খন্ড – ১
আকাশটা মেঘাচ্ছন্ন। কয়েক মিনিটের ব্যবধান রেখে বজ্রপাতের শব্দ কর্ণপাত করা যায়। সময়টা অপরাহ্ন। সবাই তাড়াতাড়ি গন্তব্যে ফিরছে। তাড়াহুড়োর জন্য আকাশের এই অবস্থাকেই দায়ী করা যায়। ইরাস নদীতীরে বসে আনমনা হয়ে পানিতে ঢিল ছুড়ছে। তার চেহারায় অনেক হতাশার ছাপ।
ছেলেটা দেখতে মোটেইই খারাপ না। কিন্তু বড়োই অগোছালো ভাব। মাথার চুলগুলো এলোমেলো, সামনের চুলগুলো বেশ লম্বা। প্রায় চোখ ঢেকে যায়। মুখে খোচা দাড়ি। হাসি নেই তার মুখে। যাকে বলে গোমরামুখো। যদিও কখনো ভুল করেও হাসে তো গালে টোল।
তার গলায় গত ৩ বছর থেকে একটা লকেট দেখছি। লকেটটা আমার কাছে রহস্যময় লাগে। লকেটের ব্যপারে একাধিক বার জানতে চেয়েছি।সে বলে নি।
সেদিন বাসা ফিরছিলাম। দেখলাম ইরাস বসে আছে।
পিছন থেকে ডাকলাম।
“ইরাস…
সে শুনতে পেয়েছে কিনা জানি না। আবার ডাকলাম।
এবার একটু আওয়াজ করে বলল
“হুম….
কিন্তু পিছনে ফিরে তাকালো না।
-দুপুরে খেয়েছো?
-হু। রুটি আর কলা।
-দুপুরে এসব খায় নাকি।
-হু খায়। ইরাস খায়।
(নিজের মুখে নিজের নামটা কেমন যেন বোকামি)
-চলো হোটেলে খাওয়াবো।
-না। খাবো না।
-যেদিনই বলি খাওয়াবো সেদিনই একই কথা।
-তুমি চলে যাও। আকাশের অবস্থা ভালো না। পারলে দু টাকা দিয়ে যাও।
-দুই টাকা?
-হুম।
-দুই টাকা দিয়ে কি করবে?
-দেবে কিনা বলো?
-দুই টাকা নোট নাই। বিশ টাকাটা রাখো।
-বিশ টাকার কোনো দরকার নেই। দুই টাকা লাগবে।
-পাচ টাকা নাও।
-না। লাগবে না।যাও তুমি।
(আমি চলে আসলাম। রিক্সায় বসে বসে ভাবছি,ইরাস দুই টাকা দিয়ে কি এমন করতে পারে। কিন্তু ধারনার বাইরে আমার। পরে একবার ভাবলাম দোকান থেকে খুচরা করে দিয়ে আসি। কিন্তু গেলাম না। বাবা তাড়াতাড়ি বাসা ফেরার জন্য ফোন করেছিল।
রাত হয়েছে। রাতের খাবারের পর
ছাদে দাড়িয়ে চারিদিকটা দেখছিলাম। নিচে তাকিয়ে অদ্ভুত একজনকে দেখলাম। খুবই ঢিলেঢালা শার্ট প্যান্ট পরনে। পায়ে জুতো নেই। হাতে লাল কাপড়ের টুকরো। কিছুদূর যাওয়ার পর লোকটা কি যেন চিৎকার করে বলে রাস্তায় পড়ে গেল। আমি দৌড়ে নিচে নামলাম। বাবা জিজ্ঞেস করল -কোথায় যাচ্ছো ?
আমি বাবাকে সঙ্গে নিয়ে রাস্তায় গিয়ে লোকটাকে নিয়ে আসলাম। লোকটাকে দেখে আমি অবাক হয়েছিলাম। এ কি করে সম্ভব ….
পরের খন্ডের জন্য অপেক্ষা করুন
Leave a Reply