ত, প্রভাবমুক্ত এবং নিরপেক্ষভাবে নিতেই এ উদ্যোগ, বলেন জ্ঞানেন্দ্র নাথ।
প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগ করার সার্বিক কাজ সম্পন্ন করে মন্ত্রণালয়ের প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর।
অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) আলমগীর হোসেন বলেন, ডিজিটাল পদ্ধতিতে কেন্দ্রীয়ভাবে একটি ‘প্রশ্ন ব্যাংক’ থেকে দ্বৈবচয়নের মাধ্যমে প্রশ্ন করে বিভিন্ন সেট তৈরি করে জেলা প্রশাসকের তত্ত্বাবধানে পরীক্ষার পূর্ব মুহূর্তে উচ্চগতির প্রিন্টারের মাধ্যমে প্রিন্ট করা হবে। এরপর স্ট্যাপলিংসহ প্যাকেটজাত করে কেন্দ্রসমুহে বিতরণ করা হবে।
তবে বিদ্যুৎ ও প্রিন্টিং বিভ্রাট, প্রশ্নপত্রের মান, অনলাইনে প্রশ্ন ফাঁসের মতো ডিজিটাল পদ্ধতির চ্যালেঞ্জ রয়েছে বলেও জানান তিনি।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, ডিজিটাল পদ্ধতির চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সারা দেশে এক দিন পরীক্ষা না নিয়ে বিভাগ ভিত্তিক পর্যায়ক্রমে পরীক্ষা নেয়াও হতে পারে।
তিনি জানান, ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও বিতরণের কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য টেকনিক্যাল কমিটি গঠন করা হয়েছে। বুয়েটের আইআইসিটি’র পরিচালক অধ্যাপক লিয়াকত আলীকে প্রধান করে এই কমিটিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রতিনিধি রয়েছেন।
বিশেষজ্ঞ কমিটি ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন, মুদ্রণ বিষয়ক সফটওয়ারের ডেমো প্রস্তুত করবে।
সরকারের নীতিগত অনুমোদনের পরই ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও বিতরণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
এদিকে যথেষ্ট নিরাপত্তা ও স্বচ্ছতা থাকার পরও গতানুগতিক পদ্ধতিতে প্রশ্নপত্র ফাঁসের সুযোগ থেকে যায় বলে মন্তব্য করেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান।
মন্ত্রী বলেন, এজন্য আগামীতে গতানুগতিক প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও বিতরণ পদ্ধতির পরিবর্তে ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও বিতরণের বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে।
সূত্রঃ বাংলানিউজ
Leave a Reply