অনুমোদন ছাড়া কার্যক্রম পরিচালনা করায় পাবনার চাটমোহরে ২০ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। নানা চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই এসব প্রতিষ্ঠান বাণিজ্যিকভাবে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল। জানা গেছে, কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোয় প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি, খেলার মাঠ, শ্রেণিকক্ষ নেই। এমনকি অধিকাংশের নিজস্ব ভবনও নেই। বাংলার পাশাপাশি ইংলিশ ভার্সন খুলে তীব্র প্রতিযোগিতার মাধ্যমে এসব প্রতিষ্ঠান স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, বিজ্ঞান স্কুল অ্যান্ড কলেজ– এমন সব আকর্ষণীয় নামে বিজ্ঞাপন দিয়ে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের আকৃষ্ট করছিল। বিভিন্ন সমাপনী পরীক্ষার জন্য তারা অনুমোদিত কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষার্থীদের নিবন্ধন করিয়ে নিত। এ নিয়েও রয়েছে বাণিজ্য। ২ এপ্রিল থেকে এ পর্যন্ত চাটমোহর উপজেলার প্রায় ২০ টি অনুমোদনবিহীন কিন্ডারগার্টেন, নিম্ন মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুল সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। এতে প্রায় তিন হাজার শিক্ষার্থীর লেখাপড়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। প্রশাসনের নির্দেশে পাঠদান বন্ধ থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো ডিএ জয়েন উদ্দিন স্কুলের নিম্ন মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক শাখা, অরবিটল লিংক স্কুল, রাইজিং স্কুল অ্যান্ড কলেজ, প্যারামাউন্ট ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, চাটমোহর একাডেমি, চাটমোহর বিজ্ঞান স্কুল অ্যান্ড কলেজ, পরিক্রম বিদ্যানিকেতন, নিউ ফোলিয়েজ কিন্ডারগার্টেন।
এসব স্কুলের একটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আব্দুল মতিন বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে এমন অনেক স্কুল চালু রয়েছে। সেভাবেই তারাও এতদিন নির্বিঘ্নে স্কুল পরিচালনা করে আসছিলেন। এদিকে একসঙ্গে এত স্কুল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন অভিভাবকরা। চাটমোহর উপজেলার রামচন্দ্রপুর গ্রামের অভিভাবক সিরাজুল ইসলাম বলেন, তার সন্তান পড়ে স্থানীয় প্যারামাউন্ট ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজে। এ প্রতিষ্ঠানের সরকারি অনুমোদন নেই এটা তার জানা ছিল না। এখন সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন তিনি। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, ইউএনও স্যারের নির্দেশে আমরা স্কুলগুলোর পাঠদান সাময়িকভাবে বন্ধের নির্দেশ দিয়েছি। তিনি বিষয়টি মনিটরিং করার জন্য উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে আহ্বায়ক এবং উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা ও উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে সদস্য করে মনিটরিং কমিটি করে দিয়েছেন।
২০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সরকার অসীম কুমার বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা মোতাবেক এ প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
Leave a Reply